পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাল্টা বিদেশী ফল। বাংলাদেশের মাটিতে মাল্টা চাষের সফলতা এসেছে অনেক আগেই। শখের বসে অনেকে বাড়ির ছাদে মাল্টা চাষ করে সফলও হয়েছেন। অনুকূল আবহাওয়া হওয়ায় এবার নাটোরের লালপুরে সমতল ভূমিতে সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে বিদেশী পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল মাল্টা চাষ। ইতিমধ্যে উন্নত বারী-১ জাতের মাল্টা চাষ করে ফসল হয়েছেন উপজেলার অনেক কৃষক। লালপুরে উৎপাদিত মাল্টা গুণ ও মানে অনন্য হওয়ায় সম্ভাবনাময়ী ফসল হিসেবে বর্তমানে বাণিজ্যিক ভাবে মাল্টা চাষে ঝুঁকেছেন এখানকার কৃষকরা। প্রতিবছরই গড়ে উঠেছে নতুন নতুন মাল্টা বাগান।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, বর্র্তমানে লালপুরের পদ্মার চরাঞ্চলে ৭ হেক্টরসহ উপজেলা জুড়ে মোট ২৫ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে মাল্টা চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ আরো জানায়, ৩ বছর আগে থেকে এই উপজেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে মাল্টা চাষ শুরু হয়। তাদের সফলতা দেখে বর্তমানে এই অঞ্চলের অনেক কৃষক আম, বড়ই ও পেয়ারার পরিবর্তে মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। কৃষকদের আগ্রহী করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষক পর্যায়ে মাল্টা চাষের প্রদর্শনী, সার, স্প্রে মেশিনসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ দাবি করছে মাল্টা চাষ একটি সম্ভাবনাময়ী ফসল। দিন দিন লালপুরে মাল্টা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলায় মাল্টার যে চাহিদা রয়েছে তা পূরনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
সরেজমিনে উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলসহ উপজেলার ওয়ালিয়া, চকনাজিরপুর এলাকার কয়েকটি মাল্ট বাগান পরিদর্শন করে দেখা যায়। বাগান গুলি মাল্টা গাছে ঢেকে আছে। সবুজ পাতার ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে সবুজ রঙ এর মাল্টা। কিছু কিছু বাগানে শুরু হয়েছে মাল্টা বাজারজাত করণের কাজ। কোন কোন বাগানে আবার চলছে পরিচর্যার কাজ। সব মিলিয়ে দারুণ ব্যস্ত মাল্টা চাষিরা।
মাল্টা চাষী সোহাগ হোসেন খোকন জানান, তিনি ৩ বছর আগে বেকার ছিলো। হঠাৎ মাল্টা চাষের কথা মাথায় আসে। তিনি কৃষি অফিসের পরামর্শে ১ বিঘা জমিতে নাটোর হর্টিকালচার থেকে বারী-১ জাতের মাল্টার চারা কিনে চাষ শুরু করেন। প্রতি বছর ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এখন পর্যন্ত তার প্রায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মাল্টা চাষে তেমন রোগ বালাই হয় না। ২ বছর পর থেকে তার মাল্টা গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। প্রথম বার ৮ হাজার টাকা মাল্টা বিক্রয় করেন। চলতি বছরে তার বাগানে ২০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রয় করেছেন। এখনো ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রয় হবে বলে তিনি জানান। মাল্টার চাহিদাও বাজারে ভালো। তিনি আরো জানান, তার দেখে অনেক বেকার যুবকরা এখন মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
রনী আহম্মেদ নামের এক যুবক জানান, আমাদের দেশে আগে কখনো মাল্টার চাষ হয়নি। বর্তমানে মাল্টার চাষ হচ্ছে। মাল্টা একটি সম্ভাবনাময়ী ফল। সহজ শর্তে কৃষি ঋণ পেলে আগামীতে অনেক বেকার যুবক মাল্টা চাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে বলে তিনি মনে করেন।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, অনুকূল আবহাওয়া হওয়ায় লালপুরে মাল্টা চাষ একটি সম্ভাবনাময়ী ফল চাষ। স্বল্প খরচে মাল্টা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। তিন বছর আগে উপজেলায় মাল্টা চাষ শুরু হয়। বর্তমানে লালপুরে ২৫ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যকভাবে মাল্টা চাষ হচ্ছে। অনেক কৃষক আম, বড়ই ও পেয়ারার পরিবর্তে মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। কৃষক পর্যায়ে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় কৃষক-কৃষানী দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে কৃষকদের লেবু ও মাল্টা চাষে উদ্বুগ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকদের প্রদর্শনী খামার, সার ও স্প্রে মেশিন দিয়ে সহযোগিত করা হচ্ছে। মাল্টা চাষ করে আগামীতে এই অঞ্চলের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে পাশাপাশি অর্র্থনীতিতেও অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।