Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চামড়া বাজারে অস্থিরতা

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

চামড়া শিল্প বিরাট সম্ভাবনাময়। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে চামড়া শিল্প। কিন্তু এ শিল্পের সার্বিক উন্নয়ন, গতিশীলতা ও শৃঙ্খলায় চামড়ার বাজার ব্যবস্থাপনাও গড়ে ওঠেনি আজো। প্রতিবার ভরা মৌসুমে নানা সমস্যা সংকট ভর করে। এবারও চামড়া বাজারে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। কোনোভাবেই মন্দাভাব কাটছে না। যারা মাঠ থেকে চামড়া সংগ্রহ করে তাদের মন ভালো নেই।
এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত থাকবে কিনা তা নিয়েও ভাবনা বাসা বেধেছে। এর আগে জড়িতরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন। কোথায় সমস্যা, কেন সংকট, অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা তা কখনো খতিয়ে দেখা হয় না বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, বাংলাদেশের গরু ও ছাগলের চামড়া খুবই উন্নতমানের। বিশেষ করে বাছাই করা গরু ও ছাগল কোরবানী দেয়ায় ওই চামড়া খুবই ভালো। বরাবরই চামড়া ও চামড়াজাত শিল্প পণ্যের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। কোরবানীর পশুর চামড়া থেকেই মুলত দেশের মোট চামড়ার চাহিদা পুরণ হয়ে থাকে। নানা কারণে দিনে দিনে পিছিয়ে পড়ছে সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্প। এ মন্তব্য করেছেন সচেতন, পর্যবেক্ষক মহল ও চামড়া শিল্পের সাথে জড়িতরা। তারা এ শিল্পের দৈন্যদশা কাটাতে সরকারকে জোরদার ভুমিকা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আজকালের মধ্যে চামড়া বাজারে অস্থিরতা কাটানোর পদক্ষেপ নেয়ারও তাগিদ দিয়েছেন। বিশেষ করে যারা মাঠ থেকে চামড়া সংগ্রহ করা ক্ষুদে ব্যবসাীদের পুঁজি সংকট কাটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে জরুরিভাবে।
চামড়া বাজারে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা তুলে ধরে কয়েকজন ব্যবসায়ী দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মূল সমস্যা ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের পুঁজি সংকট ও চামড়া পচন ঠেকাতে যে লবন ব্যবহার করা হয় এবার তার দাম প্রায় দ্বিগুণ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চামড়ার বড় হাট যশোরের রাজারহাটের চামড়া ব্যবসায়ী নাজির আহমেদসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, শুধু যশোরের ব্যবসায়ীদের ট্যানারী মালিকদের কাছে প্রায় ১০কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। যশোর অঞ্চল থেকে ছোট বড় ও ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা ঢাকায় ট্যানারী মালিকদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। তারা টাকা হাতে পেয়ে কখন কিভাবে পাওনা পরিশোধ করবেন তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। সম্পুর্ণ টাকা পাওয়া যাবে কিনা তাও বলা যাচ্ছে না। শুধু যশোর মোকামের ব্যবসায়ী নয় ট্যানারী মালিকদের কাছে টাকার জন্য বসে আছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মাঠপর্যায়ের চমড়া ব্যবসায়ীরা। ট্যানারী মালিকদের বক্তব্য, অর্থ সংকটের কারণে ট্যানারী মালিকরা মাঠের ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের বকেয়া পরিশাধ করতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, এসব কারণে এবার কোরবানির পশুর চামড়া বেচাকেনায় নানামুখী সমস্যা হবে এমন ধারণা বদ্ধমূল মাঠপর্যায়ে। আসলে চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পের স্বার্থে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি দেয়া জরুরি ছিল। গতবারও ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক অনেক ট্যানারী মালিক মাঠের ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ করেনি। যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ চামড়া বাজারে কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবারই একই সমস্যা ও সংকটে পড়তে হয়। কথা দেয়া হয় এবার ব্যবস্থা নেয়া হবে। সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করা হবে। কয়েকজন ক্ষুদে ব্যবসায়ীর কথা, এবার চামড়া বাজারে সবচেয়ে বেশী অস্থিরতা। এর সুযোগ নেয়ার জন্য নানা ফন্দিফিকির আঁটছে ভারতীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চামড়া

১৩ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ