Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভিবাসী-সংকটের প্রেক্ষিতে শিনজেন চুক্তি অক্ষুন্ন রাখার উপর গুরুত্বারোপ

আমস্টারডামে ইইউ স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীদের বৈঠক শুরু

প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : গত সোমবার নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামে অভিবাসী সংকট এবং পাসপোর্ট মুক্ত জোন শিনজেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য ইউরোপীয় মন্ত্রীরা বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে ইউরোপীয় দেশগুলোর স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রীরা অংশ নেন। আলোচনায় শিনজেন চুক্তি নিরাপদ রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়। উল্লেখ্য, অভিবাসী সংকটকে কেন্দ্র করে ইউরোপের এই পাসপোর্ট মুক্ত ভ্রমণ সুবিধার চুক্তি হুমকির মুখে পড়েছে।
অন্যদিকে ইউরোপের দিকে ধাই করা অভিবাসন-প্রত্যাশীদের ঢলের মুখে বেশ চাপে আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল। অভিবাসন-প্রত্যাশীদের এই ঢল থামাতে এবার ঐকমত্যে পৌঁছেছে জার্মানি ও তুরস্ক। গত শুক্রবার বার্লিনে আয়োজিত এক বৈঠকে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলু ও অ্যাঙ্গেলা মারকেল ইউরোপের অভিবাসন-সংকট মোকাবিলায় একসঙ্গে জোরদারভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। শুধু অভিবাসন-প্রত্যাশীদের ধেয়ে আসা ঢল থামানোই নয়, বরং তুরস্কে শরণার্থী শিবিরের অবস্থার উন্নয়ন ও সিরিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করার বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা।
বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী দাভুতোগলু বলেন, শরণার্থী-সংকট জার্মানির কোনো সংকট নয়, এটা তুরস্ক বা ইউরোপেরও সমস্যা নয়। এই সংকটের মূলে সিরিয়া। আমরা যদি পরস্পরের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই, তাহলে এই সংকটকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। যার যার সমস্যা তাদের দিকেই যদি আবার সমাধান করার চাপ দেয়া হয়, তাহলে সমাধান অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
শুধু গত বছরই আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার প্রায় ১১ লাখ অভিবাসন-প্রত্যাশী মানুষ তুরস্ক হয়ে জার্মানিতে প্রবেশ করেছে। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে গত পাঁচ বছরে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এ কারণে অনেকেই উন্নত জীবনের আশায় অভিবাসন-প্রত্যাশী হিসেবে তুরস্ক দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করছে।
অ্যাঙ্গেলা মারকেল বলেন, অবৈধ অভিবাসী প্রশ্নে আমি একমত হয়েছি। এই সংকট সমাধানের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই অভিবাসী-সংকট নিরসনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে আসছে জার্মানি ও তুরস্ক। এই দুই দেশের মন্ত্রিসভায় এ নিয়ে বেশ কঠোর আলোচনাও চলছে। তুরস্ক থেকে হাজার হাজার অভিবাসন-প্রত্যাশী ইউরোপ অভিমুখে ভয়ংকরভাবে রাবারের নৌকায় চেপে সমুদ্র পাড়ি দেয়া ঠেকাতে তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এর আগে অ্যাঙ্গেলা মারকেলের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, গত সপ্তাহে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তাতে নিহত ১০ জনই জার্মান পর্যটক। তুর্কি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্যের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। গত বৃহস্পতিবার জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডার লিয়েন তুরস্ক সফরকালে বলেন, সরকারের বিশেষজ্ঞ আলোচনায় শরণার্থীদের এরকম আগমন ঠেকানোর বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।
এদিকে, তুরস্কের তত্ত্বাবধানে সিরিয়ার ২২ লাখ শরণার্থীকে সাহায্যের বিষয়ে ইইউর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো কী পরিমাণ অর্থ সহায়তা দেবে, তা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। এ ব্যাপারে ইইউ এখনো পরিষ্কারভাবে কিছু বলেনি। গত বৃহস্পতিবার দাভোস সামিট অব বিজনেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল এলিটসে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলু বলেন, আমরা অর্থ চাইনি, এ নিয়ে আলোচনাও করিনি...এটা আমাদের কাছে একটা মানবিক দায়িত্ব। এ কারণেই আমাদের কাছে অর্থনৈতিক সহায়তা বড় কোনো সমস্যা নয়।
বার্লিন আলোচনায় দাভুতোগলু বলেন, আমরা সংহতি ও ঐক্যের ব্যাপারে আহ্বান জানিয়েছি। সবাইকে এ বিষয়ে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা আমাদের সহকর্মী মেরকেলের সঙ্গে আলোচনা করব। আশা করি, এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপটাই হবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিবাসী-সংকটের প্রেক্ষিতে শিনজেন চুক্তি অক্ষুন্ন রাখার উপর গুরুত্বারোপ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ