পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রবাদ রয়েছে গা শীন শীন করে। (শীত শীত লাগে) ভাদ্রের তালপাকা গরমের পর থেকে ধীরে ধীরে শুরু হয় শীতের হাওয়া। গরম বেশ খানিকটা নরম হয়। সকালটা শিউলী ঝরা সাদা ফুল দিয়ে শুরু হয়। নীল আকাশ জুড়ে থাকে সাদা মেঘের ভেলা। এবার মধ্য আশ্বিনে এসেও প্রকৃতিতে নেই শীত শীত আমেজ। বরং বৈরী হয়ে খরতাপে পুড়ছে চারিদিক। কদিন ধরে তাপমাত্রার পারদ উঠানামা করছে ৩৪ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়সের মধ্যে। নেই মৃদুমন্দ বাতাস। এক স্বাসরুদ্ধকর আবহাওয়া। প্রকৃতি যেন তপ্ত নি:স্বাস বাড়ছে। গরমের প্রচন্ডতায় হাঁসফাঁস করছে মানুষ পশুপাখি। পুড়ছে ফসলের ক্ষেত। বৃষ্টির জন্য আশ্বিনে এসে আল্লাহর রহমত কামনা করে এস্তেস্কার নামাজ আদায় করছে মানুষ। গতকাল রাজশাহীর তানোরে ফজর আলী মন্ডুমালা কলেজ মাঠে এই নামাজ আদায় করেন আশপাশের জনগণ। আগামী আরো দু’দিন নামাজ আদায় করা হবে বলে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।
এখন আমনের ভরা যৌবন। সেখানে টান পড়েছে। খরতাপে জমি ফেটে যাচ্ছে। ফসল বাঁচাতে প্রনান্তকর প্রচেষ্টা চালনো হচ্ছে। এবার বর্ষায় নামেনি কাঙ্খিত বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিসের মতে এ অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে এবার ৩৫ ভাগ বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন আবাদ বেশ কিছুটা বিলম্বিত হয়। আমন বৃষ্টি নির্ভর ফসল হলেও সময়মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সেচ নির্ভর ফসল হয়ে উঠেছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেচ দিয়ে আবাদ করতে হচ্ছে। এতে করে যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে। তেমনি চাপ বাড়ছে সেচ ব্যবস্থাপনার উপর। বিশেষ করে ভূগর্ভস্ত পানির উপর। এসময় বৃষ্টিপাত হয় বলে সেচ যন্ত্রগুলো রক্ষনাবেক্ষনের জন্য বন্ধ রাখা হয়্। আর বৃষ্টির পানিতে সেচের পাশপাশি ভূগর্ভস্ত পানির স্তর পূন:ভরন হয়। কিন্তু এখন আর তেমনটি হচ্ছেনা। সব মওসুমেই সেচ দিতে গিয়ে ভূগর্ভস্ত পানির উপর চাপ বাড়ছে। আশংকাজনক ভাবে নামছে পানির স্তর। বরেন্দ্র অঞ্চল ঘুরে দেখা যায় পুকুর ডোবা, নালা আর ভূগর্ভস্ত পানি দিয়ে ফসল বাঁচানোর প্রানান্তকর চেষ্টা চলছে। রোদ্রের খরতাপে দ্রুত জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা জানান, দিন দশেক ধরে এমন অবস্থা বিরাজ করছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার রাজশাহী, নওগা, নাটোর, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আমনের আবাদ হয়েছে সাড়ে তিনলাখ হেক্টরের বেশী জমিতে। এরমধ্যে রাজশাহীতে আবাদ হয়েছে তিয়াত্তর হাজার হেক্টরের বেশী জমিতে। এখন ধানে থোড় গজানোর সময়। জমিতে প্রয়োজন সেচ। গত পঁচিশ দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। স্থান ভেদে কিছু বৃষ্টি হলেও তা উল্লেখ করার মত নয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে শেষ বৃষ্টিপাত হয়েছে শূন্য দশমিক সাত মিলিমিটার। এবার বরেন্দ্র অঞ্চলে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হয়নি। অথচ এসময়ে বৃষ্টিপাত আমনসহ শীতকালীন ফসলের জন্য আর্শীবাদ হয়। প্রকৃতিতে আসে শীতলতা। এবার প্রকৃতি উল্টো খরার মত দাপট দেখাচ্ছে। উচু জমির মালিকরা পড়েছে সবচেয়ে বিপাকে।
ফসলের পাতাগুলো বিবর্ণ হচ্ছে প্রচন্ড তাপে। কৃষক আর কৃষি বিভাগ আশঙ্কাা করছে বৃষ্টি না হলে ধানের ফলন অনেক কমে যাবে। খরতাপ বিপাকে ফেলেছে আগাম শীতকালীন সবব্জি চাষে। ভাল দাম পাবার আসায় মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই মুলা, কপি, আলুসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবব্জির আবাদ হয়। এবার তেমনটি করা যায়নি। যারা করেছেন তারাও সেচ দিয়ে ফসল রক্ষা করতে পারছেন না।
আবহাওয়া বিরূপতা শুধু ফসলের ক্ষেতে নয় প্রভাব ফেলেছে জনজীবনেও। প্রচন্ড গরম আর বিদ্যুতের যাওয়া আসার খেলায় মানুষ। কি শহর কি গ্রাম সর্বত্রই চলছে লোডশেডিং।
রাজশাহীর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, এখন রাজশাহীর উপর দিয়ে মাঝারী তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপমাত্রা উঠানামা করছে ৩৪ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে। তাদের হিসেবে রাজশাহীর উপর দিয়ে এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতির হিসাবে এসময় এমন আবহাওয়া থাকার কথা নয়। প্রকৃতি খাম খেয়ালি আচরন করছে। যার প্রভাব পড়েছে সর্বত্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।