পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, বাড়ছে সচল হিসাবের সংখ্যাও। তবে গত জুলাইয়ে কমেছে মোট লেনদেন ও দৈনিক গড় লেনদেন। চলতি বছরের জুনে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল এক হাজার ১০৭ কোটি টাকা। জুলাইয়ে এসে দৈনিক গড় লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৯৯৩ কোটি টাকা। এছাড়া আগের মাসের তুলনায় মোট লেনদেন কমেছে সাত দশমিক তিন শতাংশ। মূলত মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে অবৈধ লেনদেন বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ি আরোপের ফলে লেনদেন কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত জুলাই মাসে সক্রিয় হিসাব বেড়েছে ১২ দশমিক চার শতাংশ, রেজিস্টার্ড গ্রাহক বেড়েছে তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ এবং এজেন্ট বেড়েছে এক দশমিক তিন শতাংশ। তবে কমেছে লেনদেন। জুনে মোট লেনদেন ছিল ৩৩ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এছাড়া জুলাইয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেতন প্রদান কমেছে ২৫ দশমিক তিন শতাংশ, ইউটিলিটি বিল প্রদান কমেছে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ, মার্চেন্ট পেমেন্ট কমেছে ৩১ দশমিক নয় শতাংশ ও সরকারি পেমেন্ট কমেছে ৩১ দশমিক ছয় শতাংশ।
তথ্যমতে, মোবাইল ব্যাংকিং চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬ কোটি ৪০ লাখ গ্রাহক নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সক্রিয় বা সচল হিসাব রয়েছে ৩ কোটি ৫ লাখ। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে অবৈধ হুন্ডিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে সক্রিয় হিসাব কমছে। তবে বর্তমানে আবার বাড়তে শুরু করেছে সক্রিয় হিসাব, যদিও আবার কমছে লেনদেন। কোনো হিসাব থেকে টানা তিন মাস লেনদেন না হলে তা নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়।
জানা গেছে, ২০১১ সালের মার্চে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথমবারের মতো দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে। এ পর্যন্ত ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টি ব্যাংককে এই সেবা চালুর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ২০টি ব্যাংক সেবাটি চালু করতে পারলেও পরবর্তী সময় দুটি ব্যাংক সেবাটি বন্ধ করে দেয়। ফলে বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা ব্যাংকের সংখ্যা ১৮টিতে নেমে আসে। ২০১৩ সালের নভেম্বরে প্রথম এই সেবার নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা এক কোটি ছাড়ায়।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, বর্তমানে একজন মোবাইল গ্রাহক তার ব্যক্তিগত হিসাবে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকার স্থিতি রাখতে পারবেন। এর আগে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (এমএফএস) গ্রাহকরা তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল হিসাবে তিন লাখ টাকার বেশি স্থিতি রাখতে পারত। এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) অপব্যবহার রোধে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, একজন ব্যক্তি যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় একটিমাত্র হিসাব রাখতে পারবেন। যাদের একাধিক মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব চলমান রয়েছে, তা দ্রুত বন্ধ করে দিতে হবে। কোনো মোবাইল হিসাবে পাঁচ হাজার টাকা বা তার তদূর্ধ্ব নগদ অর্থ জমা বা উত্তোলনে গ্রাহককে পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ডের ফটোকপি প্রদর্শন করতে হবে, যা এজেন্ট তার রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন। এমনকি রেজিস্টারে গ্রাহকের স্বাক্ষর বা টিপসই সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো এজেন্ট এই ধরনের কার্যাদি যথাযথভাবে সম্পন্ন না করলে বা গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে এজেন্টশিপ বাতিল করারও নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ওই নির্দেশনায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় দৈনিক ও মাসিক লেনদেনের সীমা আরও কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়।
ওই নির্দেশনা অনুসারে, একজন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক একবারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। আগে এই হার ছিল ২৫ হাজার টাকা। এখন থেকে গ্রাহক দৈনিক দুবার এবং মাসে ১০ বার এই সেবা নিতে পারবেন, যা আগে ছিল দৈনিক তিনবার এবং মাসে ১০ বার। একইসঙ্গে দৈনিক জমার সীমাও পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে এখন থেকে দিনে সর্বোচ্চ দুই বারে ১৫ হাজার টাকা করে পাঠানো যাবে, যা মাসে সর্বমোট ২০ বারে এক লাখ টাকার বেশি হতে পারবে না। আগে দিনে পাঁচ বারে ২৫ হাজার টাকা এবং মাসে সর্বোচ্চ ২০ বারে দেড় লাখ টাকা করে জমা করা যেত। এছাড়া একটি মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে টাকা জমার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই হিসাব থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকার বেশি নগদ উত্তোলন করা যাবে না। নতুন সার্কুলারে এসব নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।