Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউরোপে বাড়ছে মুসলমানের সংখ্যা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

ইউরোপের ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে মুসলমানের সংখ্যা। মহাদেশটির কয়েকটি দেশে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ তিনগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সম্প্রতি এক সমীক্ষা থেকে জানিয়েছে ওয়াশিংটনের পিউ রিসার্চ সেন্টার। মূলত ধর্মান্তর ও অভিবাসনের কারণে এই সংখ্যা বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১০ সালে ইউরোপে বসবাসকারী মুসলমানের সংখ্যা ছিল ১৯.৫ মিলিয়ন। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৫.৮ মিলিয়ন। অর্থাৎ, ইউরোপের সমগ্র জনসংখ্যার ৪.৯ শতাংশ।
ইসলাম ধর্মের প্রতি ইউরোপিয়ানরা এখন আরো বেশী আকৃষ্ট হচ্ছে ও ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলামকে জীবনের সঠিক পন্থা হিসেবে নির্বাচন করছে।
ইউরোপের দেশ নরওয়েতে ধর্মান্তরিত মুসলমানের সংখ্যা বর্তমানে ৩ হাজারে পৌঁছেছে। দেশটির ব্যাপক প্রচারিত সংবাদপত্র ভার্ডেনস গ্যাং এক প্রতিবেদনে জানায়, নব্বইয়ের দশকে মুসলমানের সংখ্যা যেখানে ছিল মাত্র ৫০০, সম্প্রতি সেই সংখ্যা তিন হাজারে পৌঁছেছে।
নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার ও প্রাচ্য ভাষা গবেষক ক্যারেন ভোগ জানান, “নরওয়েতে আগে নারীরা মুসলিম পুরুষদের বিবাহ করার মাধ্যমে ইসলামে ধর্মান্তরিত হতেন। কিন্তু এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। মেয়েরা এখন ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয়ে অনুসন্ধান ও গবেষণা করছেন। যার ফলে বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে ইসলামে ধর্মান্তরের সংখ্যা বাড়ছে।”
ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়া মনিকা সালমুক সংবাদমাধ্যমকে জানান, বই পড়ে ও গবেষণার করে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে চার বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। সালমুক আরো জানান, তিনি গ্রিনল্যান্ডে অবস্থিত ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইসিসি) মসজিদ পরিদর্শন করেন এবং তখনই ইসলামকে ধর্ম হিসাবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন।
৪২ বছর বয়সী সলভা নাবিলা জানান, তিনি এক মুসলিম আশ্রয়প্রার্থীর মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
নরওয়ের নৃবিজ্ঞানী লিন্ডা নাওর বলেন, বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। কোনো কিছু জানার উপায় সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী এবং এতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের তথ্য পাওয়াও যায়। আমিও ইসলাম নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা ও পড়াশোনার পর ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছি।
২০১৭ সালে জতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ নির্বাচিত হয় নরওয়ে। এর জনসংখ্যা প্রায় ৫৫ লাখ। খ্রিস্টান ধর্মের পর ইসলাম নরওয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১১ সালে নরওয়েতে সরকারিভাবে নিবন্ধিত মুসলিমের সংখ্যা ছিল, ১ লাখ ২১ হাজার ৯৫ জন। যা পুরো দেশের জন্যসংখ্যার প্রায় ২.৩ শতাংশ। পিউ রিসার্চ সেন্টারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১০ সালে নরওয়েতে ৩.৭ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে ৫.৭ শতাংশ মুসলিম ছিলো। বর্তমানে নরওয়েতে ধর্ম পরিবর্তন ও প্রবাসীদের মাধ্যমে মুসলমানদের সংখ্যা (বেসরকারিভাবে) ২ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এদের অনেকেই পাকিস্তান, সোমালিয়া, ইরাক ও মরক্কো বংশোদ্ভূত।
ইসলামের সাথে নরওয়ের প্রথম পরিচয় হয় ১২৬০ খ্রিস্টাব্দে। যখন তিউনিশিয়ার সুলতান নরওয়ের রাজা হকন্সসনের জন্য মূল্যবান উপহার পাঠিয়েছিলেন। তবে বিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত নরওয়েতে মুসলমানদের জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য ছিল না।
নরওয়েরে প্রথম মসজিদটি মুসলমানদের জন্য একটি ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। ১৯৭৪ সালে রাজধানী অসলোতে এটি উদ্বোধন করা হয়। সূত্রঃ দা গার্ডিয়ান।

জার্মানিতে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মসজিদের যাত্রা শুরু

এদিকে গত শনিবার থেকে জার্মানিতে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মসজিদের যাত্রা শুরু হয়েছে। মসজিদটি উদ্বোধন করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। জার্মানির কোলন শহরে মসজিদটির অবস্থান। এখানেই সবচেয়ে বেশি তুর্কি বংশোদ্ভুত জার্মান নাগরিকের বাস। দেশটিতে ৩০ লাখের বেশি তুর্কি বাস করে। দ্য তুর্কিশ ইসলামিক ইউনিয়ন অব দ্য ইনস্টিটিউট ফর রিলিওজিয়ন কোলনের কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। স্থানীয়দের প্রতিবাদ সত্তে¡ও মসজিদটি নির্মাণ করতে দেওয়ায় এরদোগান জার্মান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। এক হাজারের বেশি মুসল্লি একসঙ্গে মসজিদটিতে সালাত আদায় করতে পারবেন। গত দুই বছর ধরে জার্মানির সঙ্গে তুরস্কের শীতল সম্পর্ক বিরাজ করছে। এই সম্পর্ক মেরামত করতেই প্রেসিডেন্ট এরদোগান তিন দিনের সফরে জার্মানি যান। গত শনিবার ছিল সফরের শেষ দিন। সফরে তিনি দুইবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সম্পর্ক বাড়ানোর অঙ্গীকার করেন। এরদোগানের সফর উপলক্ষ্যে তার সমর্থক ও বিরোধীরা পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করে।



 

Show all comments
  • Md Rasel ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:১৭ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুসলমানের সংখ্যা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ