মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
শেষ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কেন্দ্র করে ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। আজ মঙ্গলবার সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) প্রার্থী ড. আরিফ আলভি। আগে থেকেই পিটিআইকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে একটি ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা চলছিল। তারা চাইছিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সব বিরোধী দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তাদের একক প্রার্থী থাকবে। কিন্তু মধ্যখানে তাতে ফাটল ধরে। ফলে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) তাদের প্রার্থী নির্ধারণ করে এজাজ আহসানকে। ওদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) ভর করে জমিয়তে উলেমায়ে ইসলাম (জেইউআই-এফ)-এর ওপর।
এ দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী করা হয় এর প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানকে। তাকে সমর্থন করে পিএমএল-এন। তার ওপর কোনো আস্থা রাখতে পারেনি পিপিপি। তাই তারা আলাদা প্রার্থী দেয়। কিন্তু বিরোধী দল এভাবে বিভক্ত হয়ে প্রার্থী দেয়ায় ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যায়। তারা হেসে খেলে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনতে পারবেন। এ বিষয়টি শেষ মুহূর্তে মাথায় এসেছে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। ফলে তারা আবার একক প্রার্থী নির্ধারণের জন্য কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছে।
গত রোববার পিএমএল-এন নেতারা পিপিপির নেতৃত্বের কাছে আহ্বান জানায় তাদের প্রার্থী এজাজ আহসানকে প্রত্যাহার করে নিয়ে বিরোধী দলীয় প্রার্থী হিসেবে মাওলানা ফজলুর রহমানকে সমর্থন দিতে। সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সোমবার ইসলামাবাদে জবাবদিহিতা বিষয়ক আদালতে হাজির করার কথা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে। এ সময় তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবেন পিপিপির কিছু নেতা।
ওদিকে রোববারই মডেল টাউনে অবস্থিত পিএমএল-এনের বর্তমান সভাপতি শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন মাওলানা ফজলুর রহমান। পিপিপি-র নেতৃবৃন্দকে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য অনুরোধ করতে তিনি আহ্বান জানান শাহবাজ শরীফকে। পরে মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, পিপিপির প্রার্থী এজাজ আহমেদকে প্রত্যাহার করে না নেয়ার অর্থ হলো পিটিআইয়ের প্রার্থী ড. আরিফ আলভিকে পথ ছেড়ে দেয়া, যেমনটা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে করেছিল পিপিপি। বিষয়টি পিপিপিও ভাল করে জানে। তারা জানে যদি বিরোধী দল থেকে দু’জন প্রার্থী থাকে তাহলে তাতে সুবিধা পাবে পিটিআই।
পিপিপির একজন নেতা বলেছেন, আমাদেরকে পরিপক্বতা প্রদর্শন করতে হবে। আসিফ আলী জারদারি আশাবাদী যে, দিনশেষে বিরোধী দলগুলোর একক প্রার্থী হবেন এজাজ আহসান। তিনি আরো জানান, এখনও পিএমএল-এন ও পিপিপি নেতারা এক হয়ে একজন যৌথ প্রার্থী দেয়ার সুযোগ আছে। তার কথায়, এ দুটি দল এখনও সমঝোতায় পৌঁছার আশা ছাড়েনি। ওদিকে মাওলানা ফজলুর রহমানের বিষয়ে পিপিপি যে একমত নয় তাতে কিছুটা হতাশ পিএমএল-এন। নওয়াজ শরীফ ও শাহবাজ শরীফ মনে করেন, পিপিপি নেতৃত্বের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে মাওলানা ফজলুর রহমানের। তাই আসিফ আলি জারদারি প্রেসিডেন্ট পদে তাকে সমর্থন করবেন বলে তারা বিশ্বাস করেন। কিন্তু দৃশ্যত, আসিফ আলি জারদারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার নিজস্ব রাজনৈতিক কার্ড ছাড়বেন বলেই মনে হচ্ছে। এটা হতে পারে বিরোধী দলগুলোর জন্য বিষ্ময়।
শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মাওলানা ফজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, তার ওপর আস্থা রাখায় ও পিপিপি বাদে অন্য বিরোধী দলগুলোর যৌথ প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনীত করায় তিনি তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা পিএমএল-এন ও অন্য ১০টি দল যৌথভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবো। বিরোধী দলগুলোর একক প্রার্থী নির্ধারণে পিপিপি নেতৃত্বকে রাজি করাতে এবং তাদের প্রার্থী প্রত্যাহারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আমরা।
মজার বিষয় হলো, সাংবাদিকদের সঙ্গে মাওলানা ফজলুর রহমান যখন কথা বলছিলেন তখন তার সঙ্গে ছিলেন না শাহবাজ শরীফ। এর পরিবর্তে তিনি তার ছেলে হামজা শাহবাজ ও পিএমএল-এন এর খাজা সাদ রফিককে পাঠিয়ে দেন। এ সময় মাওলানা ফজলুর রহমানের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, তিনি কেন পিপিপি প্রার্থীর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন না। জবাবে মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, “এটা আমাদের জন্য খুব জটিল বিষয়। আমাদের সঙ্গে আছে পিএমএল-এন, মুত্তাহিদা মজলিশে আমলের ৫টি দল ও অন্য ৫টি দল। সে হিসেবে পিপিপির পক্ষে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করাটা খুব সহজ।”
প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনে পিপিপি তার অবস্থানে অনড় ছিল। এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, এর ফলে পিটিআই প্রার্থীকে সুবিধা দিয়েছে পিপিপি। পিপিপির রাজনীতির জন্য এটা মোটেও ভাল নয়। আমি পিপিপি নেতৃত্বকে বলেছি, আমাকে একক প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে। কারণ, এর মধ্য দিয়েই বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকবে। হামজা শাহবাজ বলেন, বিরোধী দলগুলোর যৌথ প্রার্থী হলেন ফজলুর রহমান। এ জন্য পিপিপি ও অন্য দলগুলোকে আমাদের কাতারে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। সাদ রফিক বলেন, একজন একক প্রার্থীর বিষয়ে যদি বিরোধী দলগুলো বিভক্ত থাকে তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবেন আসিফ আলি জারদারি ও পিপিপি। - ডন অনলাইন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।