মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল চীনের সাথে সম্পর্ক জোরদার ও উন্নত করার ইচ্ছা জানিয়ে গত সপ্তাহে ম্যান্ডারিন ভাষায় টুইট করেছিল। পাকিস্তানের একটি সংবাদপত্র প্রথমবারের মত খবরটি প্রকাশ করে একে এক নজিরবিহীন ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছে। চীনা মিডিয়া সপ্তাহান্তে শিরোনাম করে এ খবর ছাপার পর একে অত্যন্ত ভালো লক্ষণ হিসেবে দেখছে। সম্পর্ক জোরদার এবং লাখ লাখ পাকিস্তানিকে দারিদ্র মুক্ত করতে চীনা মডেল অনুসরণে ইমরানের কথা চীনের পত্রিকায় খবর হয়েছে। চীনা মিডিয়া এ অ-পুঁজিবাদী প্রতিশ্রুতিকে এমন বড় করে দেখছে যার মানে ইমরান খান চীনের দিকে আরো বেশি করে ঝুঁকবেন। প্রভাবশালী রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস আস্থা প্রকাশক একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে যার শিরোনাম ‘চীন-পকিস্তান সম্পর্ক, অর্থনৈতিক করিডোর টেকসই হবে ’ এবং আরেকটির আশাব্যঞ্জক শিরোনাম হল ‘ ইমরান খান কি পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করবেন?’ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস ২৭ জুলাই পাকিস্তানের স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২৮ মিনিটে পাঠানো পিটিআই-র ম্যান্ডারিন ভাষার টুইটের জবাব দিয়েছে ইংরেজিতে। পাকিস্তানের দি নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানায়, গ্লোবাল টাইমস-এর প্রধান সম্পাদক হু সিজিন বলেন, আমরা এ নতুন সংকেত লক্ষ্য করেছি।
গ্লোবাল টাইমসের এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে ইমরান খানের দলের ইংরেজি নাম উল্লেখ করে বলা হয়, মুভমেন্ট ফর জাস্টিস পার্টির বিজয় পাকিস্তানে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা... এটি আরেকবার দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে যে দেশটির অবকাঠামো সমর্থন প্রয়োজন।
অন্য সম্পাদকীয় মন্তব্যে বলা হয়, এটা উল্লেখযোগ্য যে খান তার বিজয় বক্তৃতায় প্রথম বাইরের যে দেশটির নামোল্লেখ করেছেন সে দেশটি চীন। এতে বলা হয়, তিনি প্রথম যে বিদেশী রাষ্ট্রের কথা কথা উল্লেখ করেছেন অনেকেই তা ভাবতে পারেননি। চীন বৃহত্তম সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগকারী, সে বেল্ট অ্যান্ড রোড ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প পরিচালনা করছে এবং পাকিস্তানের সর্বাপেক্ষা নির্ভরযোগ্য মিত্র। চীন সে দেশ যে দেশ থেকে পাকিস্তান শিক্ষা নিতে পারে বলে নতুন নেতা মত প্রকাশ করেছেন। এতে বলা হয় যে খান পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের কোল থেকে চীনের কাছে নিয়ে যাবেন।
সিপিইসি সমর্থক খান
এ সম্পাদকীয় অভিমতের শিরোনাম হচ্ছে ‘ ইমরান খান কি পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করবেন?’ এটা এক জটিল বিষয়। কেননা পাকিস্তানের রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি চীনের প্রতি পরস্পর বিরোধী দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান দিক যা তারা এত বছর পৃথক ভাবে ব্যবহার করার সুবিধা নিয়েছে। আর তা অনেক দেশ, বিশেষ করে ভারতকে হতাশ করে। কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাকিস্তান ছিল গুরুত্বপূর্ণ , পরে পাকিস্তানের কাছে চীনের প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়। এ ভাবে চীন চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (সিপিইসি) জন্য পাকিস্তানে ৫০ প্লাস বিলিয়ন ডলার (চীনা সংবাদ মাধ্যমের মতে ৬২ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগের উদ্যোগ নেয়।
খান সিপিইসি সম্পর্কে সব সময় ভালো কথা বলেননি। এটা ঠিক যে সিপিইসি প্রকল্প দেশের জন্য কি করবে তা ভাবার চেয়ে এর স্বচ্ছতার অভাব ও বহু প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আশাবাদী চীনা মিডিয়া এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
গ্লোবাল টাইমসে সম্পাদকীয় অভিমতে বলা হয়, ইমরান খান চীনা বিনিয়োগ বিষয়ে নওয়াজ শরীফের ব্যাপক সমালোচনা করলেও প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে সন্দেহ পরায়ণ নন। তার ইশতেহারে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে যে আমদানি পণ্য ও সেবার উপরে পাকিস্তানের বিপুল নির্ভরতার বদলে অংশীদারিত্ব ও যৌথ উদ্যোগের উপর জোর দিয়ে সিপিইসি সম্পন্ন করতে হবে।
পাশ্চাত্য বিরোধী খান
অপর সম্পাদকীয় নিবন্ধে দেশে দারিদ্র সমস্যা নিরসনে চীনা মডেল ব্যবহারে খানের ইচ্ছার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ইমরান খানের আর্থ-রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তার পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রভাবিত নয়। তিনি পুঁজিবাদি অর্থনীতির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের কড়া সমালোচক। সর্বশেষ বক্তৃতায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন। ইমরান খানের পরিকল্পনা পরিষ্কার, তা মার্কিন বলয় থেকে দূরে থাকা ও চীনা ব্লকে আরো অগ্রসর হওয়া।
দি নিউজ ইন্টারন্যাশনাল চীন বিষয়ক পর্যবেক্ষক টম হুসাইনকে উদ্ধৃত করে বলে যে খান অতীতে তার বেইজিং-সমালোচনা পুষিয়ে নিতে বহুদূরের পথ যাবেন। চীনের উচিত ও প্রয়োজন নয়া পাকিস্তান সরকারকে ঘনিষ্ঠ ভাবে পর্যবেক্ষণ করা।
হুসাইন বলেন, পিটিআই বেইজিংয়ের সাথে তার সম্পর্ক মেরামতের জন্য অতিরিক্ত সময় কাজ করছে। অতীতে সিপিইসি প্রকল্পের অপমানজনক মন্তব্য ও দুর্নীতির অভিযোগের কারণে এ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।