নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সফরকারী দল হিসেবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ফ্লোরিডায় শেষ দুই ম্যাচের গ্যালারি দেখলে কে বলবে অফিসিয়ালী স্বাগতিক দলের নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ! পুরো গ্যালারি লাল-সবুজ পতাকাময়। পনেরো-বিশ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়াম অনেকটাই পূর্ণ। হ্যাঁ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলেরও সমর্থক ছিলেন ঢের। পার্শ্ববর্তী ক্যারিবীয় দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়া মানুষের সংখ্যাও তো কম নয়। তবে গলা ফাটানোতে তারা অনেকবারই হেরে গেলেন বাংলাদেশের সমর্থকদের কাছে। শুধু মাঠে নয়, গ্যালারিতেও বিজয়ী দলটার নাম কিন্তু বাংলাদেশ!
বাংলাদেশকে সমর্থন জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ফ্লোরিডায় উপস্থিত হয়েছিলেন হাজার পাঁচেকের মত সমর্থক। ম্যাচের পুরো সময় সাকিব-তামিমদের সমর্থন জুগিয়ে গেছেন তারা। দিয়ে গেছেন ‘হোমলি ফিলিংস’। প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে গিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম সফরেই দুর্দান্ত ফল, উইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছেন সাকিবরা। দলকে উৎসাহ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্য থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঢল নেমেছিল ফ্লোরিডায়। বিপুলসংখ্যক প্রবাসীর এই উপস্থিতি অভিভূত করেছে দলকে। সাকিব বলছেন, রীতিমতো দ্বাদশ খেলোয়াড়ের ভূমিকা রেখেছেন দর্শকেরা।
প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ খেলতে যাবে, আগ থেকেই এ নিয়ে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছিল দেশের ক্রিকেটে। ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ দলকে সমর্থন জানাতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি আসবেন, আগ থেকে অনুমান করা যাচ্ছিল। সত্যি তাই হলো, বাংলাদেশ দলকে সমর্থন দিতে লডারহিলে দর্শকদের যে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি, সাকিবদের মনে হয়েছে, তাঁরা বুঝি মিরপুরেই খেলছেন।
সেন্ট কিটসে প্রথম ম্যাচ হেরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে পিছিয়ে ফ্লোরিডায় এসেছিল বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে ‘দেশ’ পেয়ে পালটে যায় চেহারা। ফ্লোরিডার লডারহিলে এসেই সাকিবরা দেখা দিলেন অন্য চেহারায়। বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঢল নেমেছিল ফ্লোরিডায়। লডারহিলের গ্যালারি পরিণত হয়েছিল এক টুকরো বাংলাদেশে। লাল-সবুজ পতাকা, জার্সি, বাংলায় লেখা প্ল্যাকার্ড, এমনকি স্টেডিয়ামে বাংলা গান, কে বলবে এটা ফ্লোরিডা! পনেরো-বিশ হাজার ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়াম অনেকটাই পূর্ণ। আর তাতে বাংলাদেশের সমর্থকদের আধিক্য।
পেছনে যদি দর্শকদের বিপুল সমর্থন থাকে, খেলোয়াড়েরা এমনিই উজ্জীবিত হন। সাকিবরাও হয়েছেন। তাই তো পিছিয়ে পড়ার পরও দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১২ রানে জেতার পর তৃতীয়টিতে ডি/এল মেথডে ১৯ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। জয়ের ব্যবধানের চেয়েও দেখার মত ছিল জেতার ধরন। এই দুই ম্যাচেই দাপট দেখিয়েছে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছেন, ‘দর্শকদের সমর্থন বিরাট ব্যাপার। কখনোই মনে হয়নি, আমরা দেশের বাইরে খেলছি। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে খেলছি।’
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি জিতে বাংলাদেশ অধিনায়কের আশা ছিল, সিরিজনির্ধারণী ম্যাচেও বিপুল বাংলাদেশি দর্শক আসবে। এসেছেও। সাকিবদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে। দর্শকদের ভালোবাসার জবাব বাংলাদেশ দিয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে, ম্যাচের পর ‘ল্যাপ অব অনার’ দিয়ে। দর্শকেরা যেভাবে অনুপ্রাণিত করেছে, ম্যাচ শেষে সাকিব কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি, ‘কখনোই মনে হয়নি আমরা দেশের বাইরে খেলছি। দর্শকদের ধন্যবাদ। তারা আমাদের দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে উপস্থিত ছিল মাঠে।’
শুধু খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি দর্শকেরা; দেশের চলমান আন্দোলন স্পর্শ করছে সাত সমুদ্র ওপারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও। আন্দোলনের সমর্থনে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির হয়েছেন, ¯েøাগান দিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশে নিরাপদ সড়ক চাই’। মার্কিন মুলুকে প্রথমবারের খেলতে যাওয়া, উইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত সিরিজ জয়- স্মরণীয় হয়ে থাকল বাংলাদেশ দলের যুক্তরাষ্ট্র সফরটা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।