Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

হজ্জ বা ওমরার ইহরাম বাঁধার পর উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা সম্পর্কে হযরত সায়েব (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন : রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : হযরত জিব্রাঈল (আ:) আমার নিকট আসলেন এবং আমাকে আদেশ করলেন, আমি যেন আমার সঙ্গী সাথীগণকে খুব উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়তে আদেশ করি। (জামে তিরমিজী, সুনানে আবু দাউদ, বায়হাকী) এই হাদীস হতে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) তাঁর সাহাবাগণকে উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করার জন্য আদেশ করেছেন। কেননা, হযরত জিব্রাঈল (আ:) তাঁকে এরূপ নির্দেশ দেয়ার জন্য হুকুম দিয়েছিলেন। সুতরাং তালবিয়া উচ্চস্বরে পড়া কর্তব্য। তবে এই কর্তব্য বলতে কি বুঝায় এ সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। (১) জাহেরী মাযহাব পন্থীদের মতে উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা ওয়াজিব। কেননা, এতে হযরত জিব্রাঈল (আ:)-এর তরফ হতে পাওয়া নির্দেশের উল্লেখ রয়েছে। ইমাম মালেক (রহ:) ও তাঁর অনুসারীরা এই মত পোষণ করেন।
(২) উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা সুন্নাত। ইমাম শাফেয়ী (রহ:) ও হাসান ইবনে হাই এই মত পোষণ করেন।
(৩) তালবিয়া পাঠকরা ইহরামের শর্তের মধ্যে গণ্য। তালবিয়া পাঠ না করলে ইহরাম সহীহ হবে না। ইমাম আবু হানীফা (রহ:) ইমাম সুফিয়ান সওরী (রহ:) এই মত পোষণ করেন।
(৪) ইমাম আবু ইউসুফ (রহ:) ও ইমাম মুহাম্মদ (রহ:) বলেছেন : ইহরামের তালবিয়া নামাজের তকবীর সমতুল্য। কেননা, হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) বলেছেন : হজ্জের মাসসমূহে যে লোকই হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে, সে-ই তালবিয়া পাঠ করবে।
(৫) হযরত আতা, ইকরামা ও তাউস (রহ:) বলেছেন : তালবিয়া পাঠ করা ছাড়া হজ্জই হয় না।
(৬) ইবনুল হুম্মাম (রহ:) বলেছেন : উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা সুন্নাত। যদি কেউ উচ্চস্বরে না পড়ে, তাহলে সে ভুল করবে। তবে, সেজন্য কিছু কাফফারা দিতে হবে না। আর উচ্চস্বরে বলতে গিয়ে যেন এমনভাবে চিৎকার করা না হয়, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। আর মহিলাদের জন্য উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করার নিয়ম নয়। বরং তারা নিম্নস্বরে পাঠ করাই বাঞ্ছনীয়। (ওমদাতুল কারী, তুহফাতুল আহওয়াজী)।
হযরত সহল ইবনে সা’দ (রা:) হতে বর্ণিত একটি হাদীসে বলা হয়েছে : যে লোকই তালবিয়া পাঠ করে, তার সঙ্গে সঙ্গে ডান ও বামের সব গাছপালা ও পাথর তালবিয়া পড়তে থাকে। এমন কি, এখান হতে সেখানে, পূর্বদিক হতে পশ্চিম দিকে চলে যায় অর্থাৎ সমস্ত সৃষ্টিলোক তার সাথে মিলে তালবিয়া পড়তে থাকে। (জামে তিরমিজী, সুনানে ইবনে মাজাহ, মোস্তাদরেকে হাকেম)।
বস্তুত : তালবিয়া পাঠ করা শরীয়ত সম্মত ব্যাপার। এ বিষয়ে পূর্ণ ‘ইজমা’ রয়েছে। যারা এই ‘ইজমা’ অস্বীকার করতে চায় আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত তাদেরকে হেদায়েত দান করুন, আজকের এটাই একান্ত প্রত্যাশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হজ

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ