Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আজ পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনে এলএনজি

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

পরীক্ষামূলকভাবে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। সোমবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টার্মিনালটি এলএনজি সরবরাহ করতে সফল হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এদিকে জাতীয় গ্রীডের সাথে আমদানিকৃত এলএনজি যুক্ত হলেও চাহিদার তুলনায় দিনে প্রায় ৭০ কোটি সিএফটি গ্যাসের সংকট থেকে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফায়জুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমর তারিখ ঘোষণা করি নাই। পরীক্ষামূলকভাবে আমরা পাইপলাইনে এলএনজি সরবরাহ শুরু করেছি। পরীক্ষা শেষে এলএনজি জাতীয় গ্রীডে কবে নাগাদ যোগ হবে,এখনও এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। আরপিজিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, সোমবার থেকে এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টার্মিনালটি এলএনজি সরবরাহ শুরু করেছে। এই কাজকে যারা বাস্তবে রূপ দিয়েছেন, তাদে সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান। কনজ্যুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন,পূর্বের ৫০০ থেকে ৭০০মিলিয়ন সিএফটি গ্যাসের ঘাটতির পাশাপাশি নতুন করে আরো ৫০০মিলিয়ন গ্যাসের চাহিদা বাড়বে। তিনি বলেন, গ্যাসের চাহিদাই যদি না মিটে তাহলে এত ব্যয়বহুল একটা প্রকল্প হাতে নেওয়ার দরকার কি? এলএনজি’র আমদানিকে নির্ভর করে গ্যাসের বাড়বে বই কমনে বলে আমি মনে করি না।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়,২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলার জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ওই মেয়াদের পাঁচ বছরেও তা করতে পারেনি। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এসে অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে এলএনজি টার্মিনাল থেকে আমদানি করা গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে। পরে পেট্রোসেন্টারে সিঙ্গাপুরভিত্তিক অ্যাস্ট্রা অয়েল অ্যান্ড এক্সিলারেট কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ১৫ বছরের জন্য চুক্তিতে অনুস্বাক্ষর করে পেট্রোবাংলা। ১ লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার এলএনজি ধারণ ক্ষমতার এ টার্মিনাল থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। অ্যাস্ট্রা অয়েলকে টার্মিনাল নির্মাণ ও অন্যান্য খরচ হিসেবে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের জন্য শূন্য দশমিক ৪৭ ডলার করে দিতে হবে পেট্রোবাংলাকে। টার্মিনালটি নির্মাণ করার জন্য বিদেশি এ কোম্পানি প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ বাড়বে মনে করছে সরকার।
বর্তমানে দেশের আবাসিক ও শিল্পখাতে প্রতিদিন সরবরাহ হচ্ছে ২৬শ ৪১মিলিয়ন সিএফটি গ্যাস। অথচ চাহিদা রয়েছে ৩৬০০ থেকে ৩৮০০ মিলিয়ন সিফটি গ্যাস। অর্থাৎ ঘাটতি ১০০০ থেকে ১২০০ মিলিয়ন সিএফটি গ্যাস। কিন্তু এলএনজি আমদানি হচ্ছে দিনে ৫০০মিলিয়ন সিএফটি। কার্যত সরবরাহ হবে ৪৫৬ মিলিয়ন সিএফটি বা তারও কম। আবার এলএনজি আমদানি উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যে ডিমান্ড নোট ইস্যু হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। এইসব ডিমান্ড ইস্যু বাস্তবায়ন করতে গেলে আরো ৫০০মিলিয়ন সিএফটি গ্যাসের চাহিদা বাড়বে।
গত ১২ আগস্ট থেকে এলএনজি টেস্টরান শুরু করা হয়েছে। টেস্টরান ঠিকঠাক চললে আজ (১৬ আগস্ট) থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। গত ২৪ এপ্রিল এক্সিলারেট এনার্জি এলএনজির ভাসমান টার্মিনালটি কাতার থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। এরপর ১০ মে প্রথম দফায় এলএনজি সরবরাহের তারিখ ঠিক করা হলেও শেষে তা ঠিক রাখা সম্ভব হয়নি। এরপর কয়েক দফায় সরবরাহের সময় ঠিক করা হলেও এখন পর্যন্ত সরবরাহ শুরু করতে পারেনি এক্সিলারেট এনার্জি। কারণ হিসেবে তারা সাব-সি পাইপলাইন মেরামতের কথা জানিয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় পাইপলাইন মেরামত করা যাচ্ছিল না বলে এই দেরি হচ্ছে বলে তারা দাবি করে। সবঠিক থাকলে আজ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহের কাজ শুরু হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এলএনজি

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৯ নভেম্বর, ২০১৮
১৬ নভেম্বর, ২০১৮
১৩ নভেম্বর, ২০১৮
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ