Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আঞ্চলিক বাণিজ্যে চার বাধা

সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ : বিশ্বব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার ধরনের বাধার কারণে বাণিজ্য বাড়ছে না। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ শুল্ক, আধা শুল্ক ও অশুল্ক বাধা, কানেকটিভিটি খরচ এবং সীমান্তে আস্থার সঙ্কট। এতে বলা হয়, বাণিজ্য বাধা দুর করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য তিন গুণ বাড়বে এবং বর্তমানের আঞ্চলিক বাণিজ্য ২৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, বিশ্বে বাংলাদেশের বাণিজ্য এখন ৮৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। অথচ দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য হচ্ছে মাত্র ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের। সারা বিশ্বে যেখানে এক ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হচ্ছে, সেখানে গত ২৫ বছরে এ অঞ্চলের বাণিজ্য ২৩ বিলিয়ন ডলারে আটকে আছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য হচ্ছে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। এটি ১৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন করা সম্ভব।
বিশ^ব্যাংক বলেছে, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কিংবা বাণিজ্যিক-এই তিন কারণেই বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী ভারত। যাদের সঙ্গে বছরে পণ্য ও সেবা আমদানি-রফতানি হয় প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার। কিন্ত এই বাণিজ্যের সিংহভাগই দখলে রেখেছে ভারত। অথচ সে দেশে রফতানির বড় সুযোগ থাকলেও কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ। যা ভবিষ্যৎ সংকট বাড়াতে পারে, এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায়। এমন তথ্য উঠেছে এ নিয়ে করা বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায়।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যক বাধা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উঠে আসে। অনুষ্ঠানে ‘এ গ্লাস হাফ ফুল: দ্য প্রমিজ অব রিজিওনাল ট্রেড ইউনিয়ন ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সমন্বয়ক সঞ্জয় কাঠুরিয়া। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান প্রমুখ।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্যে বড় বাধা শুল্ক। কিছুটা অশুল্ক বাধাও রয়েছে। সেগুলো দুর করতে চেষ্টা চলছে। কানেকটিভিটি বাড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের বাণিজ্য ইউরোপ, আমেরিকা নির্ভর। কারণ সেখানে সুবিধা বেশি পাওয়া যায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য আরও বাড়াতে হবে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর তালিকায় থাকা পণ্যের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছি। মুহিত বলেন, ৪৭ এর মতো কানেকটিভিটি সম্ভব নয়, তবে চেষ্টা চলছে। সাফটা কার্যকরের মাধ্যমে নতুন করে কানেকটিভিটি কার্যকর করা হবে। আমরা চেষ্টা করছি, ভারতের সঙ্গে কানেকটিভি বাড়াতে কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে কানেকটিভিটি আরও বাড়বে।
সঞ্জয় কাঠুরিয়া বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাফটা চুক্তি রয়েছে। ফলে কোনো শুল্ক থাকার কথা নয়। অথচ এ অঞ্চলেই বেশি শুল্ক রয়েছে। সরাসরি শুল্কের বাইরেও আধা ট্যারিফ রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার আন্তঃবাণিজ্য নিয়ে করা ওই গবেষণায় বলা হয়, দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাবনা আছে প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার আমদানি-রফতানির। বিপরীতে এই অঙ্ক আট বিলিয়নের কম। পাশাপাশি মোট বাণিজ্যের ৮৪ শতাংশই হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে।
বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া দেশগুলোর মধ্যে মোট বাণিজ্য হয় ২৩ বিলিয়ন ডলারের। যার চার ভাগের তিন ভাগই দখলে রেখেছে ভারত। বিশ্বব্যাংক বলছে, এই অঙ্ক বাড়ানো সম্ভব আরো তিনগুণ। যাতে অংশ বাড়বে অন্য দেশগুলোরও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বব্যাংক

১২ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ