Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাক সেনাপ্রধানকে আলিঙ্গন সিধুর মৃত্যুদন্ড দাবি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পাক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াকে আলিঙ্গন করায় কংগ্রেস নেতা নভোজ্যেৎ সিং সিধুর মৃত্যুদন্ডের দাবি তুলেছে ক্ষমতাসীন বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা। মোর্চা নেতা আফতাব আদবানি ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, সিধু ভারতীয়দের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার চাইতে ইমরানের শপথে যোগ দেয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল সিধুর। এই ধরনের মানুষের এ দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই।
পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নভজ্যোৎ সিধু ও পাক সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়ার আলিঙ্গন নিয়ে ভারতে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। নভজ্যোৎ সিধু ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও অধুনা রাজনীতিবিদ। তিনি বিজেপির টিকিটে দুইবার এমপিও হন। বর্তমানে তিনি ভারতের একটি রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভবনে ইমরান খানের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানেই দেখা গেছে, সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া নিজে থেকেই এগিয়ে এসে ভারত থেকে আসা অতিথি সিধুর সঙ্গে আলিঙ্গন করছেন। অন্তত দুইবার তাদের বুকে বুক মেলাতে দেখা যায়। পরষ্পরের মাঝে হাসিমুখে বেশ কিছু কথাবার্তারও আদানপ্রদান হয়। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি ভারতীয়রা। নভজ্যোত সিধুর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের সেই ছবি সামনে আসার পর থেকেই ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় সিধুকে আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে। ভার্চুয়াল জগতে ভারতীয়দের তীর্যক মন্তব্য শুনতে হচ্ছে সিধুকে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, 'শত্রু রাষ্ট্রের সেনাপ্রধানের সঙ্গে গলাগলি করে' তিনি কাজটা মোটেই ভাল করেননি।
হরিয়ানার বিজেপি সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী অনিল ভিজ তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে জড়িয়ে ধরে সিধু নিজ দেশের সঙ্গে বেইমানি করেছেন।’ আবার কেউ বলছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুতে ভারত যখন ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে তখন নভজ্যোত সিধুর ওই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়াই উচিত হয়নি।
এসব সমালোচনার মুখে সিধু অবশ্য দাবি করেছেন, জেনারেল বাজওয়ার সঙ্গে তার শুধু শান্তি নিয়েই কথা হয়েছে। ভারতীয় একটি টিভি চ্যানেলকে সিধু বলেছেন, ‘জেনারেল বাজওয়া এগিয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেন - আর তারপরই বলেন আমি এমন একজন সেনাপ্রধান যে আসলে ক্রিকেটার হতে চেয়েছিল!’ উনি তারপরেই বললেন, নভজ্যোত - উই ওয়ান্ট পিস!
ভারতীয়দের জন্য করিডোর খুলে দেবে পাকিস্তান !
সিধু আরও জানিয়েছেন, পাকিস্তানের কর্তারপুরে যে গুরুদুয়ারা দরবারা সাহিব আছে সেখানে আগামী ২০১৯ সালে গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকীতে ভারতের শিখ তীর্থযাত্রীদের জন্য একটি করিডোর খোলা হবে বলে পাকিস্তানি জেনারেল তাকে ‘নিজে থেকেই’ কথা দিয়েছেন। শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানক দেবের সমাধিস্থল পাকিস্তানের ওই গুরুদুয়ারাতেই - আর শিখদের কাছে তা অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান বলে গণ্য হয়। তবে ভিসা হয়রানির কারণে ভারত থেকে সেখানে যাওয়া মোটেই সহজ নয় - কিন্তু সিধু বলছেন, পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের প্রতিশ্রুতি তার কাছে একটা 'ড্রিম কাম ট্রু' - অর্থাৎ স্বপ্ন পূরণের মতো ব্যাপার। সীমান্তের দুপারে পাঞ্জাবের বাজওয়া, সিধু, সান্ধু, চিমা - এই সব পদবীর লোকেরা যে আসলে সবাই 'জাঠ' পরিবারভুক্ত এবং তারা পরস্পরের প্রতি আলাদা একটা টান অনুভব করেন, সেটাও অবশ্য জানাতে ভোলেননি এই সাবেক ক্রিকেটার। ভারতের সাবেক তারকা ক্রিকেটার নভজ্যোত সিং সিধু - যিনি একটা সময় ইমরান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও খেলেছেন - শনিবারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনিই ছিলেন ভারত থেকে যাওয়া একমাত্র অতিথি।
ইমরান খান তার যুগের ভারতীয় তারকা সুনীল গাভাস্কার ও কপিল দেব এবং তার প্রিয় বলিউড অভিনেতা আমির খানকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বলে শোনা গিয়েছিল - কিন্তু তারা কেউই শেষ পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানে যাননি। ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নভজ্যোত সিধু বিজেপির রাজনীতিতে যোগ দেন। বিজেপির হয়ে দুবার তিনি পাঞ্জাবের অমৃতসর থেকে এমপিও হয়েছেন। কিন্তু গত বছর দলের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে বিজেপি ছেড়ে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীও। -বিবিসি



 

Show all comments
  • সিমন ২১ আগস্ট, ২০১৮, ১০:২৬ এএম says : 0
    ভারত কোনও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয় এটি সম্পুর্ন একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র।
    Total Reply(0) Reply
  • ইমরান ২১ আগস্ট, ২০১৮, ১০:২৭ এএম says : 0
    ইমরান খানের মতো ক্যারিশমেটিক নেতা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় ভারতের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • পলক ২১ আগস্ট, ২০১৮, ১০:২৮ এএম says : 0
    imran khan মদিনা ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা বলে পাকিস্তানকে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যেতে চায় ভারত মেনে নিতে পারছে না
    Total Reply(0) Reply
  • মুকুন্দ মজুমদার ২৪ আগস্ট, ২০১৮, ১:১৯ এএম says : 0
    ভারতের কুটিল চাণক্য নীতি আর ছোট মনের কারণে এই উপ মহাদেশের প্রতিবেশীদের শান্তি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছেনা। ভারতের থিংক ট্যাংক আর রাজনীতির নীতি নির্ধারকরা উপলব্ধি না করলে দীর্ঘমেয়াদে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আরেক ভাবে বলাযায় ইন্ডিয়া পারমাণবিক শক্তিধর বড় গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়েও পশ্চিমা দেশ গুলোর স্বার্থ তার ধনিক এলিট আর রাজনৈতিক এলিটরা সংরক্ষণ করছে।ভালো করে বিশ্লেষণ করলে কংগ্রেস বা বিজেপি দু দলই এক্ষেত্রে একই। যার কারণে ভারতে চরম অর্থনৈতিক ও জীবন যাত্রার মানের বৈষম্য ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২৬ আগস্ট, ২০১৮, ১:১২ পিএম says : 0
    Varotio eai prakton cricketer she tar khelowar bondho pakistaner prpdhan montrir shopot onoshtane jogdan korar fole je keho tar shathe alinggon korte pare jodi she shekhane negative hoye alinggone shara na dei,taha hole eaita ki varotioder jonno oshonman oshishtachar bohirvoto hobena.jara nobojat shishuke votshona korsen tara ki eaitooku bjhtesenna je,apnara jati hishabe je koto hingshuk o shohinshu hin?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ