রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সিরাজদিখানে কৃত্রিম পদ্ধতিতে জনপ্রিয় হচ্ছে মৌচাষ। এতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশাপাশি মধু সংগ্রহ করে আর্থিক লাভবান হচ্ছেন অনেকে। তাই এ অঞ্চলে ১০টি মৌচাষি এখন রয়েছে। গতবার ছিল চারজন। দুই দিকে লাভের কারণে দিন দিন মৌচাষি বেড়ে চলছে।
কৃত্রিম ভাবে কাঠের বাক্সে মৌচাষ করে আশার আলো দেখছেন অধিকাংশ মৌচাষিরা। মধু সংগ্রহের উত্তম সময় হল নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। আর বাকি সময়টুকু মৌমাছিকে বাচিয়ে রাখার জন্য বর্ষার মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানসহ বিভিন্ন এলাকায় মৌবাক্স গুলো নিয়ে আসে। আর এ সময় চিনি, ভিটামিন ও অল্প পরিমাণে ফুলের রস আহরণ করে বেঁচে থাকে মৌমাছিগুলো। বর্ষার মৌসুমে তেমন কোনো ফুল না থাকায় ধৈঞ্চা, শাপলা ও নারিকেলের ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে জীবন ধারণ করে থাকে এবং রানী মৌমাছি এই সময় বংশবিস্তার করে থাকে। একটি রানী মৌমাছি ২৪ ঘণ্টায় ভরা মৌসমে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজর ডিমদিয়ে থাকে এবং মৌসুম ছারা ১৫০০ থেকে ১৬০০ ডিম দিয়ে থাকে।
জানা যায়, এফিস মিলিফেরা মৌমাছিগুলো মৌসুমের শেষে মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বর্ষার মৌসুমে তেমন কোনো ফুল না থাকায় এই সময়টা প্রজননের জন্য বেছে নিয়ে থাকে মৌচাষিরা। প্রতিটি মৌবাক্সে চার-পাঁচটি সিট বা ফ্রেম থাকে, জাতে মৌমাছিগুলো স্বাভাবিকভাবে চলা ফেরা ও প্রজনন ক্ষেত্রে যেন কোনো বাধা না আসে, সে জন্য ফ্রেমগুলো বাক্সের ভেতরে ফঁাঁকা ফাঁকা করে দেয়া হয়। যদিও ভরা মৌসুমে নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মৌবাক্সে সাত-আটটি ফ্রেম দেয়া হয় মধু উৎপাদনের জন্য। সব চাইতে বেশি মধু আসে সরিষার ফুল থেকে। মৌচাষিরা মৌসুমের শুরুতে সরিষার মধুর জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। জামালপুর, টাংগাইল, ময়মনসিংহ। এ ছাড়া রাজশাহী, নাটোর, দিনাজপুর, রংপুরে লিচুফুলের জন্য যায়, মাদারিপুর ধনিয়া বা কালিজিরা ফুলের জন্য যায়, সর্বশেষে সুন্দর বনে চলে যায় মধু সংগ্রহের জন্য।
প্রতিটি বাক্সে একটি করে রানী থাকে। রানীর অনুমতি ছাড়া কেউ কোনো কাজ করে না। এক বাক্সে একাদিক রানী থাকলে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যায়। যারা মধু সংগ্রহ করে তাদেরকে শ্রমিক বলা হয়, আর যারা বাক্সের মধ্যে রানীকে দেখভাল করে তাদেরকে সৈনিক বলা হয় এবং পুরুষ মৌমাছিদেরকে কোনো কাজ করতে হয় না শুধু প্রজননের সময় কাজে লাগে। পুরুষ মৌমাছি রানীর সঙ্গমের কিছু দিন পরে মারা যায়। আরো জানা যায়, প্রতিটি মৌমাছির গড় আয়ু ৪৫ দিন। কিছু মৌমাছি আছে ইউক্যালিপটাস গাছ থেকে পুলিং বা রেণু এনে রানীর প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের চরকমলাপুর গ্রামে মো. জহিরুল ইসলাম (৭০) জানান, আমি এ এলাকায় ২০ দিন হয় এসেছি। আমি ১৫ বছর ধরে পেশায় জড়িত, প্রথমে ছয়টি বাক্স নিয়ে শুরু করেছিলাম এখন তা দাঁড়িয়েছে ১১০টিতে। আমার একটি রোগ হয়েছিল তখন চিকিৎসক আমাকে খাটি মধু খাওয়ার জন্য বলেছিল, তখন আমি ঢাকার সব জায়গায় খোঁজ করে কোথাও খাঁটি মধু পাইনি। তখন বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এ পেশায় জড়িয়ে পড়ি। আমি সিভিল (ডিপ্লোমা) ইঞ্জিনিয়ার ছিলাম। রোগের কারণে এ পেশা ছেড়ে এখন মৌচাষি।
এ পেশায় ভালো লাভ থাকায় এখন স্থানীয় লোকজনও এ কাজে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, সিরাজদিখানে মৌচাষে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছে। মৌচাষ করে মধু সংগ্রহের পাশাপশি জমির ফলন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে ফসলের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পায়। দুই দিকে লাভবান তাই আগের তুলনায় মৌচাষি বেড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।