পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হালনাগাদ তথ্য নেই
বিদেশে থেকে মুঠোফোনে সহযোগীদের মাধ্যমে চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করছে নিজ নিজ এলাকায়
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে ওয়ান্টেড তালিকায় ৫৯ বাংলাদেশির নাম থাকলেও হালনাগাদ কোন তথ্য নেই এসব ব্যক্তিদের ব্যাপারে। ওই তালিকাভুক্তদের শনাক্ত করে দেশে ফেরত আনতে নেই কোন উদ্যোগ। অথচ এদের কেউ আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন, কেউ গডফাদার বা পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং কেউ বা মানবতাবিরোধী অপরাধী। আবার কেউ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলারও আসামি। এ তালিকায় রয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনিরাও। বছরের পর বছর তারা গা-ঢাকা দিয়ে আছেন বিভিন্ন দেশে। অথচ তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি কার্যকর করতেই বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। পুলিশসহ একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ইন্টারপোল তাদের ওয়েবসাইটে এসব অপরাধীর নাম ও ছবি প্রকাশ করেছে। এসব ছবি অনেক পুরনো। ইন্টারপোল প্রথমত তালিকায় থাকা এসব ব্যক্তির বর্তমান অবস্থান জানার চেষ্টা করে। এরপর তাদেরকে স্থানীয় আইনে গ্রেফতার করে আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরত পাঠায়। ইন্টারপোলের সংশ্লিষ্ট শাখার সাথে বাংলাদেশ পুলিশের যোগাযোগ রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
অপরাধ বিশ্লেষকদের মতে, পুলিশ শীর্ষ সন্ত্রাসী বা আলোচিত মামলার আসামিদের ব্যাপারে কেবল রেড অ্যালার্ট জারি এবং ইন্টারপোলে নাম-ছবি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। কে কোথায় অবস্থান করছে, কীভাবে তাদের গ্রেফতার করা যায়, তা নিয়ে পুলিশের তথা সংশ্লিষ্ট কারও তেমন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি কিংবা চাঞ্চল্যকর ঘটনার হোতারা বিদেশে পালিয়ে গিয়েই যেন গায়েবই হয়ে যাচ্ছে। কোনো মতে দেশের সীমানা পার হলেই তারা পেয়ে যাচ্ছে নিরাপদ জগৎ। মোস্ট ওয়ানটেড সন্ত্রাসী গডফাদাররা পালিয়ে যাওয়ার পর আর হদিস মেলে না।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে পলাতক চিহ্নিত অপরাধীরা এক জায়গায় বেশিদিন থাকে না। তারা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে। সবার নজর ভারতের দিকে থাকায় সন্ত্রাসীরা এখন নেপাল, ভুটান, দুবাই, থাইল্যান্ডসহ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশেও আশ্রয় নিচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থাকে বিভ্রান্ত করতে এসব সন্ত্রাসী এক দেশের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করে পার্শ্ববর্তী দেশের মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করছে। ওইসব স্থানে অবস্থান করে বাংলাদেশে নিজ নিজ এলাকায় তারা মুঠোফোনে সহযোগীদের মাধ্যমে চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। ইন্টারপোলের নোটিশ করা বাংলাদেশিরা হলেন- রফিকুল ইসলাম, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, আমিনুর রসুল, জাফর আহমেদ, আবদুল জব্বার, নবী হোসাইন, জিসান, তৌফিক আলম, মিন্টু, শাহাদাত হোসাইন, আতাউর রহমান, নাসির উদ্দিন রতন, চাঁন মিয়া, প্রশান্ত সরদার, সুলতান সাজিদ, হারুন শেখ, মনোতোষ বসাক, আমিনুর রহমান, গোলাম ফারুক অভি, রাতুল আহমেদ বাবু, হাসন আলী ওরফে সৈয়দ মো. হাছন, সৈয়দ মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে হোসেন, জাহিদ হোসেন খোকন, আবদুল জব্বার, আহমেদ কবির ওরফে সুরত আলম, রফিকুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন খান, হাসেম কিসমত, শরিফুল হক ডালিম, মোল্লা মাসুদ, মো. ইউসুফ, মো. নাঈম খান ইকরাম, মকবুল হোসাইন, সালাহউদ্দিন মিন্টু, খন্দকার আবদুর রশিদ, মঈন উদ্দিন চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, মাওলানা মো. তাজউদ্দিন মিয়া, আশরাফুজ্জামান খান, খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ চৌধুরী আতাউর রহমান, ত্রিমতি সুব্রত বাইন, আবুল কালাম আজাদ, সৈয়দ আমান উল্লাহ শফিক, নুরুল দিপু, আহমেদ মঞ্জু, চন্দন কুমার রায়, এএম রাশেদ চৌধুরী, মোসলেহ উদ্দিন খান, নাজমুল আনসার, আবদুল মাজেদ, আহমেদ শারফুল হোসাইন, কালা জাহাঙ্গীর ওরফে ফেরদৌস, খন্দকার তানভীর ইসলাম জয়, শামীম আহমেদ।
সূত্র জানায়, ইন্টারপোলের নোটিশে এসব ব্যক্তির কোনো তথ্য পেলে স্থানীয় পুলিশ বা ইন্টারপোলে জানানোর আহ্বান করা হয়েছে। তবে রেড অ্যালার্ট বা ওয়ান্টেড তালিকা ইন্টারপোলের কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা নয়। তাছাড়া আসামিকে গ্রেফতারে কোনো দেশকে চাপও দিতে পারে না ইন্টারপোল। তারা শুধু নির্দিষ্ট তথ্যগুলো সদস্য দেশগুলোকে জানায় এবং আসামি সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়। পরে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজ দেশে ফেরত আনা হয় অপরাধীদের।
সূত্র আরো জানায়, ১৯২৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ কমিশন নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৫৬ সালে নাম পরিবর্তন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন রাখা হয়। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ইন্টারপোলের সদস্য পদ গ্রহণ করে। ইন্টারপোলের বর্তমান সদস্য ১৯২টি দেশ। এটি জাতিসংঘের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা। আধুনিক কালে সন্ত্রাসীসহ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র, পুরাকীর্তি, মুদ্রা ইত্যাদি পাচার প্রতিহত করা এবং জড়িতদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে ইন্টারপোল বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।