Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষেতলালে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ

জয়পুরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত এবং ধান-আলুর উৎপাদনের জন্য জয়পুরহাটের কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলা বিখ্যাত প্রাচীনকাল থেকেই। তবে নতুনভাবে, নতুন করে উত্তরবঙ্গে সর্ববৃহৎ ও জয়পুরহাট জেলার এই প্রথম ও বড় পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছেন ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ কৃষক এস এম রওশন জামিল। তিনি নিজস্ব উদ্যেগে এক হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামুক্ত উঁচু জমিতে উন্নত জাতের ‘বারি মাল্টা-১’ চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে তার শ্রম, সততা আর ঘামের প্রতিফলন সুরভিত হয়ে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে তার বাগান থেকে কাক্সিক্ষত মাল্টা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য সংগ্রহ করা হবে।
সরেজমিন ও ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই সদর থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে ভাসিলা-পুরানো গোপীনাথপুর রাস্তার দক্ষিণ পার্শ্বে সমন্তাহার গ্রাম। সেই গ্রামের আদর্শ কৃষক এস এম রওশন জামিল ‘মনোয়ারা রাজিব অ্যাগ্রো ফার্ম’ নামে এক হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামূক্ত উঁচু জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত ‘বারি মাল্টা-১’ চাষ করেছেন। এই বাগানে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে প্রায় ৬০০টি ‘বারি মাল্টা-১’ গাছ রোপণ করেন। তার নিবেদিত শ্রমে ও ঘামে প্রতিফলন সুরভিত হয়ে বর্তমানে কাক্সিক্ষত মাল্টা ফলগুলো গাছে গাছে বাতাসে দুলছে এবং ফলগুলো ফ্রুট প্যাকিং শুরু হয়েছে। আর আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাক্সিক্ষত বিদেশি জাতের মাল্টা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য সংগ্রহ করা হবে। তবে বর্তমান তিনি কলম করে মাল্টার চারা বিক্রি করছেন। তার কলমের মাল্টার প্রতিটি চারা ৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তার এই মাল্টা ফলের বাগান একনজর দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রশাসনের লোক, রাজনীতিবিদ, কৃষক, বৃক্ষপ্রেমী, ফলচাষি ও বাগান মালিকেরা আসেন। জামিলের ওই দৃষ্টিনন্দত মাল্টার বাগান এখন সবার মুখে মুখে।
ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ মাল্টাচাষি এস এম রওশন জামিল বলেন, উত্তরবঙ্গে সর্ব বৃহৎ ও জয়পুরহাট জেলার এই প্রথম আমি এক হেক্টর জমিতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ‘বারি মাল্টা-১’ ফলের বাগান বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছি। আমার এই মাল্টা বিষ ও ফরমালিনমূক্তসহ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও টাটকা। ফলগুলো নিজ এলাকাতে চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে সরবরাহ করা যাবে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাক্সিক্ষত জাতের মাল্টা ফলগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি জন্য সংগ্রহ করা হবে। আশা রাখি, এই মাল্টা ফলগুলো প্রায় ছয় লাখ টাকা বিক্রি হবে। এই বাগানে প্রতিদিন পাঁচজন কর্মচারী কাজ করেন। আমার এই মাল্টা ফলের বাগান এলাকাতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর কবির বলেন, এই এলাকার কৃষকেরা ধান ও আলুর চাষ করতে বেশি আগ্রহী। এসব চাষা ছাড়াও অনেক ধরনের ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। সে চেষ্টাই আমরা জামিলের মাল্টার বাগানের মাধ্যমে এলাকায় একটি আধুনিক ফলবাগান সৃষ্টি করেছি। এতে আমরা যা চেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি সফল হয়েছি। তিনি আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ