বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট কাস্টমস ও পুলিশ ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করার প্রতিবাদে কাস্টমস এর বিরুদ্ধে এবার একাট্টা হয়েছে পাসপোর্ট দালালরা। সাংবাদিক পরিচয় দেয়া একশ্রেনীর পাসপোর্ট দালালদের কাস্টস ও পুলিশ ইমিগ্রেশনে প্রবেশ’র ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কাস্টমস এর ডেপুটি কমিশনার জাকির হোসেন। ইতিমধ্যে কাস্টমস’র ডেপুটি কমিশনার জাকির হোসেনকে হত্যার হুমকী দিয়েছে দালালরা।
কাস্টমস’র পক্ষ থেকে এ ব্যপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। সাংবাদিক পরিচয়দানকারী পাসপোর্ট দালালদের নামের তালিকাও করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। দীর্ঘদিন ধরে কাস্টমস ও পুলিশের নাম করে এক শ্রেনীর পাসপোর্ট দালাল মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল ভারত গমনাগমনকারী নিরীহ পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে। প্রতিদিন সকালে এসব চিহ্নিত পাসপোর্ট দালাল প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে পাসপোর্ট নিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে জোর করে কাস্টমস এর অভ্যন্তরে ঢোকার চেস্টা করলে বাধা দেন কাস্টমস এর ডেপুটি কমিশনার জাকির হোসেন। ফলে ঐ চক্রটি ডেপুটি কমিশনারকে দেখে নেয়ার হুমকী দেয় প্রকাশ্যে। ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানি বন্ধে নিরাপওা ব্যবস্থা জোরদার করা হযেছে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন অফিস। ফলে পাসপোর্ট ছাড়া কোন ব্যক্তিকে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরীর সাহসী প্রদক্ষেপে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করতে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক স্ক্যানিক মেশিন এবং জোরদার করা হয়েছে যাত্রীদের নিরাপওা ব্যবস্থা। বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১১ লাখ ৩১ হাজার ৮৫০ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করেছে। এ সব যাত্রীর কাছ থেকে বেনাপোল সোনালী ব্যাংক বিদেশে ভ্রমণকর বাবদ রাজস্ব আদায় করেছে ৫৬ কোটি ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা। গোটা কাস্টম ও ইমিগ্রেশন এলাকায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা, যাত্রীদের বিশ্রামাগার ,শীততাপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা ও মাইকে দালালদের কাছে পাসপোর্ট না দেয়ার জন্য ঘোষনা দেয়া হচ্ছে প্রতিনয়িত।
টার্মিনালের প্রধান ফটকে বন্দরের নিরাপওা কর্মী,আনসার সদস্য ও কাস্টম অফিসারদের সার্বক্ষনিক নজরদারি বৃদ্ধি করায় প্রবেশ করতে পারছে না পাসপোর্ট দালালরা। চেকপোস্ট দিয়ে ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রী সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে ৪/৫ হাজার বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যাতায়াত করছে। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের সেবার মান বৃদ্ধি করায় যাত্রীরা দ্রæত ও সুশৃংখলভাবে দালালমুক্ত পরিবেশে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশন’র ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, পাসপোর্ট দালালদের উৎপাত এখনও বন্ধ হয়নি। পূর্বের তুলনায় এ পথে দ্বিগুন যাত্রী যাতায়াত করায় সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় ৩/৪ হাজার লোক যাতায়াত করে ভারতে। আগের তুলনায় প্রায় ২ থেকে তিন হাজার যাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রতিমাসে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হচ্ছে বিদেশ ভ্রমন কর থেকে। বর্তমানে প্রতি যাত্রীকে সিরিয়ালে দাড় করিয়ে তাদের পাসপোর্ট’র আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হচ্ছে। দালাল ও বহিরাগতরা যাতে ইমিগ্রেশনে ঢুকতে না পরে সেজন্য প্রবেশ মুখেই কঠোর নিরাপওা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী জানান, বর্তমানে চেকপোস্ট কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালাল মুক্ত করা হয়েছে। তারপরও সাংবাদিক পরিচয়ে কিছু দালাল জোর করে কাস্টমস কম্পাউন্ডে প্রবেশের চেস্টা করছে। আমরা ঐসব সাংবাদিক পরিচয়দানকারী কিছুসংখ্যক দালাল শনাক্ত করেছি, তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই মামলা করা হবে।