পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘মুক্তিযুদ্ধের মতো পবিত্র বিষয়কে পুঁজি করে সরকার দেশের নাগরিকের সঙ্গে এমন অসভ্য আচরণ করতে পারে না’ বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল বলেছেন, রাষ্ট্র দিন দিন দানবে পরিণত হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্র-নাগরিক সম্পর্ক ঃ দায়দায়িত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন।
‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’ আয়োজিত এবং অজয় রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে সুলতানা কামাল বলেন, আমরা আজকে উদ্বিগ্ন এই কারণে যে, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের নাম করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন তারা (আওয়ামী লীগ), দায়িত্ব নিয়ে সেটা করতে পারছেন না। সেজন্য আমাদের আরও বড় করে উদ্বেগটা প্রকাশ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পবিত্র বিষয় তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুঁজি করে, আমাদের (নাগরিক) সঙ্গে এই আচরণ তারা করতে পারে না।
সুলতানা কামাল বলেন, তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) আমাদের বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে তারা অঙ্গীকার করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আরেকটা বিষয় দেখতে পাচ্ছি যে শহিদুল আলমকে ধরে নিলো, তার স্ত্রী এতেই সন্তুষ্ট যে সে কারাগারে আছে, গুম হয়নি। এই বাচ্চাগুলোকে ধরে নিলো, অনেক দিন ধরে তাদের কোনও খবর নেই। অমানবিক, নিষ্ঠুর যন্ত্রণার মধ্যে অভিভাবকরা যখন দেখলেন বাচ্চাগুলো ডিবি অফিসে আছে, সেই অভিভাবকরা এতেই সন্তুষ্ট হয়ে বলছেন, ‘তারা ডিবি অফিসে আছে, তাদের মেরে ফেলা হয়নি।’ একটা জাতি যখন শুধুমাত্র প্রাণে বেঁচে আছে, এটুকুতেই সন্তোষ প্রকাশ করে, সেই জাতির অবস্থান কোথায় গেছে? সেই জাতি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এসব দেখলে আমার মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা মনে পড়ে। সেই জায়গায় যদি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আমাদের নিয়ে যায়, তাহলে আমি তাদের ধিক্কার জানাই। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পবিত্র বিষয়কে পুঁজি করে আমাদের সঙ্গে এই আচরণ তারা করতে পারে না।
অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন যারা, তারা চেতনাটিকে কতটুকু বুঝেছেন, সেটা একটা প্রশ্নের বিষয়। যেখানে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নাই, সেখানে কীসের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। রাষ্ট্রকে মানবিক হতে হবে, রাষ্ট্র দিন দিন ক্রমেই দানবে পরিণত হচ্ছে।
শহিদুল আলমের স্ত্রী অধ্যাপক ড. রেহনুমা আহমেদ বলেন, এদেশের একজন লোককে হাত ও চোখ বেঁধে নিয়ে গিয়ে আমাদের সাহসী বাহিনীর জোয়ানরা খুশি হন। আমি শুনেছি যে চারটি বাহিনীর জোয়ানরা এই অভিযানে ছিলেন। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তো তারা এই ট্রেনিংগুলো পান। যখন অন্য প্রশ্ন ওঠে, তখন এটার সঙ্গে এই ট্রেনিংয়ের বিষয়টিও তোলা উচিত। আরেকটি বিষয় জানতে পেরেছি, আমাদের দেশে নাকি ইসরাইল থেকে থার্ড পার্টির মাধ্যমে সফটওয়্যার আমদানি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে একটি সর্বগ্রাসী সার্ভিল্যান্স ব্যবস্থা চালু করা হবে।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, রাষ্ট্র এখন নাগরিকবিরোধী হয়ে গেছে। সরকারের মনমানসিকতা এরকম যে, নাগরিককে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। স¤প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি বিষয় নিয়ে আসা হয়েছে, তা হলো অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট। এটা মূলত অনেক আগে থেকেই অকার্যকর ছিল। এর মধ্য দিয়ে সরকার আমাদের একটা বার্তা দিতে চায়। সুস্থ মানুষের পক্ষে এবং রাজনৈতিক দলের পক্ষে এই আইন করা সম্ভব না।
মানবাধিকার কর্মী খুশি কবিরের সঞ্চালনায় এবং সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, কারাবন্দী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের স্ত্রী অধ্যাপক ড. রেহনুমা আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, তেল গ্যাস ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।