পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রায় হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে আগামী সোমবার। চীনের দুই পুঁজিবাজার সাংহাই ও শেনজেন ডিএসই’র শেয়ার বিক্রির ৯৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা ওই দিন ডিএসইকে দিবে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ জন্য আগামী ২ সেপ্টেম্বর রাতে চীনা স্টক এক্সচেঞ্জের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌছবেন বলে জানিয়েছে।
ডিএসই’র ইতিহাসে এটি একটি নতুন মাইলফলক বলছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা। দেশের অর্থনীতিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেছেন তারা। বিশ্লেষকরা বলেন, এর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার আন্তর্জাতিক মর্যাদায় উন্নীত হলো। এটি কারিগরি সহায়তা ও পুঁজিবাজারে পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। চীনের প্রথম সারির এই দুই স্টক এক্সচেঞ্জের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের স্টক এক্সচেঞ্জকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব হবে।
চীনা কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে নন-রেসিডেন্ট ইনভেস্টরস অ্যাকাউন্টের (নিটা) মাধ্যমে এই অর্থ প্রদান করবে। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে চীনের সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জকে নিটা অ্যাকাউন্ট (বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ টাকায় রূপান্তরের বিশেষ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট) খোলার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। টাকা পাওয়ার পরই ব্রোকারদের মধ্যে তা বণ্টন করা হবে। ডিএসই সূত্র এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, চুক্তি অনুযায়ী ডিএসইর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫ শেয়ার কিনতে ৯৪৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা মূল্য দেবে সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ। প্রতিটি শেয়ার তারা ২১ টাকা দরে কিনছে।
বর্তমানে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার ২৩৭ ব্রোকার। প্রত্যেক ব্রোকার কৌশলগত শেয়ার বিক্রি থেকে পাবেন প্রায় চার কোটি টাকা। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার ২১ টাকা দরে বিক্রি করায় মূলধনী মুনাফার ওপর কর দিতে হবে। তবে ব্রোকাররা অন্তত তিন বছরের জন্য শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের শর্তে এ লেনদেনে কর ছাড় চেয়েছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও এ বিষয়ে সুপারিশ করেছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিলেও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী, টাকা হস্তান্তরের আগেই কর ছাড়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আসবে।
চীনের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ডিএসই’র কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে ২৫ শতাংশ শেয়ারের বিনিময়ে এই অর্থ দিচ্ছে চীনা কনসোর্টিয়াম বলে জানিয়েছেন ডিএসই’র পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন। তিনি জানান, চীনা কনসোটিয়াম অর্থ জমা দেওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী অ্যাকাউন্টে থাকবে, শেয়ারহোল্ডাররা পাবেন বলে ইতোমধ্যে ডিএসই’র বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে টাকা জমা হওয়ার পর সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাথে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। পরের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অবহিত করা হবে। এরপর আবার ডিএসইতে বোর্ড সভা হবে বলে উল্লেখ করেন মিনহাজ মান্নান।
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোঃ রুহুল আমীন আকন্দ চীনের এই টাকার অধিকাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। যা দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। বাজারে আস্থা ও তারল্য সঙ্কট দূর করবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রতিষ্ঠান দুটি চীনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুঁজিবাজার। বাজার মূলধনের তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ দশে রয়েছে। এ রকম প্রতিষ্ঠান ডিএসই’র মালিকানায় আসায় দেশের পুঁজিবাজার আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। এখন বিদেশীরা বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবেন। একই সঙ্গে কারিগরিভাবেও শক্তিশালী হবে বলে উল্লেখ করেন মির্জা আজিজুল ইসলাম।
ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচাল কেএএম মাজেদুর রহমান সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার হওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৪ মে রাজধানীর একটি হোটেলে ডিএসই’র স্ট্রাটেজিক পার্টনার ( কৌশলগত বিনিয়োগকারী) হিসেবে চীনা স্টক এক্সচেঞ্জ চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর আগে ভারতের প্রতিষ্ঠানকে নেয়ার চাপ ও নানা তালবাহানার পর গত ৩ মে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামের আবেদন অনুমোদন দেয় বিএসইসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।