দীর্ঘকালের কৌশলগত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। মঙ্গলবার গ্লোবাল টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে চীনের সমকালীন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউটের ওয়াং সি বলেন, সন্ত্রাস দমন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের অনুরোধেই পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
ওয়াং -এর মতে, ভারত সন্ত্রাস দমন বিষয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করা অব্যাহত রাখবে। আসলে পাকিস্তানের জন্য নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু সাহায্য বন্ধ করে এবং ৩ জন পাকিস্তানিকে লশকর ই-তৈয়বার সাথে সম্পর্কিত করে নজরদারি তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের এ অনুরোধেই সাড়া দিয়েছে।
কিন্তু ভারত মনে করে যে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের গোলযোগপূর্ণ পরিস্থিতি শান্ত করতে এসব ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র আফগান সমস্যার ব্যাপারে পাকিস্তানের উপর নির্ভরতা পরিত্যাগ করবে না। এ অবস্থায় সে ভারতের অনুরোধ কতটা রক্ষা করতে পারবে?
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা প্রধানগণ বৃহস্পতিবার তাদের মধ্যে প্রথম বৈঠক করেছেন। গত বছর আগস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার ফোনালাপে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিভিন্ন কারণে এপ্রিল ও জুলাই মাসে দুবার বাতিল হওয়ার পর এবারই প্রথম এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হল।
ইন্দো-প্যাসিফিক পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিয়ে সামনে আনার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সন্তুষ্ট করে আসছে এ আশায় যে চীনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জের সময় নয়াদিল্লী তার গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি হবে। সর্বশেষ জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল রিপোর্ট ও জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল রিপোর্টে হোয়াইট হাউস ভারতকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও প্রতিরক্ষা অংশীদার হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
ভারত চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের মাধ্যমে তার কাক্সিক্ষত প্রভাব বলয়ে ক্ষমতার প্রদর্শনীতে শংকিত। ভারত ঋণ ফাঁদ ক‚টনীতির মাধ্যমে শ্রীলংকা ও মালদ্বীপে তার প্রভাব জোরদার করার জন্য চীনকে অভিযুক্ত করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত চীনের আঞ্চলিক প্রভাবের বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য রক্ষার জন্য তাদের স্বার্থের সম্মিলন ঘটাচ্ছে।
তবে ভারত কিছু সংবেদনশীল বিষয়ে, বিশেষ করে যে সব বিষয় ভারতের মূল স্বার্থকে আঘাত করে না, চীনকে উস্কানি প্রদান করতে চায় না। ২০১৭ সালে ভারত মালাবার নৌ মহড়ায় যোগ দিতে অস্বীকার করে। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ চীন সাগরে যৌথ নৌ টহলে অংশ গ্রহণের মার্কিন প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করে ভারত।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীন অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে চীনের প্রভাব খর্ব করতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য বিষয়ক প্রধান উপ-সহকারী মন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বাইরে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে নয়াদিল্ল্রী সাথে কাজ করতে আগ্রহী।