রাত পোহালেই ঈদুল আযহা। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ির উদ্দেশ্যে ছুটছে সকল পেশা শ্রেনীর মানুষ। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোথাও দেবে উচু নিচু, কোথাও ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে মহাসড়কে এখন পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও অতিরিক্ত গাড়ির চাপে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গতকাল সোমবার বিকালের পর যারা রওনা দিয়েছেন পথে কোথাও না কোথাও তীব্র যানজটে পড়তে হয়েছে তাদের। শত ভোগান্তি মেনে নিয়েই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ফিরছেন স্বজনরা। গতকালও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের কারণে বাড়তি যানবাহনের চাপ ছিল। এতে মহাসড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। কোথাও কোথাও দেখা যায় তীব্র যানজট। ধীরগতিতে চলে। এতে ভোগান্তিতে পড়ে ঘরমুখো মানুষ।
সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ^রোড এলাকার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে শহরের ডা: ইমরান হোসেন অপেক্ষা করছেন তার ছেলেমেয়েদের জন্য। সকালে তারা ঢাকা থেকে বাসে রওনা হয়েছে। ১২টার মধ্যে বাস কুমিল্লায় পৌঁছার কথা। কিন্তু সাড়ে ১২টা নাগাদ বাস না পৌঁছনোয় ডা: ইমরান বারবার ছেলেমেয়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করছেন বাস কোন পর্যন্ত এসেছে। রাস্তায় কোন জ্যাম আছে কিনা। এক সময় বাস যখন স্ট্যান্ডে এসে দাঁড়াল তিনি অনেকটা আবেগের সঙ্গে বাসের পিছু পিছু দৌড়ে ছুটে যান তার ছেলেমেয়েদের এগিয়ে আনতে। ডা: ইমরান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অনেক টেনশনে ছিলাম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত কয়েকদিনের যানজট মানুষের যে ভোগান্তি তৈরী হয়েছে। সেজন্য ছেলেমেয়েরা কিভাবে কুমিল্লা আসবে তা নিয়ে গত কয়েকদিন টেনশনে আমার বøাড প্রেসার পর্যন্ত কমে গিয়েছিল। আল্লাহ কাছে হাজারো শুকরিয়া অবশেষে তিন ঘন্টা দেরিতে হলেও ছেলেমেয়েরা সুস্থভাবে পৌছতে পারায়। শুধু ডা: ইমরান নয়, তার মত অনেকে পরিবার নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
তবে সড়ক কর্তৃপক্ষ ঈদকে সামনে রেখে সড়ক-মহাসড়কে জোড়াতালির মেরামত শুরু করেছে ঈদ যাত্রীরা যেন নির্বিঘেœ গন্তব্যে পৌছাতে পারে। বর্ষা এলে এ দেশে রাস্তাঘাট সংস্কার, মেরামত শুরু হয়। এবার এর সঙ্গে মিলেছে অর্থবছরের শেষ হওয়ার ক্ষণ, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঈদ। ফলে জনদুর্ভোগ পুঁজি করে প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের আগে ইট, বালু, পাথর নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। কাজের চেয়ে এখানে টাকা খরচই মুখ্য বলে অভিযোগ আছে। দুই বছর যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক আগের অবস্থায় ফিরে আসে। সড়ক বিভাগ মহাসড়কটি প্রায়ই সংস্কার করলেও একের পর এক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে ফলাফল সেই শূণ্যই থাকে। বৃষ্টির সময় দূরপাল্লার যানবাহন চালকদের গাড়ি চালানোয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধীরগতির কারনে সময় বেশি লাগায় যাত্রীদেরকেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে কুমিল্লা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার জানান, মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঠিকাদাররা প্রতিদিনই সংস্কার কাজ করছেন। রাজনৈতিক ঠিকাদারের কারণে সঠিক কাজ না হওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ঠিকাদার রাজনৈতিক না অরাজনৈতিক সেটা বড় নয়। তাঁর কাছ থেকে কাজ আদায় করা হলো মূল কথা। সওজ সেটা নিশ্চিত করছে। প্রতিবছর ঈদ বা বর্ষার আগে মেরামতের তোড়জোড় কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা বছরই কাজ হয়। তবে ঈদের আগে গণমাধ্যম বেশি সোচ্চার হয়। তখন কাজ একটু বেশি চোখে পড়ে।