নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ সুজুকি কাপের ‘এ’ গ্রুপে টানা দুই জয় পেয়ে সেমিফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে অন্তত ড্র করতে পারলেই লাল-সবুজরা গ্রুপ সেরা হয়ে জায়গা পেত শেষ চারে। এমন ভয়হীন ম্যাচেও পারলো না বাংলাদেশ। বরাবরের মতো জাতিকে লজ্জায় ডোবালেন জাতীয় দলের ফুটবলাররা। শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারী ভর্তি দর্শক হতাশ হলেন জামাল ভূঁইয়া-মামুনুল ইসলামদের হারে। নেপাল ২-০ গোলে বাংলাদেশকে হারিয়ে যেখানে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে গেল, সেখানে ঘরের মাঠে দর্শক হয়েই থাকলো বাংলাদেশ! এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান ৩-০ গোলে ভুটানকে হারালে ৬ পয়েন্ট থাকা স্বত্বেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে সাফ থেকে ছিটকে পড়লেন ওয়ালি ফয়সাল, তপু বর্মনরা। অথচ গ্রুপের শেষ ম্যাচের আগে সেমিফাইনালের দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশই। নেপাল-পাকিস্তানের যেখানে জয়ের পাশাপাশি মেলাতে হতো গোল ব্যবধানও, সেখানে বাংলাদেশের দরকার ছিল শুধুই একটি ড্র। কিন্তু সেটাও করে দেখাতে পারেনি জামাল ভূঁইয়া বাহিনী। সদ্য সমাপ্ত জাকার্তা-পালেমবাং এশিয়ান গেমস ফুটবলের নক আউট পর্বে উঠে যে বাংলাদেশ নিজেদেরকে মেলে ধরেছিল, এক নিমিষেই যেন তারা গুটিয়ে গেলো। আর এটা হলো শুধূ মাত্র গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলের কল্যাণে। বহুবার বাংলাদেশ ফুটবল দলকে ডোবানো সোহেলের এক ব্যর্থতায় ভেঙ্গে গেলো দেশের কোটি কোটি মানুষের স্বপ্ন। দর্শকপূর্ণ স্টেডিয়াম দেশের ফুটবলে নতুন আলো হয়ে জ্বললেও হঠাৎই যেন তা অন্ধকারে রূপ নিলো। এমন হারে স্তব্ধপ্রায় বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। যার নেতৃত্বে এবারের এশিয়াডে ইতিহাস গড়া সাফল্য তুলে এনেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক দল। গেল পরশু নেপালের বিপক্ষে হারের পর হতাশা আঁকড়ে ধরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে। তবে সবচেয়ে বেশি হতাশ হন জামাল ভূঁইয়া। ম্যাচ শেষে মাঠ থেকে বের হওয়ার সময় তাকাননি কোন দিকে। সোজা হেটে চলে যান ড্রেসিংরুমে। নির্লিপ্ত থাকেন ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার পর যেন শোকে স্তব্ধপ্রায় হয়ে যান জামাল ভূঁইয়া। যার রেশ কাটতে প্রায় ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় অতিবাহিত হয়।
তবে প্রাথমিক শোক কাটিয়ে গতকাল দুপুরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেজে জামাল ভূঁইয়া ধন্যবাদ জানান টুর্নামেন্ট জুড়ে দেশকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া ভক্ত-সমর্থকদের। একইসঙ্গে পরবর্তীতে আরো কঠোর অনুশীলন করে ভালো ফলাফল আনারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। জামাল তার ফেসবুক পেজে লিখেন, ‘গতকালকের (শনিবারের) পরাজয়ে আমরা সবাই অনেক বেশি হতাশ। আমরা সবাই আশা করছিলাম সেমিফাইনাল খেলবো। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা সবকিছুর জন্যই ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা করে রেখেছেন। আমি আরো কঠোর অনুশীলন করবো এবং দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করবো। আমাদের সবসময় সমর্থন দিয়ে যাওয়া শুভাকাক্ষীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। কষ্টটা ক্ষণস্থায়ী, গর্বটা চিরদিনের।’ এমন সব কথা লিখে হয়তো জামাল নিজের ক্ষতে সামান্য সান্ত¦নার প্রলেপ দিচ্ছেন, কিন্তু লাল-সবুজের কোটি সমর্থকরা কোথায় খুঁজে পাবেন দগদগে ক্ষত শুকানোর ওষুধ? এশিয়ান গেমস ফুটবলে অনুর্ধ্ব-২৩ দল ইতিহাস গড়ার পর দেশের মৃতপ্রায় ফুটবলকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন লাল-সবুজের সমর্থকরা। এ নিমিষেই তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিলেন সেই গোলরক্ষক সোহেল যার হতাশাজনক পারফরমেন্স এর আগেও বহুবার দেখেছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। প্রশ্ন উঠেছে তাকে জাতীয় দলের সেরা একাদশে সুযোগ দেয়ার কারণে। যারা দেশের ফুটবলকে নিয়ে ভাবেন, তাদের প্রায় সবারই এক মত, সোহেলকে দলে ভিড়িয়ে স্বজন-প্রীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ঢাকা আবাহনীর যে খেলোয়াড় এশিয়াডের আগে গড়া ২৭ জনের বাংলাদেশ দলেই ছিলেন না, তাকে কেন জাতীয় দলে সুযোগ দেয়া হলো? সাফের আগে গত ২৯ আগষ্ট শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে যার ভুলে বাংলাদেশ ১-০ গোলে হেরেছে, সেই সোহেল কেন জাতীয় দলের সেরা একাদশে। আশরাফুল ইসলাম রানার মতো পরীক্ষিত গোলরক্ষক যে দলের রয়েছে সেই দলের ম্যানেজমেন্ট কিভাবে সোহেলের মতো কান্ড-জ্ঞানহীন খেলোয়াড়কে সাফের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে খেলায়।
এমন সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ফুটবলপ্রেমীরা জেনেছেন- সোহেল আবাহনীর ফুটবলার। যে ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর ইনচার্জ কাজী নাবিল আহমেদ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি ও জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান। ওই ক্লাবের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু বাফুফে’র সদস্য, সঙ্গে জাতীয় দলের ম্যানেজারও। তাই আবাহনীকে সন্তুষ্ট রাখতেই সোহেলকে জাতীয় দলের সেরা একাদশে খেলানো হয়েছে। ফুটবলপ্রেমীদের এমন অভিযোগ কিভাবে খন্ডাবে বাফুফে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।