নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জাহেদ খোকন
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই যেন উত্তেজনা বাড়ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন খবরের উপলক্ষ্য তৈরি করছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী আমেজে এখন উত্তপ্ত দেশের ফুটবলাঙ্গন। এ উত্তাপ বাড়তে এবার ভুমিকা রাখলেন বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী নুরুল ইসলাম নুরু। টঙ্গী ক্রীড়া চক্রের সভাপতি নুরু সর্বপ্রথম মনোনয়নপত্র কেনেন। ১৬ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বন্টনের প্রথমদিনই তিনি তা সংগ্রহ করেন। পরের দিনই নুরু মিডিয়াকে ঘোষণা দেন- যে কোন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নেবেন তিনি। কোন অবস্থাতেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কথা রাখতে পারলেন না টঙ্গী ক্রীড়া চক্রের সভাপতি। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের আট দিনের মাথায় নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। ডিগবাজী দিয়ে গতকাল দুপুরে নুরু ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটনকে সমর্থনের ঘোষণা দিলেন। নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ব্যালটে তার নাম থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে আর থাকছেন না তিনি। এ খবর চাউর হওয়ার পর কাল বাফুফে ভবনে অনেককেই বলতে শোনা গেছে, ‘এক লাখ টাকায় কোটি টাকার কাভারেজ পেলেন নুরুল ইসলাম নুরু।’ শুধু তাই নয় নির্বাচন থেকে নুরুর সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় গুঞ্জন উঠেছে, তিনি নাকি মুলত টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন। অবশ্য এই গুঞ্জনের গুরুত্বও রয়েছে। কারণ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর বেশ ক’দিনই নুরু জোর গলায় বলেছেন, ‘আমি নির্বাচনে আছি এবং শেষ পর্যন্ত থাকবোই। কারো অনুরোধে সরে দাঁড়ানো কিংবা কোনো পক্ষে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’ নির্বাচনে থাকবেন শুধু এই ঘোষণা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি নুরু, তিনি একমাত্র প্রার্থী, যিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও এনেছেন। কে বা কারা নুরুর কাছে খুদেবার্তায় ভোট চেয়েছে। এ জন্য নির্বাচনী ধারা-উপধারা তুলে ধরে এর প্রতিকার করতে মিডিয়ার সহযোগিতাও চান এই প্রার্থী। তিনদিন আগে বলা সব কথাই অনায়াসে ভুলে গেলেন নুরু। ডিগবাজী দিয়ে যোগ দিয়েছেন ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলে।
নুরু নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে যাওয়ায় এখন বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সম্মিলিত পরিষদের কাজী সালাউদ্দিন ও ‘বাঁচাও ফুটবল’ প্যানেলের কামরুল আশরাফ খানের সঙ্গে সভাপতি পদে নির্বাচনে ঠিকই থাকছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক তারকা ফুটবলার গোলাম রব্বানী হেলাল। একথা গতকাল জোর গলায় বলেন তিনি। যদিও রটনা ছিলো সালাউদ্দিনকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন হেলাল। গুঞ্জন আছে, এ ব্যাপারে সালাউদ্দিনের সঙ্গে নাকি তার গোপন সভাও হয়েছে। তবে এ গুঞ্জনের সত্যতা অস্বীকার করেন হেলাল। গতকাল তিনি মুঠোফোনে ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত নির্বাচনে আছি। কোনো প্যানেলকে সমর্থন দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। নির্বাচন করবো বলেই তো মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। যদি অন্য কোন ইচ্ছা থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতাম। যেহেতু তা করিনি তাই বলতে পারি আমি নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকছি।’ সালাউদ্দিন ও কামরুল আশরাফ প্যানেল নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলেও এখনো প্রচারণার জন্য মাঠে নামেননি হেলাল। তবে হেলাল মনে করেন ভোটাররা তার পক্ষে আছেন। এ ব্যাপারে হেলালের কথা, ‘সভাপতি পদপ্রার্থী দু’জন টাকার বস্তা নিয়ে নেমেছেন। ফুটবল অঙ্গনে একজন ব্যর্থ, আরেকজন একেবারেই নতুন। তাদের মতো আমার টাকা না থাকলেও। মনের জোর রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ভোটাররা আমার পক্ষে থাকবেন। যদি তারা আমাকে ভোট না দেন তাহলে বুঝবো ভোটাররা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন।’
সালাউদ্দিনকে সমর্থনের বিষয়টি অস্বীকার করলেও, তার প্রতি হেলালের দুর্বলতা সবাই জানেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের দিন সেটা আরেকবার পরিষ্কার করেন হেলাল। দীর্ঘদিন মাঠে দু’জন ছিলেন সতীর্থ। বছরের পর বছর খেলেছেন একই ক্লাবে। এক সঙ্গে জেলও খেটেছেন। এছাড়া ২০০৮ সালে সালাউদ্দিন যখন প্রথমবার বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন, তখন সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন হেলাল। মাঠ এবং এর বাইরের বন্ধুত্ব এখনো অটুট আছে বলে জানান হেলাল। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের দিন হেলাল শুধু সালাউদ্দিনের প্রশংসাই করেননি বলেছিলেন, ‘সালাউদ্দিন ভাই আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে কখনো অনুরোধ করবেন না। আমিও সরে দাঁড়াবো না। এ কথা সালাউদ্দিন ভাই যেমন জানেন, তেমনি আমিও জানি।’ হেলাল নিজের কথায় কাল আবারো সুর মেলালেন। বললেন,‘যে যেখানে যেমনভাবেই ম্যানেজ হোন না কেন, আমি আমার অবস্থানে এখনো পর্যন্ত ঠিক আছি। নির্বাচনে আছি এবং থাকবো। জয়-পরাজয় নির্ভর করছে ভোটারদের উপর। তবে আমার বিশ্বাস ভোটাররা এবার আর ভুল করবেন না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।