Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মোট মামলা ৪৬, মাদক ৩৯টি

হাতিরঝিল থানার ১ মাস

আবদুল্লাহ আল মামুন | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৮, ১:০৫ এএম

অপরাধ কমায় স্বস্তিতে বাসীন্দারা

 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৫০ তম থানা হিসেবে যাত্রা শুরুর পর ৭ আগস্ট এক মাস পূর্ণ করেছে হাতিরঝিল থানা। গত ৭ জুলাই মহা ধুমধামে থানাটি চালু হয়েছিল। থানাটি গঠনের পরে মধুবাগ, উলন, মহানগর প্রজেক্ট, বেগুনবাড়ি, নয়াটোলাসহ পুরো হাতিরঝিল এলাকার অপরাধ অনেকটা কমে গেছে। কাছাকাছি থানা হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয় বাসীন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় বাসীন্দা ও পুলিশের ভাষ্য, হাতিরঝিল আগে থেকেই একটি মাদক ও অপরাধ প্রবণ এলাকা। তবে থানাটি হওয়ার পর থেকে অপরাধ হ্রাস পাওয়াসহ এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
থানা সূত্র জানায়, উদ্বোধনের পরে ৬ আগস্ট পর্যন্ত থানায় মোট ৪৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯টি মাদক, ৩টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ২টি চুরি ও ২টি অন্যান্য মামলা। এ সময়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে ১ হাজার ৪১৩টি। যার বেশিরভাগই হারানো সংক্রান্ত। এ সব মামলার মধ্যে জুলাই মাসে ৩৮টি মামলা ও আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ৮টি মামলা রেকর্ড হয়। এছাড়া জুলাই মাসে জিডি রেকর্ড হয় ১ হাজার ৯১টি এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল ৩২২টি। ৩০ জন কর্মী ও ৮টি গাড়ি নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), পরিদর্শক তদন্ত একজন ও একজন পরিদর্শক অপারেশনসহ ২ জন পরিদর্শক ১৬ জন এসআই, ২৩ জন এএসআইসহ অর্ধশতাধিক কর্মী রয়েছে।
থানা সূত্র জানায়, এলাকাটি মাদক প্রবণ হিসেবে মাদকের মোট মামলার মধ্যে মাদকের মামলা বেশি। প্রধানমন্ত্রীর মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কারণে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে চিরুনী অভিযান চলছে। এছাড়া পারিবারিক সমস্যা নিয়ে কেউ থানায় আসলে সরাসরি মামলা গ্রহন না করে পারিবারিকভাবে বিষয়গুলো মিমাংশার জন্য থানা থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়।
গত সোমবার থানাটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে অভিযোগ নিয়ে এসেছেন থানায়। তবে বেশিরভাগ অভিযোগ ছিল হারানো সংক্রান্ত। কয়েকজন নারী এসেছেন স্বামীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে। তবে পুলিশ সরাসরি তাদের মামলা গ্রহন না করে পারিবারিকভাবে বিষয়টি মিমাংশার পরামর্শ দিচ্ছেলেন। হালিমা বেগম নামে এক গৃহবধূ জানান, তার স্বামী অন্য নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে রোজই তাকে মারধর করে। তিনি স্বামীকে তালাক না দিয়ে শাস্তির মাধ্যমে স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান। তখন পুলিশ তাকে পরিবারের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন।
স্থানীয় বাসীন্দারা জানান, আগে জিডি বা মামলাসহ যে কোন ধরণের আইনি সহায়তার জন্য রমনা মডেল থানায় যেতে হতো। এখন কাছাকাছি থানা হওয়ায় ভোগান্তি অনেকটা কমে গেছে। স্থানীয়রা জানান, আগে মীরবাগ, মধুবাগ, উলন, নয়াটোলা এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত বখাটেরা আড্ডা দিতো। সুযোগ পেলেই তারা সর্বস্ব লুফে নিতো। কিন্তু হাতিরঝিল থানা হওয়ার পরে এই এলাকাগুলোতে সর্বক্ষণিক পুলিশ টহলে থাকে। ফলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে না।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষিকা মারজিয়া ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আগে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বখাটেরা দাঁড়িয়ে থেকে স্কুল ছাত্রী থেকে মধ্য বয়েসী নারীদেরও টিজ করতো। থানাটি হওয়ার কারণে বখাটের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে বলে তিনি জানান।
হাতিরঝিল থানার ওসি আবু মো. ফজলুর করিম ইনকিলাবকে বলেন, থানাটি নতুন হলেও তেমন কোন চ্যালেঞ্জ দেখছি না। সব কিছু স্বাভাবিক নিয়ে এলাকর শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কাজ করছে। আমরা জনগণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। এই থানায় মাদক সংক্রান্ত অপরাধ বেশি। এজন্য মাদক বিরোধী অভিযানকে অগ্রাধিকার দিয়ে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ, ইভটিজিং, নারী নির্যাতন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের আইনের আানার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া জনবল ও গাড়ি যা আছে তা দিয়ে এখন পর্যন্ত ভালোই চলছে। ক্রমন্বায়ে লোকবল ও যানবাহন বৃদ্ধি করা হবে বলে তিনি জানান।
##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদক

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ