বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এবার ঈদুল আজহায়কুরবানির জন্য লালন-পালন করাসবচেয়ে বড় গরু হচ্ছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার খাইরুল ইসলাম খান্নুর ৫৫ মণ ওজনের ষাঁড় রাজাবাবু।সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে রাজাবাবুর লালন-পালন হচ্ছে রাজার মতোই রাজাবাবুর থাকার ঘরে লাগনো হয়েছে পাঁচটি ফ্যান, ২৪ ঘণ্টা ২০ বার করানো হচ্ছে গোসল, প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় থাকে ২০ কেজি ভুষি, ১০ হালি কলা, দুই কেজি মাল্টা, পাঁচ হালি কমলালেবু, দুই কেজি চিড়া, এক পোয়া ইসুবগুলের ভুষি, কয়েকটি বেল ও ডাব দিয়ে বানানো বিশেষ শরবত ইত্যাদি।
এই ষাঁড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন চিকিৎসক আর তার নিরাপত্তায় রাতে পুলিশ টহলও দেয়। রাজাবাবুকে দেখতে প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাজারো মানুষ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দীঘলিয়া ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামের কৃষক খাইরুল ইসলাম খান্নুর বাড়িতে ভিড় করছে।এত বড় গরু পালন করে ব্যাপক প্রচার পেলেও গরুটি বিক্রি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মালিক খাইরুল। ক্রেতারা গত বছর রাজাবাবুর দাম বলেছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কিন্তু খাইরুল ১৬ লাখ টাকা আশা করেছিলেন, কাক্সিক্ষত মূল্য না পাওয়ায় তা বিক্রি করে না। এবার দাম আশা করছেন ২৫ লাখ টাকা। এত বড় গরু বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যলয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. সেলিম জাহান জানান, গত ২৭ জুলাই রাজাবাবুকে দেখতে জেলার দেলুয়া খান্নুর বাড়িতে যাই। খান্নু জানিয়েছে, রাজাবাবুর বর্তমান বয়স তিন বছর ১০ মাস। ছয় দাঁতের ওই ষাঁড়ের আকার ও ওজন পরিমাপ করেছেন তিনি। এতে দেখা যায়, গরুটির উচ্চতা ছয়ফুট ছয় ইঞ্চি, লম্বা আটফুট, বুকের পরিমাপ ১০ ফুট, মুখ চওড়া তিনফুট দুই ইঞ্চি, গলার বেড় পাঁচফুট, শিং একফুট লম্বা, লেজের দৈর্ঘ্যচারফুট তিন ইঞ্চি এবং ওজন দুই হাজার ৯৪ কেজি। অর্থাৎ ৫২ মণ, কিন্তু গত ১০ দিনে গরুটির আরো দুই মণ ওজন বেড়েছে বর্তমানে গরুটির ওজন ৫৫ মনের কাছাকাছি।
রাজাবাবুর পালনকারী খাইরুল ইসলাম খান্নু জানান, প্রতিদিন রাজাবাবুর জন্য তার খরচ প্রায় দুই হাজার টাকা। খাবারের মেন্যুতে থাকে কলা, মাল্টা, কমলালেবু, চিড়া, বেলের শরবত ইত্যাদি। দুই বছর আগে সাভার উপজেলার বারাহিরচর এলাকার কৃষক কুদ্দুস মুন্সীর কাছ থেকে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে ১৮ মণ ওজনের এই হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি কেনেন। সে এক বছর পালনের পর গতকুরবানির ঈদের সময় গরুটির ওজন দাঁড়ায় ৩৯ মণে। ক্রেতারা গরুটির দাম করেছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একটু বেশি দামে বিক্রি করার আশায় গতবার গরুটি বিক্রি করতে পারিনি। এবার গরুটির ওজন বেড়ে হয়েছে প্রায় ৫৫ মণ। এবার এর দাম চাচ্ছি ২৫ লাখ টাকা। ভালো দাম পেলে এ গরুটির সাথে আমার বাড়ির দুই লাখ টাকা দামের আরেকটি ষাঁড় উপহার দেবো।
খাইরুল ইসলাম খান্নুর স্ত্রী পরিষ্কার বেগম জানায়, বিশাল আকারের এই ষাঁড়ের পরিচর্যা করা খুবই কঠিন। দিনে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বার গোসল করাতে হয়। সারা দিন পাঁচটি বৈদ্যুতিক পাখা চালাতে হয়। কারেন্ট না থাকলে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে হয়। সারা দিনই চলে গরুর যতœ। তাদের বাড়িতে আরো সাতটি গরু আছে। সেগুলোর যতœ নেয়াই দায়। এবার যেন বাড়ি থেকেই গরুটি ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারি সেটাই আশা করছি।
খাইরুল ইসলামের মেয়ে ইতি আক্তার জানায়, আমি এসএসসি পাস করার পর ২০১৭ সালে সাভারে শেখ হাসিনা যুবউন্নয়ন কেন্দ্র থেকে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক তিন মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। আমি এখন খামারের গরুর সার্বিক দেখাশোনা করি। গরুটি দেখতেও রাজার মতো, খায়ও রাজার মতো। এ কারণে আমি গরুটির নাম রেখেছি রাজাবাবু। আমরা দুই বছর আগেকুরবানির ঈদে ৩০ মণ ওজনের গরু ল²ীসোনা রাজধানীর গুলশানে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলাম।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চর মিরপুর গ্রামের মো. আমিনুর রহমান ও কলিম উদ্দিন রাজাবাবুকে দেখতেএসেছেন। তারা জানান, তাদের এলাকার লোকজনের মুখে গরুটির গল্প শুনে এত বড় গরু তাই দেখতে এসেছেন। এত বড় গরু কখনোই দেখেনি তারা।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. খোরশেদ আলম জানান, গরুটি সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে পালন করা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক ষাঁড় রাজাবাবুর বিষয়ে খোঁজখবর রাখছি। খান্নু মিয়া গতবার কাক্সিক্ষত মূল্য পায়নি বলে তার ষাঁড় রাজাবাবুকে বিক্রি করেনি। আমার জানামতে, এটিই বর্তমানে দেশে আকার এবং ওজনে সবচেয়ে বড় গরু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।