পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাস ট্রেন লঞ্চের টিকিট নেই। যানজটে অচল সড়ক-মহাসড়ক। ভেঙে পড়েছে রেল ও বাসের শিডিউল। নানা ঝক্কি-ঝামেলা শেষে টিকিট পেলেও যানবাহনের জন্য অপেক্ষার শেষ নেই। টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে রীতিমত লড়াই। স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াতেই যে যেভাবে পারছেন উঠে পড়ছেন। রেল গাড়ির দরজা, জানালায় ঝুলে ছাদে বসে ভ্রমন করতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন বাস। গলাকাটা ভাড়ায় অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাড়ি যাচ্ছেন অনেকে। চট্টগ্রাম থেকে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের দুর্ভোগের চিত্র এমনই। পবিত্র ঈদ উল আজহার আর মাত্র একদিন বাকি। প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে চট্টগ্রাম ছাড়ছে লাখো মানুষ। বাসা থেকে বের হয়ে পথে পথে দুর্ভোগ আর ভোগান্তিকে সঙ্গী করে আপন ঠিকানায় ছুটছে সবাই। নগরীর রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও পরিবহনের কাউন্টারগুলোর সামনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। আজ সোমবার শেষ কর্মদিবস। কাল থেকে শুরু ঈদের ছুটি। সরকারি অফিস আদালতের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেডসহ সব কলকারখানাও ছুটি হয়ে যাবে আজ। ফলে বিকেল থেকে ঘরমুখো মানুষের ভিড় আরও বাড়বে।
ঈদ যাত্রায় এত বিপুল সংখ্যক যাত্রীর জন্য নেই পর্যাপ্ত ট্রেন, বাস। বিশেষ করে দূরপাল্লার বাসের সঙ্কট তীব্র। লাখে মানুষকে চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বাড়ি ফিরতে বাসা থেকে বের হতেই তীব্র যানজট। স্টেশন আর টার্মিনালে পৌঁছতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় চলে যাচ্ছে। জট ঠেলে স্টেশনে আসার পর দেখা যাচ্ছে, ট্রেন নেই, অথবা ট্রেন থাকলেও তাতে উঠে বসার কোন সুযোগ নেই। কারণ ততক্ষণে পুরো রেলগাড়ি যাত্রীতে ঠাসা। কার টিকিট আছে কার নেই তা দেখারও কোন সুযোগ নেই। স্টেশনে ট্রেন আসতে তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন নারী, শিশুসহ সব বয়সের মানুষ। যে যেভাবে পারছেন উঠে পড়ছেন ট্রেনে। কারণ বাড়ি যেতেই হবে। স্টেশনে গতকাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল প্রচন্ড ভিড়। যাত্রীদের ছাদে উঠা ঠেকাতে ট্রেনের ছাদে লাঠি হাতে অবস্থান নেয় নিরাপত্তা কর্মীরা। প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত যাত্রী দেখা গেছে। ঢাকার সাথে চট্টগ্রামেরও শিডিউল এখন এলোমেলো। এতে করে যাত্রীদের আরও দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
বাস যাত্রায়ও দুর্ভোগের শেষ নেই। মহানগরীর কদমতলী, অলঙ্কার ও সাগরিকা বাস টার্মিনাল থেকে কয়েক মিনিট পর পর বাস ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা। বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ সব রুটেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। লক্কর-ঝক্কর বাসে আদায় করা হচ্ছে গলাকাটা ভাড়া। দূরপাল্লার বাসের সঙ্কট এখন চরমে। চট্টগ্রাম থেকে বৃহত্তর বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর অঞ্চলে বিভিন্ন রুটে বাসের সঙ্কট রয়েছে। দূরপাল্লার বাসের আগাম টিকিট বিক্রি হয়েছে। কিন্তু শিডিউল ভেঙ্গে পড়ায় বাসের জন্য যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাউন্টারে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে সড়ক-মহাসড়কে যানজট থাকায় কোন বাস নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না। বিলাসবহুল এসি বাসেরও শিডিউল এলোমেলো। দূরপাল্লার রুটে ফিটনেসবিহীন বাসে যাত্রী পরিবহনেরও অভিযোগ রয়েছে।
বেশি বিপাকে পড়েছেন নৌপথের যাত্রীরা। চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল রুটে সরাসরি লঞ্চ চলাচল বন্ধ দীর্ঘদিন থেকে। ভোলার সাথে সরাসরি লঞ্চ সার্ভিস থাকলেও ঈদের আগে মাত্র তিনদিন এ সার্ভিস চলাচল করছে। আজ এবং আগামীকাল চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে ভোলার উদ্দেশে যাবে বিআরটিএর যাত্রীবাহি লঞ্চ এমভি বার আউলিয়া। লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ থাকায় বরিশাল অঞ্চলের যাত্রীদের চাঁদপুর অথবা লক্ষীপুর হয়ে বাড়ি যেতে হচ্ছে। এতে করে তাদের কয়েকগুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন দ্বীপ উপজেলা স›দ্বীপের বাসিন্দারা।
ঘরে ফেরা নির্বিঘ্ন করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও তার সুফল মিলছে না। মহানগরীতে তীব্র যানজট চলছে। যাত্রীবাহি বাস নগরী থেকে বের হতেই কয়েক ঘণ্টা পার হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কসহ এ অঞ্চলের সব সড়কের অবস্থা এখন বেহাল। পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনেক এলাকায় সড়কে বসেছে গরুর বাজার। ঈদের ছুটির আগে চট্টগ্রাম বন্দরমুখী আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের চাপও বেড়েছে কয়েকগুণ। যাত্রীবাহি বাসের পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কে বেড়েছে পশুবাহি ট্রাকের ভিড়। এর ফলে মহাসড়কে তীব্র যানজট হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।