Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাপানে আরো ভূমিকম্পের আশঙ্কা

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : শক্তিশালী দুই ভূমিকম্পের পর জাপানে ফের বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। জাপানের জরুরি বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, সামনের দিনগুলোতেও শক্তিশালী ভূমিকম্পের আশঙ্কা আছে। গত দুই দিনে ভূমিকম্পে আহতদের চিকিৎসা এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ চলছে। তবে পাহাড় ধসের কারণে উদ্ধারকাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। জাপান রেড ক্রস সোসাইটির উপদেষ্টা নাওকি কোকোআওয়াই বলেন, নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাতে জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের কিয়ুশু এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ওপরে দুটি ভূমিকম্প হয়। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪২ জন। আহত হয়েছেন আন্তত এক হাজার মানুষ।
দুই ভূমিকম্পে জাপানের কিয়ুশু এলাকার শতাধিক বাড়ি, সড়ক ও সেতু ভেঙে পড়েছে। ওই এলাকায় উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, ১১ ব্যক্তি এখনো নিখোঁজ। স্থানীয় সময় আজ সোমবার পার্লামেন্টের ভাষণে জাপানের প্রেসিডেন্ট শিনজো আবে বলেছেন, মানুষকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। একই সঙ্গে তিনি কিয়ুশুকে দুর্যোগগ্রস্ত অঞ্চল ঘোষণা তার ইচ্ছার কথা বলেন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলে সহায়তা পাঠাতে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।
খবরে বলা হয়, দুই দফা ভূমিকম্পে ৪১ জন নিহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে জাপানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কুমামতো। গতকাল সোমবার সকাল থেকে ধসে পড়া রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর মেরামতে কাজ শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর (এসডিএফ) ২৫ হাজার সদস্য। তাদের সঙ্গে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সাধারণ মানুষকে রাস্তার উপর পড়ে থাকা গাছপালা ও ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা সাড়ে তিন লাখ মানুষও ফেরা শুরু করেছেন। দুই দফা বড় ভূমিকম্পের পাশাপাশি প্রায় পাঁচশবার পরাঘাতের মধ্যে তাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ায় প্রাণহানি কমলেও ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিতে ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতে অনেক সময় লেগে যাবে বলে ধারণা করছেন এসডিএফের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সত্যি এটি ভয়ানক দুর্যোগ। আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে এই দুর্যোগ মোকাবেলায় তৎপর রয়েছি।
ভবিষ্যৎ বিপর্যয় এড়াতে আরও দুই-একদিন আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হবে বলেও তিনি জানান। সেখানে ত্রাণ-সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ভূমিকম্পে নিখোঁজ থাকা ১১ জনকে উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম দফায় ৬ দশমিক ৫ মাত্রার পর শনিবার ভোরে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংস্তস্তূপে পরিণত হয় এ প্রদেশ। সরকারি হিসেবে, দুদিনের ভূমিকম্পে ৯০টি বাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৮০০ বাড়ি। সেতু ও রাস্তাঘাট ভেঙে পড়েছে, উপড়ে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি। তীব্র আকার ধারণ করেছে সুপেয় জলের সঙ্কট।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কুমামতোর মাইশি এলাকায়। এর বাইরে অইতা ও মিয়াজাকি প্রদেশে দুই লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে সোমবার জাপানের পার্লামেন্টে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও সংসদ সদস্যরা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবলসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা শোক প্রকাশ করে বার্তা পাঠিয়েছেন; ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাপানে আরো ভূমিকম্পের আশঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ