Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত কামার শিল্পীরা

ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৮, ২:৩৮ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বেড়ে গেছে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা। কামার শিল্পীরা দিন রাত নিরলস পরিশ্রম করে মাংস কাটার বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করে চলেছেন অবলীলায়।

উপজেলা সদরের ব্রীজ পার এলাকায় গেলেই চোখে পড়ে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততম জীবন চিত্র। তারা গরম লোহা পিটিয়ে পরিশ্রমের ফসল হিসেবে একটা নির্দিষ্ট বস্তুতে পরিনত করছে সেই লোহাকে। আর সেই লোহা থেকে তৈরী যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয় দৈনন্দিন জীবন যাপনের কাজ সহ ঈদুল আযহার কুরবানীর পশুর মাংস কাটতে। বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরীতে কামারদের মধ্যে প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যায় এ সময়ে। তাদের নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবের জন্য তৈরী করে এসব লোহার যন্ত্রপাতি। কামার শিল্পীদের বেশির ভাগই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। তাদের অনেকেরই পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এ পেশা। কামারদের তৈরী যন্ত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে দা, বটি, ছুঁড়ি, চাপাটি, কোদাল, কুড়াল, এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি। যা ঈদুল আযহার কোরবানির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।

লোহার দাম বৃদ্ধি, লাগাম হীন বাজার ব্যবস্থা, পরিশ্রমের তুলনায় কমমূল্য পাওয়ায় এসব সঙ্গত কারনেই বছরের বেশীর ভাগ সময়ই কামার শিল্পীদের কর্মহীন জীবন চালাতে হয়। বর্তমান বাজারে স্টেইনলেসস্টিলের যন্ত্রপাতি থাকায় কামার শিল্পিদের তৈরী যন্ত্রপাতির ব্যবহার কমে যাওয়ায় কামাররা ধীরে ধীরে তাদের পৈত্রিক পেশা হারাতে বসেছে। তবে ঈদ উপলক্ষে কাজ কর্ম বেশি থাকায় বর্তমানে ব্যস্তসময় পার করছেন তারা

উপজেলার পৌরসদরের কামার শিল্পী মানিক চন্দ্র ধর জানান, বছরের বেশির ভাগ সময়ই আমাদের কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাতে হয়। বহু কষ্টে ছেলে মেয়ে নিয়ে দিনযাপন করি আর ঈদুল আযহার জন্য অপেক্ষা করি। ঈদুল আযহা এলেই মনে হয় যেন আমাদের ভাগ্যের সুদিন এসেছে। তাই নিরলস পরিশ্রম করে তৈরী করি বিভিন্ন ধরণের যন্ত্রপাতি।

উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া বাজারের কামার শিল্পী সুভাস চন্দ্র ভৌমিক জানান, অনেক বয়স হয়েছে আমার। জীবনের প্রায় শুরু থেকে বংশানুক্রমিক ভাবে এ কাজ করছি। আগে এমন অবস্থার শিকার হইনি কখনো। কিন্তু বর্তমানে একটা ঈদের জন্য আমাদের অপেক্ষা করে থাকতে হয় সারা বছর। খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করতে হয়। আর ভাবি আবার কখন আসবে সেই ঈদ। অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে ঈদ আসে ঈদ যায় তবু আমাদের জীবনের কোন পরিবর্তন হয় না। তারপরও ঈদ এলেই নিরলস ভাবে কাজ শুরু করি মুসলমানদের ঈদ অনুষ্ঠানের জন্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ