রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুট পারমিটসহ অন্যান্য কাগজপত্র সঠিক নয় এমন অন্তত চারশতাধিক বাস-মিনিবাস ও কোচ সিরাজগঞ্জ থেকে চলাচল করছে সিরাজগঞ্জ-ঢাকাসহ বিভিন্ন দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলা রুটে। সরকারি আইন অমান্য করে অবৈধভাবে যাত্রী পরিবহন করা এই সমস্ত যানবাহনের কোনো কোনোটির বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রেশন নম্বর জালিয়াতি করার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। ফিটনেসবিহীন এই সমস্ত বাস-মিনিবাস ও কোচ চালকদের অধিকাংশের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই বা কারো কারো লাইসেন্স থাকলেও তা সঠিক সময়ে হালনাগাদ করা হয়নি। ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ বা অবৈধ চালকদের আইনের আওতায় আনতে বিআরটিএর পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করার কথা বলা হলেও তা যথেষ্ট নয়।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সিরাজগঞ্জ অফিস, জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতি, মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও সরেজমিন বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ঘুরে জানা যায়, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সিরাজগঞ্জ অফিস থেকে ৫৪০টি বাস, মিনিবাস ও কোচের রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ এর বিভিন্ন বাস কাউন্টার ও বাস স্ট্যান্ড থেকে আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লা রুটে চলাচলের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলা বাস, মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৫১৬টি যানবাহন। বিআরটিএর তথ্য মতে, সর্বশেষ ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই ৫৪০টি বাস-মিনিবাস ও কোচের মধ্যে মাত্র ১৭৬টি ফিটনেস ও রুটপারমিট হালনাগাদ সনদ গ্রহণ করেছে। বাকিগুলো শর্ত পূরণ করে পরিদর্শন সাপেক্ষে এখনো ফিটনেস বা রুট পারমিট সনদ গ্রহণ করেনি। ফিটনেস ও রুটপারমিট হালনাগাদ করা এই যানবাহনগুলোর বাইরে বেশ কিছু যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত জটিলতাও রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, সিরাজগঞ্জ এম এ মতিন বাস টার্মিনাল থেকে মহিষলুটি, গুল্টা-তাড়াশ রুটে চলাচলকারি একটি বাস রেজিস্ট্রেশন নম্বর জালিয়াতি বা পরিবর্তন করে যাত্রি পরিবহন করছে। চট্টগ্রাম মেট্রো-জ-২৪৩৪ (এনালগ) রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেও বাসটিতে লাগানো রয়েছে ঢাকা মেট্রো-জ-১৪-২৭১৭ (ডিজিটাল) নম্বর প্লেট।
এমন অভিযোগ রয়েছে আরো বেশ কিছু যানবাহনের বিরুদ্ধে। সিরাজগঞ্জ থেকে শহরের ঢাকা রোডস্থ বেশ কয়েকটি কাউন্টারের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ-ঢাকা, এম এ মতিন বাস টার্মিনাল থেকে সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ-তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ-এনায়েতপুর, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া, সিরাজগঞ্জ-রংপুর, সিরাজগঞ্জ-পাবনা, সিরাজগঞ্জ-কুষ্টিয়াসহ অভ্যান্তরিন ও দূরপাল্লা রুটে চলাচল করে অন্তত চার শতাধিক বাস-মিনিবাস ও কোচ। এর মধ্যে অধিকাংশই ফিটনেসবিহীন। আবার ফিটনেস থাকলেও নেই বৈধ লাইসেন্সধারি চালক। একদিকে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অন্যদিকে অদক্ষ চালকের সমন্বয়ে গড়া এই পরিবহন ব্যবস্থা ক্রমশ ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করার পরও প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে যাতায়াত করছে। সিরাজগঞ্জ জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য রোমান আহম্মেদ ইনকিলাবকে জানান, সিরাজগঞ্জ-ঢাকা রুটে শহরের বিভিন্ন কাউন্টার থেকে যে বাস ও কোচগুলো যাত্রী পরিবহন করছে, সেগুলোর ফিটনেসসহ সকল বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ রুটে যে মিনিবাসগুলো চলাচল করে, সেগুলোর ফিটনেসসহ অন্যান্য কাগজপত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা মালিক সমিতি থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ির মালিকদের জানিয়ে দিয়েছি, যথাযথ কাগজপত্র ছাড়া তারা যেন তাদের যানবাহন রাস্তায় না নামায়। মালিক সমিতির এই সদস্য আরো জানান, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে শুধু ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করাই নয়, যে চালকেরা বাস চালাবে তাদের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে কিনা তাও পরিক্ষা না করে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতি এই বিষয়ে নিজস্ব উদ্যেগে অভিযান চালানোসহ বিভিন্নভাবে তৎপর রয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলকে বড় করছে উল্লেখ করে সিরাজগঞ্জ জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক হাজী আনছার আলী ইনকিলাবকে জানান, আমাদের সমিতির শ্রমিক সংখ্যা প্রায় পাচ হাজার। এদের অধিকাংশের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও বৈধ লাইসেন্সে রয়েছে। যাদের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই তাদেরকে কাগজপত্র ঠিক করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া রয়েছে- যে সকল গাড়ির ফিটনেস ও অন্যান্য বৈধ কাগজপত্র রয়েছে সেগুলো চলবে এবং বৈধ লাইসেন্সধারী ড্রাইভারেরাই ওই গাড়ি চালাবেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সিরাজগঞ্জ এর সহকারী পরিচালক (এডি) ইঞ্জিনিয়ার আলতাব হোসেন জানান, ফিটনেসবিহীন বাস চলাচল বা ড্রাইভিং লাইসেন্সেবিহীন অদক্ষ চালকদের দৌরত্ম্য থামাতে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। গত জুলাই মাসে আটটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ৯৫টি মামলা ও নগদ এক লাখ পাঁচ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ও জেলার পরিবহন সেক্টরে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সেবিহীন চালকদের গাড়ি চালানো বন্ধ করতে এই অভিযান চলতি মাস থেকে জোরদার করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।