বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশের দক্ষিাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ঢাকামুখী প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নাব্য সঙ্কটের কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে শত-শত যানবাহন। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বিআইডব্লিউটিএ ৭টি ড্রেজার দিয়ে পদ্মা নদীতে পলি খনন কাজ শুরু করেছে।
জানা গেছে, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ যানবাহনের সারি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ পদ্মার মোড় এলাকা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় দেড় শতাধিক বাস, ৪ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক, ১ শতাধিক কাচামাল ভর্তি ট্রাক আটকা পড়ে। এদিকে দৌলতদিয়া ঘাটে দায়িত্বরত রাজবাড়ী ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই মো. আনোয়ার হোসেন জানান, মহাসড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৌলতদিয়া ঘাটের টার্মিনালে প্রায় দেড় শতাধিক যানবাহন আটক রাখা হয়েছে। অপর দিকে রাজবাড়ীর আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার সামনে প্রায় শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটক করে রেখেছে পুলিশ। ঘাট থেকে নির্দেশ পেলেই পর্যায়ক্রমে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান আহলাদীপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মো. মাসুদ পারভেজ ভুইয়া।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনে ধরে পদ্মা-যমুনা নদী পানি অস্বাভাবিক গতিতে কমছে শুরু করেছে। সেই সাথে তীব্র স্রোতে বয়ে আসা পলি ঘাট এলাকার ফেরি চলাচলের চ্যানেল ও বেসিনে জমে নাব্য সঙ্কটের সৃষ্টি হচ্ছে। নাব্য সঙ্কটের কারণে দৌলতদিয়ার ১নং, ২নং ঘাট এলাকায় একটি করে এবং ৫ ও ৬নং ঘাটের মাঝামাঝি ২টি ড্রেজারসহ মোট ৪টি ড্রেজার বসিয়ে বেসিনের গভীরতা বৃদ্ধি ও চ্যানেল তৈরির জন্য ড্রেজিং করা হচ্ছে। ড্রেজিং কাজের জন্য ফেরিগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে
নৌরুটে চলাচলকারী কয়েকজন ফেরি মাস্টার জানান, প্রতিনিয়ত স্রোতের সাথে পলি এসে জমছে চ্যানেল ও বেসিনে। স্বাভাবিকভাবে রোরো ফেরি চলাচলের জন্য ৯-১০ ফুট পানির গভীরতা দরকার। সেখানে দৌলতদিয়া এলাকায় সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ ফুট এবং কোথাও কোথাও আরো কম পানি রয়েছে। এখানকার প্রায় আড়াইশ ফুট দৈর্ঘ্যরে চ্যানেলটি অত্যন্ত সরু ও অগভীর হয়ে গেছে। চ্যানেলে একটি ফেরি ঢুকলে বিপরীত দিক থেকে আর কোন ফেরি ঢুকতে পারে না।
বিআইডব্লিউটি’র ড্রেজিং বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, এ বছর প্রাথমিকভাবে ২০ লক্ষ ঘনমিটার পলি অপসারণের লক্ষ্য নিয়ে ৭টি ড্রেজার দিয়ে তারা কাজ শুরু করেছেন। এর মধ্যে দৌলতদিয়া এলাকায় নাব্যতা সঙ্কট বেশী এবং স্রোতে দ্রুত পলি আসতে থাকায় দিন-রাত ৪টি ড্রেজার দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক সফিকুল ইসলাম জানান, নৌরুটে পর্যাপ্ত (১৮টি) ফেরি আছে। রো-রো ফেরি শাহ মখদুম ৩দিন ধরে বিকল হয়ে আছে। নাব্য সঙ্কটে ফেরি চলাচল প্রচন্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে উভয় ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় শত-শত যানবাহন আটকে পড়ছে।
এদিকে, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে সবগুলো ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ট্রাকসহ শতাধিক গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাপরিচালক সৈয়দ শাহ বরকত উল্লাহ জানান।
তিনি বলেন, নদীতে পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় লৌহজং টার্নিং পয়েন্ট এবং এর কাছের নতুন চ্যানেলেও ফেরি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ড্রেজিংয়ের কারণে চ্যানেলে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। তাই ঝুঁকি এড়াতে এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে বরকত উল্লাহ জানান।
তিনি বলেন “নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং চলছে। এখন ১৮ ফেরিই বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফেরি চলাচল আবার শুরু হবে।” মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির এসআই আরমান হোসেন বলেন, নতুন করে আর কোনো যান ঘাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে যে যানগুলো আটকা আছে সেগুলোর নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।