পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
কোরবানির পশুর লবণযুক্ত চামড়া আগামী ১ সেপ্টেম্বর (শনিবার) থেকে কেনা শুরু করবে ট্যানারিগুলো। ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। ট্যানারি মালিকরা জানান, সরকার নির্ধারিত দামে আড়তদার ও ডিলারদের কাছ থেকে এ বছর এক কোটির ওপরে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষের চামড়া সংগহ করা হবে। এ কার্যক্রম চলবে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। সংশ্লিষ্টরা জানায়, সারাদেশে ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করে। পরে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেন আড়তদার ও ডিলাররা। এরপর লবণযুক্ত চামড়া কিনে নেন ট্যানারি মালিকেরা। তাদের মতে, এবার নির্বাচনী বছরের কারণে গতবারের তুলনায় ২০-৩০ লাখ পশু বেশি কোরবানি হয়েছে। সে হিসাবে কোটির ওপরে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হবে।
তবে বিশ্ববাজারে চামড়ার মূল্য হ্রাস ও দেশে হাজারীবাগ থেকে সাভারে কারখানা স্থানান্তরের কারণে অর্থ সঙ্কটে রয়েছেন ট্যানারি মালিকেরা। ফলে গত কয়েক দশকের তুলনায় এবার কাঁচা চামড়ার দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এ বিষয়ে ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, ‘আগামী সপ্তাহ থেকে ট্যানারির মালিকেরা লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ শুরু করবেন। সরকার নির্ধারিত দামেই আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লবণযুক্ত চামড়া কেনা হবে। চামড়ার মান অনুযায়ী দাম দেয়া হবে। রাজধানীর সবচেয়ে বড় কাঁচা চামড়ার আড়ৎ পোস্তাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার থেকে এ চামড়া সংগ্রহ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানির ঈদের ১০-১৫ দিন পর কাঁচা লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করা হয়। এবার নির্বাচনী বছরের কারণে গতবারের তুলনায় ২০-৩০ লাখ পশু বেশি কোরবানি হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তাই এক কোটির ওপরে চামড়া সংগ্রহ করার প্রস্তুতি রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবার সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরের কারণে অর্থ সংকটের পড়েছে মালিকেরা। নতুন করে অনেকে ব্যাংক ঋণ পাননি। সবমিলিয়ে অনেক ট্যানারির মালিক আড়তদারদের পাওনা পরিশোধ করতে পারেননি। অর্থের অভাবে আমাদের ব্যবসা থমকে আছে।’
জানা গেছে, সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্যে এবার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম মূল্যে চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। কোরবানির পশুর চামড়ার প্রকৃত হকদার এতিম, মিসকিন ও গরিবদের ঠকিয়ে মুনাফা নিচ্ছে ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা। গত বছরের তুলনায় দাম কমিয়ে কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য পুনর্র্নিধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম পাঁচ টাকা কমিয়ে ধরা হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা। গত বছর এ দাম ছিল ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৫০-৫৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৪০-৪৫ টাকা। অপরদিকে, প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম সারাদেশে ১৮-২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গতবছর ছিল ২০-২২ টাকা। আর বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩-১৫ টাকা। যা গত বছর ছিল ১৫-১৭ টাকা। তবে মহিষের চামড়ার দামের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি হাজী মো. টিপু সুলতান বলেন, ‘সারাদেশের ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে লবণ দিয়ে তা সংরক্ষণ করেছি। বিশ্ববাজারে মূল্য কম ও অর্থসংকটের কারণে এবার চামড়ার দাম পড়ে গেছে। ট্যানারি মালিকেরা যদি সময়মতো টাকা দিতো, তাহলে এ সংকট হতো না। আগামী সপ্তাহ থেকে ট্যানারিগুলো চামড়া কিনবে। আশা করছি, সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে পারব।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।