মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নাগরিকত্ব বিতর্ক ২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে বারবার শিরোনামে এসেছে। দেশে দেশে বৈরী রাষ্ট্রে নাগরিকত্ব দাবি প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। বিশ্বব্যাপী অভিবাসী বিষয়ক রাজনৈতিক পরিবেশের অবনতি ঘটায় সরকারগুলো নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত আইন কঠোর করেছে। আবার নাগরিকত্ব যাচাই-প্রক্রিয়া জটিল করে সেটি আবার নাগরিকত্ব পাওয়ার দাবিদারদের হাতেই প্রমাণ করার দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছে। এতে করে ব্যক্তিদের জীবন ব্যাপকভাবে আমলাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। বিষয়টি সবচেয়ে প্রকটভাবে দেখা যায় ভারতে। কয়েক বছরের বিতর্কের পর গত জুলাই মাসে আসাম রাজ্যের জাতীয় নাগরিকত্ব নিবন্ধন প্রকাশ করা হয়। ১৯৫১ সালের পর এই প্রথম নাগরিকত্ব তালিকা প্রকাশ করা হলো। এতে ৪০ লাখ লোক নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদেরকে তাদের নাগরিক অধিকার প্রমাণ করতে বলা হয়েছে। যদি তারা না প্রমাণ করতে পারে, তবে কী হবে? ভারত থেকে বহিষ্কার করা হবে- এমন কথা এখনো প্রকাশ্যে বলা হয়নি। তবে তারা এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতে রয়েছে, তা নিশ্চিত। ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তিতে বলা হয়েছে, যে কেউ বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর ভারতে প্রবেশ করবে, সে অবৈধ বিবেচিত হবে। তারপর ২০১৬ সালে ভারতের সংবিধানে আরেকটি সংশোধনী আনা হয়। এতে নির্যাতিত সংখ্যালঘু তথা প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ও পারসিদের নাগরিকত্ব প্রদান করার কথা বলা হয়েছে। এতে বিধান রাখা হয়েছে, এসব দেশের এসব স¤প্রদায়ের কোনো সদস্য ছয় বছর ভারতে বসবাস করলেই নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে। এই বিধান কিন্তু শিয়া ও আহমদিয়ার মতো মুসলিম উপগ্রুপকে রাখা হয়নি। অথচ তারাও পাকিস্তানে নির্যাতিত হচ্ছে। প্রস্তাবিত এই আইনটি ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির কট্টর হিন্দুবাদী এজেন্ডার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে আসামে এই আইনটির বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। সেখানকার অধিবাসীদের মতে, এটি বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু অভিবাসীদের বৈধতা দিয়ে আসামের আদিবাসীদের কোণঠাসা করে ফেলবে। অভিবাসন নিয়ে কয়েক দশক ধরে আসামে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। এখন ৪০ লাখ লোককে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন থেকে বাদ দিয়ে নতুন এক জটিলতার সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদেরকে এখন তথাকথিত ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল নামে পরিচিত ১০০টি আদালতে তাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি ফয়সালা করা হবে। এর ভয়াবহ পরিণতি ঘটতে পারে। ভারতে বিশেষ করে এই অঞ্চলে নথিপত্র সংরক্ষণ করা একটি খুবই কঠিন বিষয়। ঘন ঘন সাইক্লোন ও বন্যা হানা দেয়া এই রাজ্যে নথিপত্র খুব সহজেই হারিয়ে যায়। অবশ্য সমস্যাটি কেবল আসামে নয়। কাছাকাছি ধরনের সমস্যা আছে উড়িষ্যাতেও। সেখানে ২০০৫ সালে সরকার ১,৫৫১ জনকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে শনাক্ত করে। তারা হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে ভারতে প্রবেশ করেছে বা জন্মগ্রহণ করেছে। তাদের পরিচিতিপত্র, ভোটার কার্ড বাতিল করা হয়। তবে তাদের কখনো বহিষ্কার করা হয়নি। কিন্তু তাদের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আইডি কার্ড বাতিল করার ফলে তারা ভর্তুকির রেশন পায় না। মর্যাদাপূর্ণ সামাজিক জীবনযাপনও তারা করতে পারে না। মজার ব্যাপার হলো, এসব লোকের সবাই কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এসব জটিলতায় আক্রান্ত হচ্ছে গরিব মানুষদের মধ্যেও যারা সবচেয়ে গরিব, তারাই। তাদেরই মর্যাদাহীনতা, ক্ষুব্ধ, এমনকি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।