Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কামারদের সুসময়

কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কুমিল্লায় কামারশালাগুলোতে বেড়েছে কাজের চাপ। কামারশালাগুলোতে সারা বছরই এখানকার কারিগরদের তৈরি লৌহজাত দ্রব্যের বিভিন্ন উপকরণের চাহিদা থাকে উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায়। তবে কোরবানি ঈদের সময় কামারশালায় দা, বটি, চাপাতি, ছোরাসহ অন্যান্য সরঞ্জামের চাহিদা বেড়ে কয়েকগুণে দাঁড়ায়। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে কামার দোকানদারদের একটা বড় টার্গেট থাকে। আর সারা বছরের ব্যবসার লাভের বড় অংশট কোরবানি ঈদের এ মৌসুমেই হাতে আসে। এবারেও কুমিল্লা শহরের চকবাজারের কামার দোকানিরা সেই টার্গেট রেখে পশু জবাইয়ের এবং মাংস কাটাকুটির সব সরঞ্জাম শান, তৈরি করা নিয়ে পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আরমাত্র চারদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির পশু জবাইয়ের এ ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে কুমিল্লার কামারশালাগুলোতে। দা, বঁটি, চাপাতি, ছোরাসহ নানা ধারালো অস্ত্রের শান দেয়া ছাড়াও এ ধরনের নতুন সরঞ্জামও তৈরি করছেন কামারশালার কারিগররা। কাজ আর কাজ, ফুসরত নেই তাদের। মালিক কারিগর সমানতালেই ব্যস্ত। দোকানের কেউ হাঁপরের আগুনের শিখায় লাল করে নামিয়ে এনে হাঁতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি করছে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি। আবার কেউ মোটরচালিত মেশিনে দিচ্ছে শান। এসব শব্দে মুখর হয়ে হয়ে উঠেছে চকবাজারের গোটা কামারপট্টি। কুমিল্লা জেলার অন্যতম কামারপট্রি শহরের চকবাজারে। প্রায় ৩৫টি কামার দোকান রয়েছে এখানে। জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও বেশকিছু কামার দোকান রয়েছে। চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী পশুরহাট ঘিরেই রয়েছে বিশাল কামারপট্টি। গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কামার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে মৌসুমী কারিগরের সংখ্যাও বেড়েছে। পোড়া কয়লার গন্ধ, হাঁপরের হাঁসফাঁস আর হাঁতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে চকচকে ধারালো দা, চাপাতি, বড় ছোট ছোরা, বঁটিসহ নিমিষে মাংস কাটাকুটির সব ধরনের উপকরণ। কেউ মাংস কাটার নতুন সরঞ্জাম কিনছেন। কেউ গতবছরের ব্যবহৃত সরঞ্জাম শান দেয়ার জন্য নিয়ে আসছেন। চকবাজারের কামারপট্টি ছাড়াও শহরের রাজগঞ্জ, মোগলটুলি, তেরিপট্টি এলাকার কাশারিপট্টি, কান্দিরপাড়, শাসনগাছায় ফুটপাথে চলছে দা, ছোরা, চাপাতি বিক্রি ও শান দেয়ার কাজ।
চকবাজারের একটি কামারশালার মালিক নোয়াব মিয়া জানান, কোরবানি এলেই বেচাবিক্রি ও লোকজনের মরিচা পড়া দা, বঁটি, ছোরা ইত্যাদি সরঞ্জাম ধারালো করার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। কাঁচা লোহা, কয়লা ও অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দা, ছোরা ও অন্যান্য সরঞ্জামও কিছুটা বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার কারিগরের মজুরিও বেশি দিতে হচ্ছে। তাই শান দেয়ার খরচও কম রাখা যাচ্ছে না। এদিকে অন্যান্য কামারশালার মালিকরা জানান, বিভিন্ন উপজেলার লৌহজাত পণ্যের ও হার্ডওয়ার দোকানিরা চকবাজারের কামারপট্টি থেকে পাইকারি দরে দা, চাপাতি, বঁটি, কোদাল, ছোরাসহ বিভিন্ন উপকরণ সারা বছরই কিনে নেয়। তবে কোরবানির সময় এলে এসব সরঞ্জামের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। গত এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি বিক্রির পরিমাণ বেশি গেছে। এখন ঈদ ঘনিয়ে আসায় কোরবানিদাতাদের পুরানো সরঞ্জাম মেরামত, শান দেয়া ছাড়াও নতুন সরঞ্জাম বিক্রি ভালোই চলছে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানি ঈদের এই সময়ে লাভের পরিমাণটা অনেকটা বেশি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ