রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নৃশংসতার ইস্যুতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির পদত্যাগ করা উচিত। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিদায়ী হাই কমিশনার জায়েদ রাদ আল হোসেন বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী সুচি ওই নৃশংসতার জন্য যে অজুহাত দাঁড় করেছেন তা গভীর দুঃখজনক। সোমবার জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে। ওই রিপোর্টে মিয়ানমারের সামরিক নেতাদেরকে গণহত্যার দায়ে বিচার করার সুপারিশ করা হয়েছে। গত বছর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা শুরুর পর জায়েদ রাদ আল হোসেন একে জাতি নিধন বলে উল্লেখ করেছিলেন।
তবে মিয়ানমার বার বার এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে মানবাধিকার লঙ্ঘন কোনোভাবেই তারা বরদাস্ত করে না। আর সেনাবাহিনী তো তাদেরকে বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা নিজেদের মতো করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তবে সোমবার জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে রাখাইনে ওই সহিংসতা বন্ধ করতে ব্যর্থতার জন্য অং সান সুচিকে দায়ী করা হয়েছে। বিবিসির ইমোগেন ফকসকে দেয়া সাক্ষাতকারে জায়েদ রাদ আল হোসেন বলেছেন, সুচি এমন একটি অবস্থানে আছেন, সে অবস্থানে থেকে কিছু করা সম্ভব। তার পদত্যাগ করা উচিত। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র তার হওয়া দরকার নেই কোনো। তিনি হয়তো বলতে পারতেন, দেখুন আপনারা জানেন, আমি দেশের নামমাত্র নেত্রী হতে প্রস্তুত। তবে এই শর্তের অধীনে নয়।
অং সান সুচিকে ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। সেই পুরস্কার কেড়ে নেয়ার জন্য বিশ্ব থেকে জোরালো দাবি ওঠে। তার প্রেক্ষিতে নোবেল কমিটি বুধবার বলেছে, সুচির ওই পদক কেড়ে নেয়া হবে না।
অং সান সুচির বয়স এখন ৭৩ বছর। দেশের সেনাবাহিনীর ওপর তার মোটেও নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে সেনাদের নৃশংসতার জন্য তাকেই আন্তর্জাতিক নিন্দা ও চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে। গত বছর আগস্টে সেনাবাহিনীর চালানো নৃশংসতার ফলে রাখাইনে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। কমপক্ষে ৭ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে দেশ ছেড়েছেন। তারা আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।