Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভিড় বেড়েছে বিআরটিএ-তে লাইসেন্স-ফিটনেস সনদ আবেদন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:৫৫ এএম

পুলিশ যা পারেনি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তা পরেছে। লাইসেন্স ও ফিটনেস সনদের জন্য ভিড় লেগেছে বিআরটিএ তে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মাত্র পাঁচ দিনে দেখিয়ে দিয়েছে চাইলে সবকিছু নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলতে পারে। ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা, অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করে তারা প্রমাণ করেছে পুলিশ চায় না তাই হয় না।
জানা গেছে, লাইসেন্সবিহীন চালক ও গাড়ি সড়কে নয়, ছাত্রদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে ভিড় বেড়েছে বিআরটিএ-তে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন শুরুর পর থেকেই ভিড় বেড়েছে। আর গতকাল সপ্তাহের প্রথম দিনে অন্যৗান্য দিনের তুলনায় লাইসেন্সসহ বিভিন্ন বৈধ ডকুমেন্ট তৈরির আবেদন বেড়েছে কয়েকগুণ।
সরেজমিনে বিআরটিএ সার্কেল-১ কার্যালয়, মিরপুরে গিয়ে দেখা যায় উপচেপড়া ভিড়। গাড়ি আর লোকজনের সমাগমে স্বস্তিকতে দাঁড়ানোর মতো জায়গা নেই। প্রাইভেটকারের লাইনের শেষ মাথা গিয়ে ঠেকেছে পুলিশ কনভেনশন সেন্টারের সামনে। আর ভেতরে মোটরসাইকেলসহ অন্য গাড়ির জন্য চলাচল করাই কষ্টসাধ্য।
কাউন্টারে আগতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাইভেটকারের বেশির ভাগই এসেছে ফিটনেস সার্টিফিকেট আর মালিকানা পরিবর্তনের জন্য। অনেকেই এসেছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স, কেউবা ডিজিটাল নম্বর প্লেট, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্ড করতে। অনেকেই এসেছেন লার্নার কার্ডের জন্য। প্রতিটি বুথেই ভিড়।
সকাল থেকেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ সারছেন আগতরা। হঠাৎ বাড়তি লোকের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বিআরটিএ।
বিআরটিএ-এর উপ-পরিচালক মোঃ মাসুদ আলম বলেন, আমরা স্পেশাল ড্রাইভ দিচ্ছি। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরুর পর থেকে আমাদের পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। সব মিলিয়ে গত তিনদিনে ব্যাপক আবেদন পড়ছে।
সহকারী পরিচালক আলী আহসান মিলন বলেন, আগে প্রতিদিন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য গড়ে ১১০টির মতো আবেদন পড়তো। এখন প্রতিদিন পড়ছে ২৩০টির মতো। নবায়নের জন্য আগে ৫০টি আবেদন পড়তো, এখন পড়ছে ৯০টির িেশ। ফিটনেস সনদ নিতে আগে প্রতিদিন আবেদন পড়তো ৯শ। এখন পড়ছে ১ হাজার ৪শ।
এছাড়া মালিকানা পরিবর্তন, ডিজিটাল নম্বর প্লেট, ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি কাজেও আবেদন বেড়েছে। এটি একটি বিরাট সাফল্য। তবে এই চাপ সামলানোর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল নেই। আগের লোকবল দিয়েই সব সামলানো হচ্ছে।
এটাকে সাফল্য হিসাবে দেখলেও বিআরটিএ নিয়ে ভুক্তভোগিদের অভিযোগের অন্ত নেই। কয়েকজন বলেন, এখানে কোনো কাজই সময়মতো হয় না। ছোটখাটো ভুল বা তুচ্ছ কারণে দিনের পর দিন এখানে ঘুরতে হয়। মূলত এসব কারণেই অনেকেই বৈধ কাগজপত্র করতে চান না। দালাল ধরলে তাড়াতাড়ি কাজ হয়। দালাল না ধরলে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা চলমান আন্দোলনে জনসাধারণের সঙ্গে বাজে আচরণ না করেও যে শৃঙ্খলা রক্ষা করা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছে। গত সাতদিনে প্রায় সবাই গাড়ি নিয়ে বেরুলে সঙ্গে রেখেছেন বৈধ কাগজপত্র। কেউ বৈধ কাগজ না রাখায় তাদের কাছে লজ্জায় পড়ে পরের দিন আর কাগজ ছাড়া বের হননি।
গত কয়েকদিনে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গাড়ির কাগজ না রাখায় ট্রাফিক পুলিশকে মামলা নিতে বাধ্য করেছে। উল্টোপথযাত্রী মন্ত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছে। গাড়ি আটকে থানায় দিয়েছে। তাদের এমন কর্মযজ্ঞে সবার মানসপটেই এক শৃঙ্খলার রূপরেখার উদয় হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছে দিয়েছে। তাই ঘোষণা করা হয়েছে ট্রাফিক সপ্তাহ। গতকাল রোববার থেকে এই ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হয়েছে।



 

Show all comments
  • সাদ্দাম ৬ আগস্ট, ২০১৮, ৫:৪৪ এএম says : 0
    প্রিয় বিআরটিএ কর্মকর্তা/কর্মচারী ভাই ও বোন দেশের স্বার্থে না হোক নিজের এবং সন্তানের স্বর্থে যথাযথ পরীক্ষা নিয়ে লাইসেন্স এবং ফিটনেস সনদ দিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিআরটিএ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ