রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় নির্বাচন দোরগোড়ায়। সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ তুঙ্গে কুমিল্লা-১ আসন। একটি পৌরসভা, দাউদকান্দি-মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনটি। স্বাধীনতা উত্তর এখান থেকে বেশ কয়েকজন রাজনীতিক জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে দেশের রাজনীতিতে আসনটি গুরুত্ব বহন করে আসছে। আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৩-এর নির্বাচনের থেকে আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হয়ে যায়। টানা ৩৫ বছর দলটি আর আলোর মুখ দেখেনি। তখন থেকেই এখানকার আ.লীগ নেতারা কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই দলীয় কোন্দল বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। দীর্ঘ তিনযুগ পর নবম জাতীয় নির্বাচনে আসনটি উদ্ধার হয় মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়াকে প্রার্থী করার মাধ্যমে। দশম নির্বাচনেও তিনি এমপি নির্বাচিত হন। তিনি নির্বাচিত হয়ে এলাকায় দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি আ.লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী। আসনটি ধরে রাখতে তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এদিকে বিএনপির একক প্রার্থী দলের স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এই আসন থেকে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। পরের তিনটি জাতীয় নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ড. মোশাররফ হোসেন এই অঞ্চলে উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের প্রথম সূচনা করেন। তিনিও এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নের স্বাক্ষর রেখেছেন। ড. মোশাররফ দুইটি কলেজসহ বেশ কয়েকটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। বৃহত্তর দাউদকান্দির অবহেলিত উত্তরাঞ্চলের ৯টি ইউনিয় নিয়ে তিনি আলাদা একটি উপজেলা প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন দাউদকান্দি পৌরসভা। ড. মোশাররফ জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি এলাকায়ও সময় দিচ্ছেন। এখানে বিএনপির প্রচারণা নীরবে হলেও একাদশ নির্বাচনের প্রস্তুত রয়েছে বলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান।
এদিকে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাবেক যুব ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আবু জায়েদ আল মাহমুদ মাখন সরকার। তিনি এলাকায় একজন ক্লিনইমেজের নেতা হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। এলাকায় দলমতের বাইরেও তার যথেষ্ট গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। মাখন সরকারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বিরামহীন প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নেতাকর্মীরা আশাবাদি পার্টির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বীতা করবেন মাখন সরকার। মাখন সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত দুইটি নির্বাচনে আ.লীগকে ছাড় দিয়েছি। মহাজোট হলে আগামী নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চাইব, তা না হলে নিজ দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে আমি নির্বাচনে লড়ব ইনশাল্লাহ। আ.লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আরো যারা প্রচার-প্রচারণায় আছেন তারা হলেন- মেঘনা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলম। মেঘনা উপজেলায় তিনি খুবই জনপ্রিয়। কারণ মেঘনা নদীবেষ্টিত অবহেলিত দ্বীপাঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে শফিকুল আলমের প্রচেষ্টায় আজকের মেঘনা উপজেলা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে এলাকার মানুষ তাকে মেঘনা উপজেলার রূপকার হিসেবে ভূষিত করেছেন। দাউদকান্দিতে দলের একাধিক প্রার্থী থাকলেও মেঘনায় শফিকুল আলম একক প্রার্থী। শফিকুল আলম শতভাগ আশাবাদি তিনি দলের মনোনয়ন পাবেন।
এদিকে আসনটিতে নতুন মুখ হিসেবে গত দুই মাস ধরে প্রচারণায় নেমেছেন আ.লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর। তিনিও আ.লীগের একটি অংশ নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিশিষ্ট শিল্পপতি হাসান জামিল সাত্তারপুত্র জেলা আ.লীগ নেতা ব্যারিস্টার নাঈম হাসান দীর্ঘদিন ধরে মাঠে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয় আ.লীগের একটি আংশ তার নেতৃত্বে নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে আছেন। তিনি দলের মনোনয়ন পাবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বর্তমান অবস্থার আলোকে মনে হচ্ছে লড়াই হবে ত্রিমুখী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।