Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমনেই কৃষকের স্বপ্ন

এস.কে সাত্তার ঝিনাইগাতী, শেরপুর : | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ঝিনাইগাতীর কৃষকের স্বপ্ন এখন আমনে। ঘরের খোরাকীর বোরো ধান প্রায় শেষ পর্যায়ে, শীতকালীন সবজির চাষাবাদ আর এখন আমন ধানের স্বপ্নেই বিভোর ঝিনাইগাতীর কৃষক। তবে তারা দুশ্চিতায় রয়েছেন সেচ সঙ্কট নিয়ে।

জানা গেছে, ঝিনাইগাতীর নদী-নালা, খাল-বিলগুলো বর্তমানে শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই শুকিয়ে গেছে। ফলে মৎস্যজীবিরাও যেমন হয়ে পড়েছে বেকার, তেমনি কৃষক ও পানির অভাবে আমন আবাদ নিয়ে রয়েছে অজানা শঙ্কায় ! এখন অনেক কৃষক অবশ্য সেচ দিয়ে চাষাবাদ করছে নদীতে যে সামান্য পানি রয়েছে তাতেই। কিন্তুু এই সামান্য পানিও শুকিয়ে যাবে যে কোন মূহূর্তেই। আর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের কারণেই। যদি এ অবস্থাই চলতে থাকে তবে এখানকার কৃষকরা মাঠে মারা যাবে বলে আশঙ্কা করেছেন অভিজ্ঞমহল।

প্রসঙ্গত এককালের খরস্রোতা মহারশী- মালিঝি-সোমেশ্বরী ইত্যাদি নদী আজ যেন স্মৃতির অতলেই হারিয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুম শুরুর সাথে সাথেই নদী-নালা, খাল-বিলগুলো পানি শূণ্য হয়ে পড়ায় সেচ নির্ভর কৃষকরা যেমন পড়েছে মহা সংকটে, তেমনি মৎস্যজীবিরাও এখন বলতে গেলে বেকার হয়ে পড়েছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি আবাদে নেমে এসেছে ভয়াবহ স্থবিরতা।

আমন আবাদমুখি বড় গেরহস্থ আলী হোসেনসহ ক’জন আমন চাষি জানান, প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে তারা জমিতে আমন বীজতলা রোপন করেছেন। তার পর থেকেই পড়েছেন তীব্র সেচ সংকটে। উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, উপজেলায় এবার আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে। তিনি অবশ্য আশা প্রকাশ করেন, গতবারের চেয়ে এবার আমন আবাদ অর্থাৎ ফলন গত বছরের চেয়ে ভাল হবে। এ দিকে প্রথম দিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিল কৃষক। কিন্তুু শেষ পর্যন্ত গরম পড়ে যাওয়ায় বীজতলার খুব একটা ক্ষতি হয়নি। তাই আবাদের প্রথম ধকল কাটিয়ে উঠলেও কৃষক পড়েছে এখন সেচ সংকটে। বিশেষ করে নদী এলাকার জমিতে নদীর পানিতে এবং উঁচু জমিতে সেচ দিয়ে এই এলাকায় আমন চাষাবাদ করা হয়। কিন্তুু সমস্যা হচ্ছে নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে চাষাবাদ করার জন্য ভাটি এলাকায় পানির জন্য হাহাকার অবস্থার সৃষ্টি হয়ে যায়। এবারও অনুরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহারশী নদীর উজানে নির্মাণাধীন রাবার ড্যামের জন্য বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো এবং সোমেস্বরী নদীর উজানে বেআইনী বাঁধ নির্মাণ করে ভাটি এলাকায় পানি সংকট সৃষ্টি করে চুটিয়ে পানি বিক্রি করায় মহাসঙ্কটে পড়েছে ভাটি এলাকার আমন চাষীরা। অপর দিকে চলতি আমন মৌসুমে সেচ পাম্পের ম্যানেজার এবং মালিকরা সেচের জন্য অতিরিক্ত মূল্য নেয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

পজেলায় যে সেচ কমিটি থাকলেও তাও নামকাওয়াস্তে হওয়ায় এবং সেচ খরচ নির্ধারণ করে না দেয়ায়, পাম্প মালিকও ম্যানেজাররা ইচ্ছেমত অতিরিক্ত সেচ মূল্য আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। উপায়হীন কৃষকরা জানান, তারা অতিরিক্ত সেচ মূল্য দিয়ে বাধ্য হয়েই সেচ কাজ করছেন তাদের মতে, সরকার বা উপজেলা সেচ কমিটি সেচ মূল্য নির্ধরণ করে না দেওয়ায় সেচ পাম্পের মালিক অথবা ম্যানেজাররা চাষিদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে লোকসানের ভয়ে অনেকেই নিজের ফসলি জমি অনাবাদি রেখে দিতেও বাধ্য হচ্ছেন বলে জানা যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমন

২৬ নভেম্বর, ২০২২
৫ অক্টোবর, ২০২২
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৫ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ