মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বহু কারণে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত স্থিতিশীলতা নাজুক অবস্থায় রয়ে গেছে। এই অঞ্চলের কৌশলগত স্থিতিশীলতার প্রতি তিনটি অভিন্ন হুমকি হলো সংকটের অস্থিতিশীলতা, অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং পারমাণবিক শক্তিধর দুই রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের বিপদ।
কৌশলগত বিশ্লেষকরা বলছেন যে, পাকিস্তান ও ভারত বেশ কিছু আক্রমণাত্মক ও রক্ষণাত্মক অস্ত্র প্রবর্তন করেছে এবং নিজ নিজ অস্ত্রের পাল্লা ও কারিগরি মান উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ভারতের ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থার আধুনিকায়ন স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তানের মনে অস্বস্তি তৈরি করেছে। ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল অগ্নি-৪ ও আন্ত:মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল অগ্নি-৫-এর সফল পরীক্ষা আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। তাছাড়া সেই ১৯৯০’র দশক থেকে ভারত ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স (বিএমডি) সিস্টেমও গড়ে তুলতে চাচ্ছে। ভারতের এই আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথে একটি বড় অগ্রগতি ছিলো ২০০৫ সালের ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক প্রযুক্তিতে ভারতকে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়া হয়।
তবে অনেক দিন ধরে কাজ করলেও ভারত এখনো বিএমডি ব্যবস্থা মোতায়েন করতে পারেনি। লো-অলটিচুড ও হাই-অলটিচুড এডভান্স এয়ার ডিফেন্স ইন্টারসেপ্টর মিসাইল ব্যবহার করে সমন্বিতভাবে এখনো বিএমডি সিস্টেম পরীক্ষা করা যায়নি। তবে বিভিন্নভাবে বেশ কিছু ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষায় ভারত সফল হয়েছে। পাশপাশি দেশটি তার ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যুহ শক্তিশালী করছে। সফলভাবে বিএমডি সিস্টেম মোতায়েন করতে পারলে ভারত হবে সক্রিয় বিএমডি-সিস্টেমের অধিকারী পঞ্চম রাষ্ট্র।
ভারতের বিএমডি’র প্রভাব: দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম (বিএমডিএস) মোতায়েন করা হলে তা এই অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্য নষ্ট করবে। এর অনেক কারণ রয়েছে: প্রথমত, সক্রিয় বিএমডি সিস্টেম পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের সামর্থ্য নিস্ক্রীয় করে দেবে; দ্বিতীয়ত, এটা প্রথম আঘাত হানতে উৎসাহিত করবে; তৃতীয়ত, এতে নিরাপত্তা ডিলেমা তৈরি হবে ও অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করবে। কারণ বিএমডি সিস্টেম মোতায়েন ও সক্রিয় করা হলে পাকিস্তানও নিরাপত্তার জন্য তার ক্ষেপনাস্ত্র ভাণ্ডারে গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তন আনতে বাধ্য হবে।
পাকিস্তানের পাল্টা ব্যবস্থা: দক্ষিণ এশিয়ায় বিএমডি সিস্টেম বহাল করা হলে পাকিস্তানও তার প্রস্তুতি ও নিখুঁত আঘাত হানার ক্ষমতা জোরদার, তার ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থার পাল্লা ও ভারবহনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বাধ্য হবে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ যে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সমতা অর্জন করতে চায় না, শুধু চায় শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করতে। আর সে কারণেই কৌশলগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের এমআইআরভি সক্ষম আবাবিল ও বাবুর-৩ ক্ষেপাস্ত্রকে যৌক্তিক পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আবাবিল হলো সারফেস-টু-সারফেস ব্যালিস্টিক মিসাইল, যা মাল্টিপল ইনডিপেনডিন্টলি টার্গেটেবল রিএন্ট্রি ভেহিকেল (এমআইআরভি) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছোঁড়া হয়। পাকিস্তান এই প্রযুক্তি হাসিল করেছে বলে অনেক প্রমাণও পাওয়া গেছে। এমআইআরভি ছাড়াও বাবুর-৩ উৎক্ষেপনের মাধ্যমে পাকিস্তান দ্বিতীয় আঘাত হানার ক্ষমতাও অর্জন করেছে। এটা হলো পারমাণবিক অস্ত্র বহনের সক্ষম এসএলসিএম, যা শত্রুর রাডার ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে আঘাত হানতে পারে। তাই এসএলসিএম ও এমআইআরভি সামর্থ্যসম্পন্ন আবাবিল দিয়ে পাকিস্তান যৌক্তিকভাবে ভারতের ডিএমডি সিস্টেম অকার্যকর করতে পারবে।
তাই আঞ্চলিক নিরাপত্তা দৃশ্যপটে পরিবর্তন, উন্নত অস্ত্রের প্রবর্তন এবং অমিমাংসিত বিবাদের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিবেশ নাজুক অবস্থায় রয়ে গেছে বলা যায়। প্রতিরোধক ভারসাম্য নষ্ট করার ক্ষমতা রয়েছে ভারতের বিএমডি ব্যবস্থার। ফলে পাকিস্তানের সামনে একমাত্র বিকল্প হলো পারমাণবিক অস্ত্রের পাশাপাশি তার পারমাণবিক প্রতিরোধকের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত ও কৌশলগত স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে ক্ষেপনাস্ত্র কর্মসূচির মান ও সংখ্যা বাড়ানো। সূত্রঃ সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।