Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মারাত্মক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে মমো

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

মমো ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী- আমেরিকা থেকে ফ্রান্স কিংবা আর্জেন্টিনা থেকে নেপাল। স্পেনে পুলিশও এ ধরনের গেম উপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে নাগরিকদের। মেক্সিকোর মতো স্পেনও টুইটারে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে এবং লোকজনকে এ খেলায় অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। হ্যাশট্যাগ ইগনোর ননসেন্স দিয়ে চলছে প্রচার, যাতে বলা হচ্ছে- ডোন্ট অ্যাড মমো টু ইওর কন্টাক্টস। মমোর এমন বিস্তার নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। বার্তা আদান-প্রদানের জনপ্রিয় অ্যাপলিকেশন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মমো নামে একটি অনলাইন গেম নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকায়। নতুন এই গেমকে বিশ্লেষকরা বøু হোয়েলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। সম্প্রতি আর্জেন্টিনার রাজধানীতে একটি মেয়েশিশুর আত্মহত্যার জন্য এই মমো গেমকে দায়ী করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এ খেলা মানুষকে মারাত্মক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদিও এর মধ্যেই এটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছে। মমো দেখতেই ভীতিকর। গায়ের চামড়া ফ্যাকাসে। চোখে অশুভ হাসি এবং বাইরের দিকে প্রসারিত লাল লাল চোখ। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তার চেহারা বিখ্যাত হয়ে উঠেছে সারা পৃথিবীতে। হুট করে এটি আপনার কম্পিউটারের স্ক্রিনে ভেসে উঠতে পারে এবং গেমে অংশ নিতে প্রলুব্ধ করতে পারে। কিন্তু সেটি করলেই আপনি বোকা বনে যাবেন। এ গেম অন্যকে না পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার কর্তৃপক্ষ। কারণ তারা বলছেন- এই অনলাইন গেম কাউকে অনেক খারাপ অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে। মেক্সিকোর একটি পুলিশ ইউনিট যারা অনলাইন অপরাধ নিয়ে কাজ করে, তারা বলছেন- এটি শুরু হয়েছে ফেসবুকে। মেক্সিকোর পুলিশ বলছে, অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছে যে মমোতে বার্তা পাঠানোর পর সে সহিংস ছবি পাঠাবে। অনেকে হুমকিমূলক বার্তা পেয়েছেন। কখনও কখনও ব্যক্তিগত তথ্যও ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রেডিট বলছে- তাদের সবচেয়ে পড়া হয়েছে, এমন পোস্টগুলোর একটি হল হোয়াটসঅ্যাপ বালিকা মমো কি ও কে? রেডিট বলছে, একটি ভিডিও পেয়েছি এটি সম্পর্কে এবং এটি ভীতিকর। সবচেয়ে জনপ্রিয় জবাব ছিল, স্প্যানিশভাষী কোন দেশ থেকে একজন ইনস্টাগ্রাম থেকে একটি ছবি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। লোকজন সেখান থেকে একটি কন্টাক্ট নাম্বার পায় ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে তুমি একে স্পর্শ করলে সে তোমাকে গ্রাফিক ছবি ও বার্তা দেবে। কেউ কেউ বলেন যে, আপনার সব ব্যক্তিগত তথ্যে তার প্রবেশাধিকারের সুযোগ আছে। ইউটিউবার রেইনবট যার পাঁচ লাখেরও বেশি ফলোয়ার আছে তিনি এ বিষয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করে গত ১১ জুলাই। এ ভিডিওটি দেখেছে পনেরো লাখেরও বেশি মানুষ কিন্তু তিনিও আসলে জানেন না কে এই মমোর স্রষ্টা। অর্থাৎ মমো কে তৈরি করেছেন সেটি তারও জানা নেই। এখন যতটুকু জানা যাচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপ গেমটি জাপানের কোডসংবলিত তিনটি ফোন নাম্বারের, কলম্বিয়ার কোডসংবলিত দুটি আর মেক্সিকোর কোডসংবলিত আরেকটি নাম্বারের সঙ্গে সংযুক্ত। আর ছবিটি নেয়া হয়েছে টোকিওর একটি প্রদর্শনী থেকে। মমোর ভীত চাহনির মুখ একটি পাখি মানবীর মূর্তিকে তুলে ধরে। ২০১৬ সালে টোকিওতে ভ্যানিলা গ্যালারিতে একটি প্রদর্শনীর অংশ ছিল এটি। দুই বছর আগে আরেকটি প্রদর্শনীতে মমো ছিল বিশেষ আকর্ষণ। বহু মানুষ মমোর সঙ্গে পোজ দিয়ে ছবি তুলেছে এবং এমন বহু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত হয়েছে। এখন মেক্সিকোর পুলিশ বলছে, কেউ ইনস্টাগ্রাম থেকে ওই অনুষ্ঠানের ছবি নিয়ে সেটিকেই কেটেকুটে এমন বানিয়েছে। মেক্সিকোর পুলিশ বলছে, অপরিচিত কোনো নাম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ ভালো কিছু না। তবে এর বাইরেও অন্তত পাঁচটি কারণে মমোকে উপেক্ষা করা উচিত বলে মনে করে তারা। এতে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে। এমনকি আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করতে পারে। ব্যবহারকারী হয়রানির শিকার হতে পারেন, চাঁদাবাজির শিকার হতে পারেন এবং ব্যবহারকারী মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ