Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীন সাগরে ২০টি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বসাবে বেইজিং

দক্ষিণ চীন সাগরের বিশাল অংশের ওপর চীনের দাবি আরো জোরদার হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন

প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে ২০টি ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বহর স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে বেইজিং। দূরবর্তী দ্বীপপুঞ্জগুলোতে ব্যাপক পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ পরিকল্পনা নিয়েছে চীন। আর এতে দক্ষিণ চীন সাগরের বিশাল অংশের ওপর চীনের দাবি আরো জোরদার হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে ২০টি ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে বেইজিং। দূরবর্তী দ্বীপপুঞ্জসহ ড্রিলিংয়ে নিয়োজিত তেলের রিগেও এখান থেকে বিদ্যুতের যোগান দেয়া হবে। এছাড়া স্পাটলি দ্বীপপুঞ্জ এলাকায় চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপ এই থেকে বিদ্যুৎ পাবে বলে জানানো হয়েছে। কৃত্রিম দ্বীপকে ক্রমেই সামরিক ঘাঁটিতে রূপান্তরিত করছে চীন।
এসব ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চায়না শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন সিএসআইসি তৈরি করবে বলে জানানো হয়েছে। চীনের ডুবোজাহাজসহ বিশাল বিশাল নৌযান নির্মাণের বৃহত্তম সংস্থা হলো সিএসআইসি। এছাড়া, প্রথম ভাসমান পরমাণু চুল্লির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নতুন কিছু নয়। অবশ্য টাইফুন এবং বিরোধপূর্ণ এলাকায় এর ব্যবহার নিয়ে অনেক পরিবেশ এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ নানা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
অপর এক খবরে বলা হয়, সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ আগেই তৈরি করেছিল চীন। এবার সাগরে ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে। দক্ষিণ চীন সাগরে কর্তৃত্ব আরো দৃঢ় করবে এমনই পরিকল্পনা বেজিংয়ের। কৃত্রিম দ্বীপে তৈরি করা বিশাল সামরিক পরিকাঠামো চালু রাখতে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন। তাই মাঝ সাগরেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভাসিয়ে দেয়ার পথে এগোতে শুরু করেছেন শি জিন পিং। প্যারাসেল আইল্যান্ডস আর স্প্র্যাটলি আইল্যান্ডস এখন হল পৃথিবীর মানচিত্রে সেই কয়েকটি বিন্দু, যেগুলিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এখন সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত। এই কথা বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ এবং গৃহযুদ্ধ চলছে ঠিকই কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপ প্যারাসেল আর স্প্র্যাটলিকে ঘিরে পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তিগুলি যেভাবে হুঁশিয়ারি আর পাল্টা হুঁশিয়ারি ছুড়তে শুরু করেছে পরস্পরকে তাতে বড় বিপদ ঘনিয়ে ওঠার আশঙ্কা কেউই উড়িয়ে দিচ্ছেন না। যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত সব দেশ তো বটেই, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং দক্ষিণ চীন সাগরের আশেপাশে অবস্থিত অনেকগুলি দেশই বলছে, আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ঢুকে কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়েছে চীন। কিন্তু সব অভিযোগ নাকচ করে চীন পরিকাঠামো বাড়াচ্ছে কৃত্রিম দ্বীপে। যুক্তরাষ্ট্র একাধিক বার চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপের আশেপাশে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে চীনকে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে বেজিংয়ের আধিপাত্য কায়েমের চেষ্টা মেনে নেবে না ওয়াশিংটন। চীন পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দ্বীপগুলিতে সামরিক পরিকাঠামো দ্রুত বাড়াতে শুরু করেছে। রাডার সিস্টেম, লাইট হাউজ, সেনা ব্যারাক, বন্দর, বিমানঘাঁটির সবই তৈরি হয়েছে বা হবে ওই সব দ্বীপে। কিন্তু এই বিপুল পরিকাঠামো চালু রাখার জন্য প্রচুর বিদ্যুৎ প্রয়োজন। প্যারাসেল এবং স্প্র্যাটলি মূল ভূখ- থেকে বহু দূরে মাঝ সাগরে অবস্থিত হওয়ায় চীনের পাওয়ার গ্রিড থেকে সেখানে বিদ্যুৎ পাঠানো সম্ভব নয়। তাই বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সমুদ্রে সুবিশাল জাহাজ ভাসিয়ে তাতে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। সেই ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কৃত্রিম দ্বীপে সরবরাহ করা হবে বিদ্যুৎ। চীনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা চায়না শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন এই ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করবে। বিবিসি, এবিপি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন সাগরে ২০টি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বসাবে বেইজিং
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ