Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যর্থতার আবর্তেই ঘুরছে বার্সেলোনা!

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : অবশেষে ৫১৫ মিনিটের গোলক্ষরা কাটালেন লিওনেল মেসি। একই সাথে তিনি স্পর্শ করলেন ক্যারিয়ারের ৫০০ গোলের মাইলফলক। কিন্তু গৌরবময় এই অর্জন উদযাপনের কোন উপলক্ষই পেলেন না বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন তারকা। উল্টো ফুটবল জাদুকরকে সাক্ষী হতে হল ১৩ বছর পর তার দল বার্সাকে লা লিগায় টানা তিন ম্যাচ হারের। তাও আবার ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে।পরশু মেসির ঐ একমাত্র গোল বার্সেলোনর পরাজয় এড়ানোর জন্য যথেষ্ঠ ছিল না। তার আগেই যে দু’টি গোল হজম করতে হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।
ঠিক আড়াই মাস আগে এই ভ্যালেন্সিয়াকেই তো ন্যু ক্যাম্পে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই আর এই বার্সাই এখন কত ফারাক! টানা ৫ ম্যাচ পর গোল খরা কাটালেন মেসি। লা লিগায় সুয়ারেজ গোল পাচ্ছেন না টানা ৬ ম্যাচ! নেইমারের পায়েও গোল নেই টানা ৫ ম্যাচে। অথচ কেই যে খারাপ খেলছেন তাও ঠিক বলা যাবে না। সবই ঠিক আছে। সেই খোলোয়াড়, কোচ। অথচ কি যেন নেই, কোথায় ছন্দপতন! ক’দিন আগেও যে দল টানা দ্বিতীয়বারের মত ট্রেবল জয়ের স্বপ্নে ছিল বিভোর, সেই দলের সামনে ডাবল জয়-ই এখন হুমকির মুখে। না, লিগ শিরোপা জয়ের সম্ভবনা এখনো মিলিয়ে যায়নি। খাতা কলমের হিসাবে বরং বার্সারই সুযোগটা বেশি। তবে জিততে হবে বাকি ৫ ম্যাচই। কিন্তু ৭ বছর পর টানা ৪ ম্যাচ পরাজয়ের আবর্তে ঘুরতে থাকা বার্সার সামনে যে সেটা আরেক চ্যালেঞ্জ! এরই মধ্যে তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাষ ফেলেছে রিয়াল ও অ্যাটলেটিকো। ৩৩ রাউন্ড শেষে বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকোর সংগ্রহ সমান ৭৬ পয়েন্ট, তবে গোল ব্যবধান এগিয়ে রেখেছে কাতালান দলটিকে। ১২ পয়েন্টের দুরত্ব ঘুচিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ এখন মাত্র এক পয়েন্ট পিছনে। পা হড়কানোর আর কোনই সুযোগ নেই লুইস এনরিকের দলের।
অথচ ন্যু ক্যাম্পে অথবা টিভি পর্দায় এদিন যারা ম্যাচের সাক্ষী হয়েছেন তারা দেখেছেন, প্রতিপক্ষ শিবিরে একের পর এক ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর হানা। মনে হচ্ছিল গোল পাওয়া তাদের কাছে সময়ের ব্যপার। কিন্তু ম্যাচের ২৬তম মিনিটে ইভান রাকিতিস যে গোলটি করলেন তা প্রতিপক্ষের জালে নয়, নিজেদের জালে। প্রতিপক্ষের আক্রমনে বাঁধ সাধতে গিয়ে বল তার নিজের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। গোলরক্ষক ক্লাদিওর ব্রাভো বলে সামান্ন আঙ্গুল ছোঁয়ালেও তা ফেরত পাঠানোর কোন সুযোগ ছিল না। আর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সান্তি মিনার গোল ছিল স্বাগতিক রক্ষনের দুর্বলতার স্পষ্ট নিদর্শন। ঐ গোলই যেন বার্সার অফিসিয়ালকে বলে গেল আসছে দলবদলে রক্ষণের খেলোয়াড় কেনা তাদের অত্যাবশ্যক। তাছাড়া দ্বিতীয় গোলকে দানি আলভেজের দলের বাইরে রাখার খেসারতও বলা যায়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর সং সেজে হার নিয়ে উদ্ভট মন্তব্য ইনস্টাগ্রামে পোষ্ট করেছিলেন আলভেজ। তারই সাজা স্বরূপ এদিন বেঞ্চে বসে কাটাতে হয় তাকে। ব্রাজিলিয়ান রাইট ব্যাকের পরিবর্তে দলে নেয়া হয় সার্জিও রবার্তোকে। রবার্তো আদতে একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। অথচ তাকে এদিন খেলানো হয় ফুল ব্যাক হিসাবে। মাঠে তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল এই পজিসনে তিনি মোটেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। নইলে প্রতিপক্ষ ফরোয়ার্ড মিনা ওভাবে ভেতরে ঢুকতে পারে?
এর আগে পরে গোলের একাধিক সহজ সুযোগ তৈরী করেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক সার্জিও আলভেসও যেন এদিন ছিলেন নিজের সেরা ফর্মে, একেরারে চীনের প্রাচীরের ন্যায়। কখনো মেসি, কখনো নেইমার আবার কখনো সুয়ারেজ বা রাকিতিসের নিশ্চিত গোলের সুযোগ নিপুঁণ দক্ষতায় ন্যাস্যাৎ করেছেন ব্রাজিল জাতীয় দলের এই গোলরক্ষক। শেষ সময়ে পিকের শটও ব্যর্থ করে দিয়ে দিনের অন্যতম নায়ক আলভেসই।
ব্যার্থতার আবর্তে দল এভাবে ঘুরতে থাকার পরও শিরোপার ব্যাপারে আশাবাদী বার্সা কোচ এনরিকেÑ ‘আমাদেরকে শক্ত থাকতে হবে। শেষ ৫ ম্যাচে আমাদের জয় দরকার এবং আমি জানি আমরা সেটা পারব।’ একই সাথে ম্যাচের ফল মেনে নিয়ে ৪৩ বছর বয়সী বলেনÑ ‘আমরা গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট খুইয়েছি যা আমাদের পাওয়া উচিত ছিল কিন্তু ফুটবল এমনি।’
তাদের সাথে অ্যাটলেটিকোও ছুটছে অভিন্ন লক্ষ্যে। সেই লক্ষ্যে দিনের অপর ম্যাচে গ্রানাদাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ডিয়েগো সিমিওনের দল। গোল করেন কোকে, ফার্নান্ডো তোরেস ও অ্যাঞ্জেল কোরেয়া।
৩৩ ম্যাচ শেষে লা লিগার শীর্ষ চার

দল জয় ড্র পরাজয় গোল ব্যবধান পয়েন্ট
বার্সেলোনা ২৪ ৪ ৫ ৫৯ ৭৬
অ্যাট. মাদ্রিদ ২৪ ৪ ৫ ৪১ ৭৬
রিয়াল মাদ্রিদ ২৩ ৬ ৪ ৬৮ ৭৫
ভিয়ারিয়াল ১৭ ৯ ৭ ১৪ ৬০



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যর্থতার আবর্তেই ঘুরছে বার্সেলোনা!
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ