পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
প্রতি বছর কোরবানির পশুর দেহ থেকে চামড়া ছাড়ানোর আগেই তা কেনার জন্য ফড়িয়াদের ভিড় লেগে থাকে। কার আগে কে নেবে, এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় তারা। কিন্তু এবার দেশের অনেক স্থানেই ছাগল ও ভেড়ার মতো ছোট পশুর চামড়া কেনার মতো কারো খোঁজ পাননি কোরবানিদাতারা। কোথাও কোথাও এসব পশুর চামড়া বিক্রি হলেও দাম পাওয়া গেছে খুবই সামান্য। এমন পরিস্থিতির কারণে এ বছর ১০ লক্ষাধিক ছাগলের চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকার দোহার উপজেলার পুষ্পখালী গ্রামের ঠিকাদার সামসুল হক এ বছর দুটি খাসি কোরবানি দেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত চামড়া দুটি কিনতে কেউ না আসায় শেষ পর্যন্ত তিনি দুটি চামড়াই ডাস্টবিনে ফেলে দেন। একই গ্রামের হাবিবুর রহমানও খাসির চামড়া বিক্রি করতে না পারায় সন্ধ্যার দিকে দেড় কিলোমিটার দূরের একটি স্থানীয় মাদরাসায় গিয়ে দিয়ে আসেন। শুধু সামসুল হক ও হাবিবুর রহমান নন, তাদের মতো অসংখ্য কোরবানিদাতা এ বছর ছাগল ও ভেড়ার চামড়া বিক্রি করতে না পেরে ফেলে দিয়েছেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার আম্বরশাহ মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এ বছর ১০৪টি ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করেছে। ঈদের দিন বিকালে প্রতিটি চামড়া গড়ে ২৫ টাকা দরে একজন ফড়িয়ার কাছে বিক্রি করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরের দিন আরো ১০টি চামড়া সংগ্রহ করে পোস্তা এলাকায় বিক্রির জন্য নেয়া হলে প্রতিটি চামড়া ১০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়। এতে চামড়া বহনের ভাড়াই ওঠেনি বলে জানান মাদরাসার কোষাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন। বাংলাদেশ গোশত ব্যবসায়ী সমিতির হিসাবমতে, প্রতি বছর কোরবানি ঈদে ৪০-৪৫ লাখ ছাগল-ভেড়া জবাই করা হয়। বিক্রি করতে না পারায় এ বছর এসব পশুর ১০ লক্ষাধিক চামড়া ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হয়েছে। তাদের মতে, একটি খাসি-বকরির চামড়ায় লবণ ব্যবহার করতে হয়েছে ২৫ টাকার। এছাড়া শ্রমিককে দেয়া হয়েছে চামড়াপ্রতি ৫ টাকা। এ চামড়া পোস্তা এলাকায় নিয়ে বিক্রি করেছেন ৩০-৩৫ টাকা দরে। এতে অনেকের লোকসান গুনতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ গোশত ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, এ বছর খাসি-বকরি-ভেড়ার ১০ লক্ষাধিক চামড়া সংগ্রহ করা হয়নি। এসব চামড়া পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া লক্ষাধিক গরুর চামড়া সংগ্রহ করতে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। সবমিলিয়ে এ বছর আনুমানিক ১১ লাখের বেশি চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। এসব চামড়া ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে ডাস্টবিন কিংবা খালে-বিলে ফেলা দেয়া হয়েছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং স্টেশনে এ বছর ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে অসংখ্য চামড়া ফেলে দিতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি।
তবে এবার কী পরিমাণ ছাগলের চামড়া অবিক্রীত থাকবে, তা সংগ্রহ প্রক্রিয়া শেষ না হলে বলা সম্ভব নয় বলে জানান বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ। তিনি বলেন, গরু-মহিষ, খাসি-বকরি কিংবা ভেড়া যেকোনো পশুর চামড়া ট্যানারিগুলো ঈদের এক সপ্তাহ পর থেকে কেনা শুরু করে। এ ক্রয় কার্যক্রম শেষ হতে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।