বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঈদের আগের দিন দুই বোন মিলে হাতে মেহেদি দিতো, ঈদের দিন কোন জামাটা পড়বে তা নিয়ে গল্পে মেতে থাকতো দু’জন। সকাল থেকেই শুরু হতো দিয়ার হই-হুল্লোর। তার চঞ্চলতা, হাসি আর দুষ্টুমিতে মেতে থাকতো পুরো পরিবার। তবে ব্যতিক্রম হলো এবারের ঈদ। এবার দিয়ার পরিবারের ঈদ বলতে শুধু কান্না আর স্মৃতি হাতড়ে বেড়ানো।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব। একই ঘটনায় আহত হন ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর সাধারন শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন নিরাপদ সড়কের দাবিতে।
দিয়ার বাবা জাহাঙ্গির আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দিয়ার মা রোকসানা বেগম ঈদের আগের দিন থেকে কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন না। বড় বোন রোকেয়া খানম রিয়ার চারপাশেও আঁকড়ে ধরে আছে ছোটবোনের স্মৃতি। বোনের অনুপস্থিতিতে এবার ঈদে একটা সুতাও কেনেনি সে, কয়েকদিন ধরে সারাক্ষণ কান্না করছে। কারণ ওদের বয়সে খুব বেশি পার্থক্য না, বান্ধবীর মতোই ছিল দুই বোন। দুই বোনের আড্ডা খুনসুঁটিতেই কাটতো তাদের অবসর।
দিয়ার ছোটভাই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াদুল ইসলাম আরাফাতের মন খারাপ। সেও ঈদে কিছু কিনতে চায়নি, তারপরেও বাবা জাহাঙ্গির মঙ্গলবার জোর করে তাকে মার্কেটে নিয়ে কিছু কেনা-কাটা করে দিয়েছেন। গত বুধবার (২২ আগস্ট) ঈদের দিন সকালে ছেলেকে নিয়ে এলাকার মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন জাহাঙ্গির আলম। এরপরই ছুটে গেছেন নাবিস্কো এলাকার দিয়ার কবরস্থানে। তিনি বলেন, মায়ের কবরে গিয়ে জিয়ারত করে দোয়া করেছি। আমাদের এ ঈদ শুধুই কান্নার, সন্তান হারানোর কষ্ট যে কি তা শুধু যিনি হারান তিনিই বলতে পারবেন।
তিনি বলেন, ফজরের নামাজ পড়ার পরই মেয়েটার কথা মনে পড়লো। নিজের অজান্তেই চোখে পানি চলে এলো। দিন আনি দিন খাই, অস্বচ্ছল অবস্থার মধ্যেও মেয়েটাকে নিয়ে কত আনন্দে ঈদগুলো কাটিয়েছি। অথচ এ ঈদে দিয়া আমাদের মাঝে নেই, একটি দুর্ঘটনা ওকে আমাদের বুক থেকে মেয়েটাকে কেড়ে নিল।
দিয়া মারা যাওয়ার পর ড্রাইভিং ছেড়ে দিয়েছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এখন বেকার ঘরে বসা, কোনো কিছুই ভালো লাগে না। গাড়ি চালানোর কথা ভাবলেই মনে হয়, আমার মতই একজন চালক আমার মায়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে। কেউ যদি সুযোগ করে দিতো, তাহলে আমি চালকদের বাস চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করতাম। অনেককে বলেছিলাম, কিন্তু সেই সুযোগ কেউ করে দেয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।