নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে বুধবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। যে হার ছিল অপ্রত্যাশিত। জাতীয় দলের নতুন ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে দায়িত্ব গ্রহণের পর জাকার্তা-পালেমবাং এশিয়ান গেমসে শক্তিশালী কাতারের বিপক্ষে জিতেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-২৩ দল। অথচ সিনিয়র দল রয়ে গেছে হারের বৃত্তে। তারা শ্রীলঙ্কার মতো দলের কাছে হেরে আসন্ন সুজুকি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এশিয়াডে যেখানে বাংলাদেশ অলিম্পিক দল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৯৬ ধাপ এগিয়ে থাকা কাতারকে হারিয়েছে, সেখানে জাতীয় দল প্রীতি ম্যাচে ৬ ধাপ পিছিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠেই হেরে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই এ হারে হতাশ বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। তবে তার হতাশাটা বেশি বাংলাদেশ দলের স্ট্রাইকারদের নিয়ে। দলের স্ট্রাইকিং জোন নিয়ে তিনি চিন্তিত। তবে ফুটবলবোদ্ধাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, কোচের ২৭ জনের দলে ছিলেন না- এমন তিন ফুটবলারকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কেন খেলানো হলো?
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে বিশ্বকাপ খ্যাত সুজুকি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ দরজায় কড়া নাড়ছে। আগামী মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উদ্বোধন হবে এ টুর্নামেন্টের ১২তম আসরের। টুর্নামেন্ট শেষ হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। এতে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ সাফের সাতটি সদস্য দেশ অংশ নেবে। দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ এই ফুটবল আসরে নিজেদের সেরা পারফরেমেন্স দেখাতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ। যে লক্ষ্যে তারা বেশ ক’মাস ধরে দেশ-বিদেশে কঠোর অনুশীলন করেছে। সাফে মাঠে নামার আগে নিজেদের প্রস্তুতি ঝালাই করে নিতে কোচ জেমি ডে’র শিষ্যরা দু’দিন আগে ফিফা প্রীতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখী হয়। দর্শকে পরিপূর্ণ নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে মাঝমাঠের খেলা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। আক্রমণও হয়েছে প্রচুর। কিন্তু লঙ্কানদের ডি-বক্সের আশপাশে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলেছেন স্বাগতিক দলের স্ট্রাইকাররা। ফলে স্টেডিয়ামপূর্ণ দর্শক সমর্থনের পরও ১-০ ব্যবধানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় লাল-সবুজদের। দলের এই ফলাফলে ভীষণ হতাশ বাংলাদেশ কোচ। বল পজিশন বেশি থাকার পরও কয়েকজন খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সে ক্ষুব্ধও তিনি। তাই তো ম্যাচ শেষে জেমি ডে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা ভালো একটি ম্যাচ খেলেছে। তবে আমরা বল পজিশনে এগিয়ে ছিলাম। দলের দুর্ভাগ্য। আমাদের কয়েকজন খেলোয়াড় এ ম্যাচে সেরাটা দিতে পারেনি।’ এশিয়াডে খেলা কয়েকজন তরুণ ফুটবলার ক্লান্ত ছিল বলে মনে করছেন জেমি ডে। তবে স¤প্রতি কোরিয়ায় ৩টি, কাতারে ১টি ও জাকার্তা-পালেমবাং এশিয়ান গেমসে ৪টি ম্যাচ খেলার পর আসন্ন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে উপলক্ষ্য করে সাজানো হয়েছে যে দলটিকে, সেই দলের এমন পারফরমেন্সে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা- এটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন ব্রিটিশ এই কোচ।
তাই সব দেখেশুনে সাফের আগেই একটি শক্তিশালী দল গোছানোর পরিকল্পনা তার।
বিশেষ করে দলের স্ট্রাইকিং জোন নিয়ে ভাবার দরকার আছে বলেই মনে করছেন জেমি ডে। তার কথায়,‘আমাদের দলের কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড় এশিয়ান গেমসে খেলে আসায় ক্লান্ত ছিল। সাফ টুর্নামেন্টের জন্য আমি আরো শক্তিশালী দল গড়ব। আমাদের কয়েকটি জায়গায় উন্নতি করতে হবে। বিশেষ করে স্ট্রাইকিং জোনে।’
তারপরও প্রশ্ন থেকেই যায়। যেখানে এশিয়ান গেমস ফুটবলের শেষ ষোল’তে খেলে ইতিহাস সেরা পারফরমেন্স করে সদ্য ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-২৩ দল। সেখানে অভিজ্ঞদের নিয়ে গড়া জাতীয় দল কেন গোল পেল না শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে? এ দায় পুরোটাই স্ট্রাইকারদের। শ্রীলঙ্কার কাছে জাতীয় দল হেরে যাওয়ায় ফুটবলে হঠাৎই ছন্দপতন ঘটলো! এশিয়াডে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে ওঠার পর ফুটবল নিয়ে প্রত্যাশার যে বেলুনটা ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল, তা হঠাৎই চুপসে গেল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারায়। সাফ সুজুকি কাপ শুরুর মাত্র ৬দিন আগে শ্রীলঙ্কার মতো দলের কাছে এমন হার বড় ধাক্কাই দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে পাওয়ার স্বপ্নে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটি ফিফার স্বীকৃতি পাওয়ায় এর গুরুত্বও বেড়েছিল অনেক। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া থেকে ঢাকায় ফিরে বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে ঘোষণা দিলেন, তিনি এশিয়াডে খেলা খেলোয়াড়দের বাইরে রেখেই শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দল সাজাবেন। পারফরম্যান্সে মরিচা পড়াদের ঘষামাজা করবেন নীলফামারীতে। আর এটা করতে গিয়ে কোচ এমন ৩ ফুটবলারকে খেলালেন যারা তার ২৭ জনের দলেই ছিলেন না।
সাফ ও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে সামনে রেখে জাতীয় দলের প্রস্তুতিতে কোন ঘাটতি রাখেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কাতারে ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্যাম্প করিয়ে ফুটবলারদের ইন্দোনেশিয়া পাঠিয়েছিল তারা। এমনকি এশিয়াড দলের বাইরে থাকা ৭ ফুটবলারকেও বাফুফে নিজ খরচে জাকার্তায় পাঠিয়েছিল প্রস্তুতির সুবিধার্থে। যাদের প্রস্তুত করতে বাফুফের এত অর্থ ব্যয়, তাদের বাইরে থাকা গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল, মিডফিল্ডার জুয়েল রানা ও স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন- হঠাৎ করে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে দলে সুযোগ পেলেন। মাঠে করলেন যাচ্ছে-তাই পারফরমেন্স। তিনজনই ঢাকা আবাহনীর খেলোয়াড়। জানা গেছে, সোহেল-জীবন পুরনো হলেও জুয়েল এক মৌসুম পর ফের ফিরছেন আবাহনীতে। এরা ২৭ জনের মধ্যে না থাকার পরও কোচ কেন তাদের খেলালেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে- আবাহনীর খেলোয়াড়দের প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতির সুবিধা দিতেই কি এমন করেছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।