Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বদলে যেতে পারে মেসিডোনিয়ার নাম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৫:৪৯ পিএম

দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ মেসিডোনিয়াতে রবিবার এক গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। যার ফলে দেশটির নামই বদলে যেতে পারে। মেসিডোনিয়ার নাম যদি বদলে যায় তাতে প্রতিবেশী গ্রীসের সাথে দেশটির দীর্ঘ দিনের একটি বিবাদ মীমাংসা হবে। একই সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো জোটের সদস্য হতে পারবে মেসিডোনিয়া।
কিন্তু পুরো বিষয়টি সেখানে ব্যাপক রাজনৈতিক বিভেদ ও আবেগের জন্ম দিয়েছে। মেসিডোনিয়ার প্রেসিডেন্ট স্বয়ং এই গণভোট বয়কটের আহবান জানিয়েছেন।
১৯৯১ সালে সাবেক যুগোস্লাভিয়া থেকে বের হয়ে এসে স্বাধীনতা ঘোষণা করে মেসিডোনিয়া। কিন্তু মুশকিল হল গ্রীসের একটি অঞ্চলের নামও মেসিডোনিয়া। গ্রীসের সবচাইতে জনবহুল অংশ সেটি। অতএব এই নামে আপত্তি জানিয়েছিল গ্রীস। দুই মেসিডোনিয়াই একসময় রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। নাম নিয়ে তাদের বিবাদও বহুকালের। দুই মেসিডোনিয়াই দাবি করে তারা আলেকজান্ডার দা গ্রেটের উত্তরাধিকারী।
গ্রীসের আপত্তির মুখে জাতিসংঘ ও অন্যান্য কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা সরাসরি মেসিডোনিয়া নামটি ব্যবহার না করে 'সাবেক যুগোস্লাভ প্রজাতন্ত্র মেসিডোনিয়া', এই নামে দেশটিকে সম্বোধন করে আসছিলো। মেসিডোনিয়া ২০০৮ সালে একবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে চাইলে গ্রীস সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলো। দু দেশের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সাংস্কৃতিক বিবাদ চলেছে বহুদিন।
শেষমেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে অস্তিত্ব ঘোষণার পর ২৭ বছর পর ২০১৮ সালের জুন মাসে একটি চুক্তি সাক্ষর করে গ্রীস ও মেসিডোনিয়া। চুক্তিতে নাম বদলে 'রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া' করার ব্যাপারে সম্মত হয় মেসিডোনিয়া। বিনিময়ে মেসিডোনিয়া যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে পারে সে ব্যাপারে ভেটো দেয়া বন্ধ করবে গ্রীস। ন্যাটো জোটেরও সদস্য হতে পারবে তারা। একই সাথে গ্রীস এটাও মেনে নেবে যে মেসিডোনিয়ার লোকজন মেসিডোনিয়ান ভাষাভাষী, মেসিডোনিয়ান জাতির।
নাম বদলানোর বিষয়টি মেসিডোনিয়াতে রাজনৈতিক বিভেদ তৈরি করেছ। হ্যাঁ ভোট দিতে সমর্থকদের আহবান জানাচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী যোরান যায়েভ। কিন্তু মুশকিল হল নাম বদলে ফেলার মতো এত বড় একটা সিদ্ধান্তে দেশের সব রাজনীতিবিদ একমত নন। এমনকি দেশটির প্রেসিডেন্ট আর প্রধানমন্ত্রীও দুই পক্ষে চলে গেছেন। দেশটির জনগণের মতামতও নিতে হবে। শেষমেশ ডাকা হল গণভোট।
মেসিডোনিয়ার নাগরিকদের এই ভোটে জিজ্ঞেস করা হবে, “গ্রীস ও মেসিডোনিয়ার মধ্যেকার চুক্তি মেনে নিয়ে আপনি কি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নেটোর সদস্য হতে চান?”
মেসিডোনিয়াতে ১৮ লাখ ভোটার। মেসিডোনিয়ার সংবিধান অনুযায়ী অন্তত ৫০ শতাংশ ভোটার ভোটকেন্দ্রে না এলে ভোটের ফল বৈধতা পাবে না। যদি হ্যাঁ ভোট জিতে যায় তার পরেও আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাদ থাকবে। সরকারকে সংবিধান সংশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেজন্যে ১২০ আসনের সংসদে দুই তৃতীয়াংশ ভোটে আবার তা অনুসমর্থন করতে হবে। দেশটির সংসদে সেটি পাশ হলেও গ্রীসের সংসদেও নাম নিয়ে চুক্তি পাশ হতে হবে।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাসও মেসিডোনিয়ার সাথে চুক্তি নিয়ে নিজের দেশে বিরোধিতার মুখে রয়েছেন। সূত্রঃ বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেসিডোনিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ