Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মৌচাষে নীরব বিপ্লব

মো. জয়নাল আবেদীন জয়, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দেশের বৃহৎ চলনবিল অঞ্চলে সরিষা ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ চাষিরা। এ বছর সরিষা ফুল থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকার মধু সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নিয়ে মাঠে নেমেছেন তিন শতাধিক মৌ চাষি।
চলনবিলের চারপাশের উপজেলাগুলোর মাঠে কৃষকের জমির পাশে মৌমাছির খামার নিয়ে তাঁবু টাঙ্গিয়ে বসতি গড়েছে অনেক আগেই। অল্প জমিতে সরিষা ফুল ফোটায় এখনোও মধু সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পরই শুরু হবে মধু সংগ্রহ। কৃষি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় মৌমাছি দিয়ে প্রতি বছর মধু সংগ্রহ করে একদিকে যেমন মৌ চাষিরা স্বচ্ছল হচ্ছেন। অন্যদিকে মধু সংগ্রহের সময় মৌমাছির পরাগায়নের ফলে চাষিরা অধিক ফলন পাচ্ছেন।
দেশের শস্যভাÐার খ্যাত চলনবিল অঞ্চলে জমির সরিষা ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে নিরব বিপ্লব ঘটে গেছে। মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে নিজেদের ভাগ্যর চাকা ঘুরিয়ে স্বচ্ছল হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে শত শত বেকার যুবক।
দিনাজপুর সদরের যুবক মাহবুব আলম। তিনি সরিষা ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য এসেছেন চলনবিলের উল্লাপাড়া উপজেলার মানিকদিয়ার গ্রামের মাঠে। তার ভাগ্য বদলের গল্প শুনালেন নিজের মুখেই। আট বছর আগে ছিলেন বেকার। সামান্য পুঁজি নিয়ে গড়ে তোলেন মৌমাছির খামার। কঠিন মনোবল আর নিজ পায়ে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞায় এখন সফল মৌ চাষি। তার খামারে ২১০টি মৌবাক্স রয়েছে। এই মৌসুমে সরিষা ফুল থেকে প্রায় ২০০ মন মধু উৎপাদন করবেন। খামারে উৎপাদিত মধু সংগ্রহ করে ছয় হাজার টাকা মন দরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করেন। তিনজন শ্রমিক নিয়ে সব খরচ বাদে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হয়।
সিরাজগঞ্জ মৌ চাষি সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ ২৬ বছর ধরে মৌ চাষের সাথে জড়িত। এক সময় হকারীসহ অন্যান্য কাজ করে চলতো তার সংসার। অভাবের কারণে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে চলছিল তার জীবন। মাত্র চারটি মৌ বাক্স নিয়ে শুরু করেন খামার। মৌ চাষের মাধ্যমে পরিবারের অভাব দূর করে আব্দুর রশিদ এখন সচ্ছল স্বাবলম্বী।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারিভাবে মধুর বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ না করায় মৌ চাষিরা ব্যবসায়ীদের কাছে ১৫০ টাকা দরে মধু বিক্রি করছে। অথচ একই মধু কিনে প্রক্রিয়াজাত করে দেশি বিদেশি কোম্পানীগুলো ৭/৮গুন বেশি দামে দেশের বাজারে বিক্রি করছে। উত্তরাঞ্চলে কমপক্ষে ৮০০ মৌ খামারী রয়েছে। এই অঞ্চলে একটি মধু প্রক্রিয়াজাত প্লান্ট স্থাাপন হলে মৌ চাষিরা ব্যাপকভাবে লাভবান হতো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ