Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইন্দো-প্যাসিফিকে রুশ নৌশক্তির সম্প্রসারণ

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৭ এএম

প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, বছরের শেষ নাগাদ ২৬টি নতুন রণতরী ও নৌযান নৌবাহিনীকে সরবরাহ করা হবে। আরো কিছুও যুক্ত হবে। ২০২৪ সাল নাগাদ নতুন ৩৭টি নৌযান যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত দশকে যুক্ত হয়েছিল ২৮টি নতুন জাহাজ। এই তুলনায় দেখা যাচ্ছে, রুশ নৌবাহিনীর শক্তিবৃদ্ধির হার ব্যাপকভাবে বাড়ছে। খুব বেশি ব্যয়বহুল হওয়ায় লিডার-ক্লাস ডেস্ট্রোয়ার ও স্ট্রম বিমানবাহী ক্যারিয়ার কর্মসূচি বাতিল করা হলেও ক্রেমলিন খুবই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নিয়ে তার নৌবাহিনীকে আধুনিকায়ন করছে। গত ২৯ জুলাই রাশিয়ার নৌবাহিনী দিবস উদযাপনের সময় তিনি এ ঘোষণা দেন। অর্থের সংস্থানও হয়ে গেছে। তেলের দাম বাড়ায় ২০১৮-২১ অর্থ বছরের জন্য যা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল, তার চেয়ে ৩০ ভাগ বেশি অর্থ ব্যয় করা হবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা খাতে। এ তথ্য জানিয়েছেন কার্নেগি মস্কো সেন্টারের অর্থনৈতিক কর্মসূচির প্রধান আন্দ্রেই মভচেন। ক্রেমলিন বিশ্বাস করে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সামরিক সম্ভাবনার সাথে তাল মিলিয়ে চলা তার জন্য খুবিই প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা হলো, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেটের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ১০ গুণ ও চীনের ৬ গুণ বেশি। নতুন নতুন রণতরী যুক্ত করায় প্রশ্ন জেগেছে রাশিয়া তার সামরিক দর্শন পরিবর্তন করবে কিনা। বিশেষ করে প্যাসিফিক এলাকায় উপকূলীয় প্রতিরক্ষা নীতিতে পরিবর্তন এন তারা গভীর সাগরে যাবে কিনা যে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। পার্থের কারটিন ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক আলেক্সি মুরাভিয়েভ সেটিই মনে করেন। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে রুশ নৌবাহিনী তার শক্তি অনেক বাড়িয়েছে। তারা এখন স্নায়ুযুদ্ধ পর্যায়ে তাদের শক্তি উন্নীত করেছে। তারা এখন যেকোনো সময় ৭০ থেকে ১০০টি রণতরী মোতায়েন করতে পারে। রুশ নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ অ্যাডমিরাল ভ্লাদিমির করোলেভ বলেন, রুশ রণতরীগুলো ২০১৭ সালে সাগরে ছিল ১৭,১০০ দিন। ২০১৬ সালে তা ছিল ১,৫০০ দিন। তিনি বলেন, রুশ নৌবাহিনী এখন দ্রæত স¤প্রসারিত হচ্ছে। তারা দূরপাল্লার কার্যক্রমেও অংশ নিচ্ছে। তারা ভারত মহাসাগর ও এন্টার্টিকায় যাচ্ছে। অবশ্য সোভিয়েত আমলের চেয়ে এখনকার বহরগুলো ছোট। তিনি উল্লেখ করেন, রুশ রণতরীগুলো পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, হর্ন অব আফ্রিকা, কোরাল সাগর, ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক, ও ভূমধ্যসাগরজুড়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। ন্যাটোকে মোকাবিলা করার জন্য ভূমধ্যসাগর, কৃষ্ণসাগর, বাল্টিক ও উত্তর সাগরে নৌশক্তি বাড়ানোর কথা ভাবছে রাশিয়া। তারা প্যাসিফিক বহরও নতুন করে গড়ার পরিকল্পনা করছে। তিনি জানান, ২০০৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত রুশ প্যাসিফিক ফ্লিটে ২৮টি নতুন ইউনিট যুক্ত হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই সহায়ক ও সহযোগী ইউনিট। ২০১৮ সালের দ্বিতীয়ার্ধে রুশ নৌ ইউনিট দুটি উন্নত প্রজেক্ট ২২৮০০ গাইডেড-মিসাইল করভেট, একটি প্রজেক্ট ২১৯৮০ গ্রাচেনক কাউন্টার-সাবোটাজ টহল যান ও কয়েকটি সহায়ক জাহাজ পেতে যাচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলগত সমুদ্র পরিকল্পনায় রয়েছে ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক, পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগর, ভারত মহাসাগর, পারস্য উপসাগর ইত্যাদি। এদিকে বিভিন্ন স্থানে যখন চীন-যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা চলছে, তখন আবার রুশ-চীন নৌসহযোগিতাও দেখা যাচ্ছে। মুরাভিয়েভ বলেন, রুশ-চীন নৌসহযোগিতা আরো বাড়বে। তারা যৌথ মহড়া ও কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে জাহাজ নির্মাণ সহযোগিতা আরো ব্যাপক হবে। সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নৌশক্তির সম্প্রসারণ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ