রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্য সেবা বেহাল দশায় পড়েছে। জনবল সঙ্কটের কারণে অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো, একই অবস্থা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর। এদিকে গত এক সপ্তাহ থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত খয়েরবাড়ি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দাইনার্স শাপলা খাতুন কর্তৃপক্ষ বলতে পারেনি সে কোথায়। গত ৬ আগস্ট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসমাইল হোসেন তাকে সাত দিনের অনুপস্থিত করে শোকজ করলেও সেই নোটিশ পর্যন্ত তাকে দেয়া সম্ভাব হয়নি।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের অফিস সহকারী সাইফুল ইসলাম বলেন শাপলা খাতুনকে শোকজের নোটিশ দিতে গিয়ে পাওয়া যায়নি, তার পক্ষে কেই নোটিশটিও গ্রহণ করেনি। এমনকি শাপলা খাতুনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। শাপলা খাতুনের কর্মস্থল, ২৪ ঘণ্টার প্রসব সেন্টার খয়েরবাড়ি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, গত ৩১ জুলাই থেকে দাই নার্স শাপলা খাতুন অফিসিয়ালি ছুটি না নিয়েই অনুপস্থিত রয়েছেন। পরিবার কল্যান কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার অমল চন্দ্র বলেন, শাপলা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসমাইল হোসেন গত ৬ আগস্ট তাকে অনুপস্থিত করে নোটিশ করেছে, এরপরও সে কর্মস্থলে উপস্থিত হয়নি। তার অনুপস্থিতির কারণে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সন্তানসম্ভবা প্রসূতি মায়েরা।
এই বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা চিকিৎসক ডা: রইচ উদ্দিনের সাথে যোগায়োগ করা হলে তিনি বলেন, দাই নার্স শাপলা খাতুন, উপজেলার তিলবাড়ী গ্রামের জামিদুর রহমানের মেয়ে, সে গত ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর দাইনার্স পদে ফুলবাড়ী পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে চাকরিতে যোগদান করে। এরপর থেকে পারিবারিক ঝামেলা শুরু হলে কয়েক দফায় সে (শাপলা খাতুন) অফিসের বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থেকেছে, এই জন্য তাকে কর্তৃপক্ষ কয়েক দফা বেতন কাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার শাস্তি দিয়েছে, শাস্তির অংশ হিসেবে গত ২৫ জুন তাকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে, খয়েরবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেপুুটশনে বদলি করা হয়েছে। সেখানে গিয়েও একই অবস্থার সৃষ্টি করল। একজন দাই নার্স একটানা সাতদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে সেবা নিতে আসা প্রসূতি মায়েরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঝুঁকিতে পড়ছেন।
দেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। বর্তমানে দেশে ১৩ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ছয় হাজার মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজননস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অযত্ম, অবহেলা এবং কিছু মানুষের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে এর যে মূল উদ্দেশ্য, তা আজ ব্যাহত হচ্ছে। মুখ থুবড়ে পড়ছে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসমাইল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই দাই নার্স শাপলা খাতুনের অনুপস্থিতির জন্য চাকরি বিধি অনুযায়ী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ঘুরে দেখা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায়, একই ব্যক্তি একাধিক কমিউনিটি ক্লিনিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন, সে কারণে সপ্তাহের অধিকাংশ সময় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ থাকে। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।