মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নরেন্দ্র মোদির প্রধান বৈদেশিক নীতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্ননের প্রচেষ্টা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রুক্ষ আচরণ ও দিল্লীর স্বার্থ বিরোধী কিছু সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ততার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ওয়াশিংটনের মনোভাব সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ায় মোদি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। খবর নিউ ইয়র্ক টাইমস।
কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদ্রুপে ক্ষোভ আরো বৃদ্ধি পায়। বিদ্রুপের ভিডিও (https://www.youtube.com/watch?v=KUL0CP4ZNpk) নয়াদিল্লিতে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি মোদিকে নকল করেছেন। পাশাপাশি এ খবরও ছড়িয়ে পড়েছে, ট্রাম্প একান্ত আলোচনায় প্রায়ই তার ভারতীয় পক্ষকে নিয়ে তামাশা করে থাকেন।
সম্প্রতি তিক্ততার মাত্রায় যোগ হয়েছে, রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের এস-৪০০ নামের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার সিধান্ত। ইরান থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কেনা বন্ধ করার জন্য ভারতকে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দিচ্ছে, ভারত রাশিয়ার থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনা অব্যাহত রাখলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
সমস্যা এতটাই গুরুতর যে, আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ‘টু প্লাস টু’ শীর্ষক দ্বিপাক্ষিক সম্মেলনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচিত নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা ‘কমিউনিকেশন কম্প্যাটিবিলিটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট’ (কমকাসা) স্বাক্ষরিত হওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছেন। ‘কমকাসা’ এত দিন ধরে স্বাক্ষরিত না হওয়ার পেছনে সংশ্লিষ্টদের এই আশঙ্কা কার্যকর ছিল যে মার্কিন এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আদান-প্রদান করা গোপন বার্তা যুক্তরাষ্ট্র দেখে ফেলতে পারবে।
তিক্ততার বিষয়ে দ্য হিন্দু পত্রিকার পররাষ্ট্র বিষয়ক সম্পাদক সুহাসিনী হায়দার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “স্বাভাবিকভাবেই ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে মোদি এখন নিশ্চিত নন। ভারত উপলব্ধি করছে, আগের প্রেসিডেন্টরা ভারতের সাথে যেমন বদান্যতা দেখিয়েছেন, ট্রাম্প তেমন দেখাবেন না।”
আগামীকাল বুধবার ‘টু প্লাস টু সম্মেলনে’ যোগ দিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিসকে ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও নয়াদিল্লি সফরে আসবেন। ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তাদের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, ট্রাম্পের হঠকারী আচরণ সেগুলোর একটি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা টাইমসকে এ কথা বলেন।
সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এ সম্মেলনে সবচেয়ে বড় বিতর্কের বিষয় হয়ে দেখা দেবে সামরিক খাতে রাশিয়ার সঙ্গে থাকা ভারতের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার বিষয়টি। ভারত ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তারা দেশটির কাছ থেকে এস-৪০০ নামের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনবে।
কিন্তু বিষয়টি ট্রাম্প যে ভালোভাবে নেবেন না সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ব্যাপারে তার আচরণেই সেটি স্পষ্ট। ভারত মস্কো থেকে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার ঘোষণা দেয়ার পরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও এটি কেনার কথা ভাবছেন যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করতে পারে।
সম্মেলনে কমকাসা চুক্তি ছাড়াও আরও কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এদের একটি হলো যৌথভাবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতের বিষয়ে। এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিফেন্স ইনোভেশন ইউনিট এক্সপেরিমেন্টাল’ (ডিআইইউএক্স) এবং ভারতের ‘ইনোভেশন ফর ডিফেন্স এক্সিলেন্স’ (আইডিএক্স) এক সঙ্গে কাজ করতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডিফেন্স টেকনোলজি অ্যান্ড ট্রেড ইনিশিয়েটিভের’ আওতায় সামরিক সরঞ্জামের যৌথ গবেষণা ও যৌথ উৎপাদনের দিকে যেতে চায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।