Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উদ্বেগে আসামের বাঙালিরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আজ সোমবার প্রকাশিত হচ্ছে আসামের বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকা। প্রথম তালিকায় প্রায় ৭০ শতাংশ বাঙালির নাম বাদ পড়েছে। তাই রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী বাঙালি নাগরিকদের উৎকণ্ঠা সবচেয়ে বেশি।
এ নিয়ে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আসামে। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি ১০০ কোম্পানি (১০ হাজার) আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু আসামই নয়, প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশও তাদের সীমান্ত অঞ্চলে বলবৎ চলেছে কঠোর নজরদারি।
জানা গেছে, প্রতিটি এনআরসি সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কি না, তা জানা যাবে। পাশাপাশি অনলাইনেও দেখা যাবে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমেও জানা যাবে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কি না।
বাংলাদেশীদের ঠেকানোর ডাক নাগাল্যান্ড নেতার
বিবিসি জানায়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডের বিরোধী নেতা টি আর জেলিয়াং তার রাজ্যে অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ঢল রোখার জন্য সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা জেলিয়াং শনিবার বলেন, ‘নাগাল্যান্ডের সব রাজনৈতিক দল, এনজিও, আদিবাসী হোহো, ছাত্র সংগঠন, গ্রাম কাউন্সিল ও প্রত্যেক রাজ্যবাসীকে এই বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে।’ এমনকি তিনি এই অনুপ্রবেশ রোখার জন্য সরকারের কাছে একটি অর্ডিন্যান্স আনারও দাবি জানিয়েছেন।
আসামে জাতীয় নাগরিক তালিকা বা এনআরসি’র চূড়ান্ত খসড়ায় বেশ কয়েক লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়ার আশঙ্কায় তিনি এসব দাবি জানান। নাম বাদ পড়ারা ভারতের বুকেই কার্যত ‘রাষ্ট্রহীন নাগরিকে’ পরিণত হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
অবশ্য নাম না থাকলেও কারও বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। আসাম সরকারকে এমনই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আসামের অর্থমন্ত্রী হীমন্ত বিশ্বশর্মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘অযথা উদ্বেগের কিছু নেই। কারও বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে না সরকার।’ নাম না থাকলে আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে যে কেউই আবেদন করতে পারবে।
আসামে জাতীয় নাগরিকত্ব নিবন্ধনে সেখানকার লোকজনের নাগরিকত্ব নির্ধারণ-প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশ উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে। কেননা ভারতের ‘অবৈধ অভিবাসী’ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের অনিবার্য টার্গেট এ দেশটি। মনে করা হয়ে থাকে, এ ধরনের সব অভিবাসীর উৎস বাংলাদেশ। আসামের অনেকে মনে করে, যাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়বে, তাদের অনেকেই গোপনে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। এর ফলে এসব লোককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়ার দাবির পথ সৃষ্টি হতে পারে।
আসামে এনআরসির ঘটনাপ্রবাহ ও বাকি ভারতে তা কী প্রভাব ফেলে তা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এটি ঢাকার নীতি-নির্ধারকদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। এ উদ্বেগ আগামী মাসগুলোতে বাড়তেও পারে। কারণ বাংলাদেশ বছর শেষে পার্লামেন্ট নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হতে যাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আসাম বাঙালিরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ